সিলেটটুডে স্পোর্টস ডেস্ক

২৭ এপ্রিল, ২০১৫ ২৩:৫৯

উজ্জীবিত বাংলাদেশের সামনে ভঙ্গুর পাকিস্তান!

যতবার বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে নামে ঠিক ততবার দুঃসহ এক দুঃস্বপ্ন হয়ে মনে পড়ে মুলতান টেস্টের কথা। মনে পড়ে কীভাবে রাতের অন্ধকারে স্রেফ এক রাতের ব্যবধানে পিচের চেহারা বদলে দেওয়ার কথা।

তারিখটা মনে না পড়লেও চলে, তবে তারিখটা ছিল ৫ সেপ্টেম্বর ২০০৩! টেস্ট শুরু হয়েছিল ৩ সেপ্টেম্বর থেকে। চতুর্থ দিনে পাকিস্তান রফিক, সুজন, মঞ্জুরুল ও তাপস বৈশ্যের তোপের মুখে পড়ে। ২৬১ রানের টার্গেটে ১৩২ রানেই ৬ উইকেট হাওয়া, উইকেটে সর্বশেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে কেবল ইনজামাম।

চতুর্থ দিন শেষে ১৩২ রানের মধ্যে শেষ ৪ উইকেট নিতে হবে এমন স্বপ্ন নিয়ে দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পরের দিন মাঠে এসে দেখা গেলো আগের দিনের পিচ আর পরের দিনের পিচ সম্পুর্ণ আলাদা। পিচের মধ্যকার থাকা ঘাসগুলো উধাও, সম্পুর্ণ পাঁটা উইকেট।

অনেকেই সন্দেহ করেন রাতে অন্ধকারে রোলার দিয়ে পিচের ঘাস মাড়িয়ে দেয়ার ফলেই এমন হয়েছে। যা ক্রিকেটীয় আইনে অবৈধ। তবু বাংলাদেশ ১৬৪ রানেই পাকিস্তানের ৭ম উইকেট তুলে নিয়েছিল, নিতে পারত অষ্টম উইকেটও। কিন্তু এবার যে দৃশ্যপটে শ্রীলংকান আম্পায়ার অশোকা ডি সিলভা। তিনি দুই দুইবার ইনজামামকে পরিষ্কার এলবিডাব্লিউ দেননি। বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ম্যাচ হারে ১ উইকেটে।

মুলতান টেস্টে খুব কাছাকাছি গিয়েও জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। এরপর কেটে যাওয়ার পথে এক যুগ। মঙ্গলবার খুলনায় শুরু হতে যাওয়া টেস্টে জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসি বাংলাদেশ দল। তিন ওয়ানডেতে ‘বাংলাওয়াশ’ করার পর একমাত্র টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশ পাকিস্তানকে হারিয়েছে পরিষ্কার ব্যবধানে। ঘুচে গেছে দীর্ঘ ১৬ বছরের অপ্রাপ্তি।

বাংলাদেশ এ পর্যন্ত বাংলাদেশ পাকিস্তান টেস্ট খেলেছে আটটি। সবগুলো ম্যাচে পাকিস্তান জিতেছে। এরকম এক সমীকরণ নিয়ে বাংলাদেশ-পাকিস্তান পুর্ণাঙ্গ সিরিজ শুরু হয়েছিল। সিরিজ শুরুর আগে ওয়ানডেতে ছিল ৩১-১, টি-টোয়েন্টিতে ৭-০; সবগুলোই পাকিস্তানের পক্ষে। কিন্তু সে দুই ধরণের ম্যাচের পর তা দাঁড়িয়েছে ৩১-৪ এবং ৭-১; মানে চার ম্যাচই জিতেছে বাংলাদেশ।

নতুন চেহারার বাংলাদেশের সামনে সেই পাকিস্তান। দুই ধরণের ক্রিকেটে অসহায় আত্মসমর্পণের পর পাকিস্তানিরা ধুঁকছে এখন আত্মবিশ্বাসহীনতায়। আর নব চেহারার বাংলাদেশের সামনে নতুন করে ইতিহাস লেখানোর প্রত্যয়।

পারবে কী বাংলাদেশ সিরিজের অন্য সব ম্যাচের মতো জয়ের ধারায় থাকতে? উত্তরটা আপাত অদৃশ্য করে লিখে রেখেছে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম! বাংলাদেশ এখন সে লিখে রাখা অদৃশ্য ফলাফলকে নিজেদের অনুকূলে নিয়ে আসতে মাঠে নামছে। ও হ্যাঁ, তারিখটাও লিখে রাখুন- এপ্রিল ২৮- মে ২, ২০১৫!

আপনার মন্তব্য

আলোচিত