ক্রীড়া প্রতিবেদক

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০৩:৫৬

যেখানে মাশরাফি একা, একজনই বাংলাদেশের

ম্যাচ শেষে অধিনায়ক মাশরাফি ‘কাটার মাস্টার’ মোস্তাফিজুর রহমানকে ‘ম্যাজিসিয়ান’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। কারণটা জানা সবার; শেষ ওভারে ‘দ্যা ফিজ’-এর দুরন্ত বোলিংয়ে বাংলাদেশ হারিয়েছে আফগানিস্তানকে, আর এতেই বাংলাদেশের ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন দৃঢ় হয়েছে।

এই ম্যাচে মোস্তাফিজের শেষ ওভারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে বাংলাদেশ জিতলেও প্রতি ম্যাচের মত এ ম্যাচেরও পার্শ্বচরিত্রের নাম মাশরাফি। দলকে কেবল উজ্জীবিতই নয় নিজের বোলিংয়ে দিয়ে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করেছেন। নিয়েছেন দুইটি মহামূল্যবান উইকেটও।

এই দুই উইকেটের মাধ্যমে মাশরাফি নিজেকে নিয়ে গেলেন অন্য উচ্চতায়, যেখানে আর কোন বাংলাদেশি বোলার নেই; মাশরাফি একা, একজনই। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে মাশরাফি ২৫০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন।

মাশরাফির এই ২৫০ উইকেটের সবকটাই বাংলাদেশের হয়ে নয়। বাংলাদেশের হয়ে নিয়েছেন তিনি ২৪৯টি উইকেট; আর বাকি উইকেটটি নিয়েছেন তিনি শিয়া একাদশের হয়ে খেলতে নেমে আফ্রিকা একাদশের বিপক্ষের ম্যাচে, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতও। অর্থাৎ মাশরাফির ওয়ানডে উইকেট ২৫০, তবে বাংলাদেশের পক্ষে সেটা একটা কম।

বিশেষ একটি ব্যক্তিগত মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে চলমান এশিয়া কাপ শুরু করেছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২৫০ উইকেট থেকে মাত্র ৫টির দূরত্বে ছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ২ উইকেট নিয়ে ব্যবধান আরও কমিয়ে আনেন তিনি।

তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পরের ম্যাচেই থেকে যান উইকেটশূন্য, বেড়ে যায় অপেক্ষা। নিজের ছন্দে বোলিং করতে পারেননি ভারতের বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচেও। তবে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে সাজঘরে ফিরিয়ে নিজের উইকেট সংখ্যাকে উন্নীত করেন ২৪৮-এ।

সুপার ফোরের পরের ম্যাচেই আবারও পেলেন আফগানিস্তানকে। শুরুর দুই স্পেলে করেন ছন্নছাড়া বোলিং; কিন্তু ডেথ ওভারে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ফেরান প্রতিপক্ষ অধিনায়ক আসগর আফগানকে। পরে হাশমতউল্লাহ শহিদিকেও সরাসরি বোল্ড করে বিশ্বের ২৫তম ও বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে ২৫০ উইকেটের মাইলফলকে নাম লেখান মাশরাফি।

প্রায় ১৭ বছর আগে ২০০১ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করলেও কয়েক দফায় ইনজুরির কারণে মাশরাফি খেলতে পেরেছেন মাত্র ১৯৪টি ওয়ানডে। তার ক্যারিয়ার থেকে হারিয়ে গেছে অন্তত ১১১টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ। তবু দমে না গিয়ে বারবার মাশরাফি ফিরেছেন বাইশ গজে, এক অদম্য সাহসী যোদ্ধার বেশে।

ক্যারিয়ারে ইনজুরির কারণে হওয়া শূন্যস্থানগুলো তিনি পূরণ করেছেন নিজের অর্জনের মাধ্যমেই। সে ধারাবাহিকতায় ১৯৪ ওয়ানডেতে মাত্র ৩১ গড়ে, ওভার-প্রতি ৪.৮০ রান খরচ করেই তুলে নিয়েছেন ২৫০টি উইকেট। দেশের পক্ষে ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটাও তার।

২০০৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে ২৬ রান খরচায় নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। যা কিনা এখনো বাংলাদেশের পক্ষে সেরা বোলিং ফিগার। সে বছরই বিশ্বের সর্বোচ্চ ৪৯টি ওয়ানডে উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারে মোট ৮বার চার বা ততোর্ধ্ব উইকেট নিলেও পাঁচ উইকেট নিতে পেরেছেন সেই একবারই।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত