স্পোর্টস ডেস্ক

২১ অক্টোবর, ২০১৮ ১৮:৫৫

ইমরুলের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৭১ রান

ওপেনিংয়ে ফিরেই ইমরুল কায়েসের দুর্দান্ত শতকে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে স্বাগতিক বাংলাদেশ করেছে ২৭১ রান। এশিয়া কাপের নিচের দিকে ব্যাটিংয়ে নামলেও জিম্বাবুয়ের সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ওপেনারের ভূমিকায় খেললেন ইমরুল কায়েস। ওপেনিংয়ে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিলেন তিনি।  

ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেলেন ইমরুল। ৫০ ওভারের ম্যাচে প্রায় দুই বছর পর পূরণ করলেন আরেকটি শতক। ২০১৬ সালের অক্টোবরে শেষবার সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন এই ওপেনার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ১১৮ বলে ৮ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পান ইমরুল। শেষ পর্যন্ত খেলে যান ১৪৪ রানের ঝলমলে ইনিংস। তার সঙ্গে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের কার্যকরী হাফসেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ পেয়েছে লড়াই করার মতো পুঁজি।

ইমরুল তার ১৪০ বলের ইনিংস সাজিয়েছেন ১৩ চার ও ৬ ছক্কায়। ১৪৪ রানের ইনিংসটি এখন তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ। আগের ১১২ রান ইমরুল করেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। তার সেঞ্চুরির দিনে ওয়ানডেতে ফিরেই ব্যাট হাতে অবদান রেখেছেন সাইফউদ্দিন। দলের বিপদের সময় ইমরুলকে সঙ্গ দিয়ে বাড়িয়ে নিয়েছেন রান। আউট হওয়ার আগে করেন তিনি ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। ঠিক ৫০ রানের ইনিংস এই অলরাউন্ডার সাজান ৩ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায়।

হ্যামস্ট্রিংয়ের সমস্যার বেশ ভুগছিলেন কাইল জার্ভিস। শুরুতে মাঠ ছেড়ে গিয়েছিলেন পরিচর্যার আশায়। সেই পেসারের আঘাতেই ভাঙে ইমরুল কায়েস ও মোহাম্মদ মিঠুনের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ছন্দে থাকা মিঠুন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিয়েছেন ৩৭ রানে। এরপর মাহমুদউল্লাহ ও মেহেদী হাসান মিরাজ সাজঘরে ফিরলে বিপদ বাড়ে বাংলাদেশের। ৪ উইকেট পাওয়া জার্ভিস ঝড়ে ১৩৯ রানে বাংলাদেশ হারায় ৬ উইকেট।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া বাংলাদেশের টপ অর্ডার আবারও ব্যর্থ ছিল। এশিয়া কাপের ফাইনালে সেঞ্চুরি করা লিটন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে টেন্ডাই চাতারার বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিয়েছেন তিনি। একই ওভারে অভিষেক ম্যাচে নামা ফজলে রাব্বি ফিরেছেন শূন্য রানে। তারপর মুশফিক আর ইমরুল মিলে ধাক্কা সামলাতে গড়েন ৪৯ রানের দারুণ এক ‍জুটি। মুশফিককে ১৫ রানে বিদায় দিয়ে জুটি ভাঙেন মাভুতা।

শুরুতে অবশ্য তাকে ক্যাচ আউট দেননি আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা। রিভিউ নিলে তাতে সফলতা মিলে সফরকারীদের। তবে সেই চাপ কাটিয়ে দ্রুত রানের চাকা সচল করেন ইমরুল কায়েস ও মোহাম্মদ মিঠুন। ২৬তম ওভারে সিকান্দার রাজার বলে পরপর দুই ছক্কা মেরে আগ্রাসী হয়ে দাঁড়ান মিঠুন। সেই মিঠুনকেই গ্লাভসবন্দি করেন জার্ভিস। মিঠুন বিদায় নেন ৪০ বলে ৩৭ রান করে। নতুন নেমে মাহমুদউল্লাহও ছিলেন ব্যর্থ। জার্ভিসের ওভারের শেষ বলে গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন শূন্য রানে। এক ওভার বিরতি দিয়ে সেই জার্ভিসের আঘাতেই ঘটে সর্বনাশ। ফেরান তিনি নতুন নামা মেহেদী হাসান মিরাজকে (১)।

তার আগে দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও ইমরুল কায়েস মিলে শুরুটা দেখেশুনে করেছিলেন। তবে দ্বিতীয় ওভারে অল্পের জন্যে রান আউট থেকে রক্ষা পেয়েছেন লিটন। পয়েন্টে বল ঠেলে দিয়ে কল করেছিলেন ইমরুলকে। শন উইলিয়ামস দ্রুত বলের কাছে পৌঁছালে লিটন পুনরায় স্ট্রাইকিং প্রান্তে ছুটে চলেন। তার পৌঁছানোর আগে বল থ্রো করলেও স্টাম্প মিস করেন উইলিয়ামস।

তৃতীয় ওভারের শেষ বলে আবারও উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার ক্ষণ এনে দিয়েছিলেন লিটন। ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন। শর্ট কাভারে রাজা ক্যাচ তুলে নিলেও তা বৈধ ছিল না। লুফে নেওয়ার আগে বল স্পর্শ করেছিলো ঘাস। শুরুতে সফট সিগন্যালে আম্পায়ার আউট দিয়েছিলেন, পরে নট আউট সিদ্ধান্ত দেন থার্ড আম্পায়ার।

কিছুক্ষণ বিরতি দিলেও ষষ্ঠ ওভারে আবারও দেখা মেলে লিটনের ‘চিরচেনা রূপ’! চাতারার বল উঠিয়ে দিয়েছিলেন। মিড অফে এবার আর কোনও ভুল করেননি ঝুয়াও। ৪ রানে বিদায় নেন লিটন। তার পর নামা ফজলে রাব্বির অভিষেকটা হলো আরও বিবর্ণ। একই ওভারের শেষ বলে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানে ফেরেন রাব্বি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত