স্পোর্টস ডেস্ক

১২ নভেম্বর, ২০১৮ ১৬:২২

ডাবল সেঞ্চুরিতে মুশফিকের বিশ্বরেকর্ড

ইনিংসের ১৫৪তম ওভারের শেষ বলে স্পিনার সিকান্দার রাজার বলটি মিড উইকেটে ঠেলে দিয়ে মুশফিকুর রহিম করলেন ডাবল সেঞ্চুরি। এই ডাবল সেঞ্চুরিটি মুশফিককে কেবল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান হিসেবেই নয়, ক্রিকেটবিশ্বের উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অনন্য উচ্চতায় স্থান করে দিয়েছে। ক্রিকেট ইতিহাসে মুশফিক একমাত্র উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান যিনি টেস্টে দুইবার ডাবল সেঞ্চুরির মাইলফলক অতিক্রম করেছেন।

স্বীকৃত উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মাত্র আটজনের আছে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড। এ তালিকায় আছেন ইমতিয়াজ আহমেদ, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, কুমার সাঙ্গাকারা, মহেন্দ্র সিং ধোনি, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, তসলিম আরিফ, ব্রেন্ডন কুরুপ্পু ও মুশফিক। আজ আরেকটি ডাবল সেঞ্চুরি করে মুশফিক নিজেকে নিয়ে গেলেন এই তালিকার সবার ওপরে ।

মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে দুইবার ডাবল সেঞ্চুরি করার রেকর্ড গড়েছেন মুশফিক।

এরআগে ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাদের মাটিতে মুশফিক পেয়েছিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদ। যা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেও ছিল প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। পাঁচ বছর পর আবারও ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছেন মুশফিক। সবমিলিয়ে এটা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে চতুর্থ ডাবল সেঞ্চুরি। মাঝে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ডাবল সেঞ্চুরির স্বাদ পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল।

দলীয় ২৬ রানে তিন উইকেট হারালেও মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে এই টেস্টের প্রথম দিনটা নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ। দিন শেষে পাঁচ উইকেট হারিয়ে স্কোরকার্ডে জমা হয় ৩০৩ রান। মুশফিক-মুমিনুল দুজনই পান সেঞ্চুরি। সেই সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে গড়েন রেকর্ড ২৬৬ রানের জুটিও।

মুমিনুল ১৬১ রানে ফিরে গেলেও ১১১ রানে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন মুশফিক। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে সাবধানী ছিলেন মুশফিক। জিম্বাবুয়ের বোলারদেরকে সামলাতে ওই সময় রানের চাকা কিছুটা মন্থরই ছিল বাংলাদেশের। তবে দ্বিতীয় সেশনে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মুশফিক।

৩৩৪ বলে ১৩ বাউন্ডারিতে দেড়শ ছুঁয়ে ফেলেন মুশফিক। দেড়শ পেরোনোর পর আরেকটু আক্রমণাত্মক হন মিডল অর্ডারে বাংলাদেশ দলের এই ভরসা। দ্বিতীয় সেশন শেষ হওয়ার আগে ৩৯৩ বলে মুশফিকের রান ছিল ১৯৫ রান। দিনের শেষ সেশনে চার ওভার খেলা হতেই ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মুশফিক।

৪০৭ বলে মুশফিক পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। ছিল ১৬টি চার ও একটি ছক্কার মার। ষষ্ঠ উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে গড়েছিলেন ৭৩ রানের জুটি। অষ্টম উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে গড়েন ১০৮ রানের জুটি। এখনও ব্যাট করে চলেছে এই জুটি। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মিরাজও।

মুশফিক-মিরাজের ব্যাটে চড়ে বড় সংগ্রহের পথেই এগোচ্ছে বাংলাদেশ। ১৫৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ সাত উইকেটে ৪৮৬ রান। মুশফিক ২০০ ও মিরাজ ৫১ রানে অপরাজিত আছেন।

২০০৫ সালের মে মাসে লর্ডসে অভিষেকের পর ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে কখনো মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে তিন অঙ্ক ছোঁয়া হয়নি মুশফিকের। ঢাকার টেস্টের আগে যে পাঁচটি সেঞ্চুরি পেয়েছেন, চারটিই বিদেশে, প্রতিকূল কন্ডিশনে। এই চার সেঞ্চুরি দুটি আবার ১৫০ পেরোনো। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই টেস্ট দিয়ে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত