সিলেটটুডে ডেস্ক

৩১ জুলাই, ২০১৭ ১৩:৩৯

তুফান সরকার: কী তার পরিচয়?

খুন, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, দখল—সব অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০১২ সাল থেকে এ পর্যন্ত হত্যা, হত্যাচেষ্টা, মাদক ব্যবসা ও চোরাচালানের ছয়টি মামলার আসামি এই তুফান সরকার।

ক্ষমতাসীন দলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে ছয় বছরে গাড়ি, বাড়ি, ব্যবসা–প্রতিষ্ঠানসহ অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে নানা অপকর্মে জড়িত থেকেও পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন শ্রমিক লীগের বগুড়া শহর শাখার সভাপতির পদ।

এই তুফান ছাত্রী ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনার মূল হোতা। গত শুক্রবার রাতে ধর্ষণ ও অপহরণ মামলায় বগুড়া সদর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে তাকে। গতকাল রোববার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন তার। এ ঘটনা তোলপাড় পড়ে যাওয়ায় সংগঠন থেকে তাকে বহিষ্কারও করা হয়েছে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, অটোরিকশা থেকে তুফান সরকারের চাঁদাবাজি ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ছাত্রী ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য কোনো অপরাধে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ মিললে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, ছাত্রী ধর্ষণ ও নির্যাতনের দুটি মামলাসহ তুফান সরকারের বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে পুলিশের নথিতে ছয়টি মামলার তথ্য রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৫ সালে র‌্যাব কয়েক শ বোতল ফেনসিডিলসহ তুফান সরকারকে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছিল। এ ছাড়া ২০১৩ সালে যুবদল নেতা ইমরান হত্যা মামলারও আসামি তিনি।

জানা যায়, তুফান সরকার ইয়াবা-ফেনসিডিলের ব্যবসা, খুন-ধর্ষণ, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। মাদক ব্যবসা ছাড়াও শহরে ব্যাটারিচালিত প্রায় ২০ হাজার অটোরিকশা ও ভ্যান থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন। শহরের চকসূত্রাপুর এলাকায় আলিশান বাসা তার। শহরের চকযাদু ক্রস লেন সড়কে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। অস্ত্রধারী ক্যাডার নিয়ে চলাফেরা করেন। এত কিছুর পরও ক্ষমতাসীন দলের জেলার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সখ্যের কারণে শ্রমিক লীগের পদ-পদবি বাগিয়েছেন তিনি।
কিছুদিন আগেও শহর শ্রমিক লীগের সহসভাপতি ছিলেন। নেতাদের আশীর্বাদে কিছুদিন আগে কমিটির আহ্বায়কের পদ পান তিনি। সম্প্রতি শহরের চকযাদু সড়কে তার নতুন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন।

একাধিক সূত্র জানায়, বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর চামড়া গুদাম কসাইপট্টি এলাকার মজিবর রহমানের সাত ছেলের মধ্যে তুফান সরকার সবার ছোট। মজিবর রহমান একসময় চামড়া কেনাবেচা করতেন। বাবার পৈতৃক ব্যবসার সূত্র ধরেই চামড়ার ব্যবসা করতেন তুফান। তার বড় ভাই আবদুল মতিন সরকার শহর যুবলীগের নেতা হওয়ার সুবাদে এলাকায় একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার ও মাদক ব্যবসা শুরু করেন তিনি। সংবাদ সূত্র: প্রথম আলো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত