সিলেটটুডে ডেস্ক

২১ জুন, ২০২০ ০২:১৪

লন্ডনে মুক্তা চক্রবর্তীর ❛চিত্রকলার সাথে বেঁচে থাকা❜ শুরু

করোনা আক্রান্ত সময়ে বেঁচে থাকার রসদ হিসাবে শিল্পকে ঘরবন্দি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ব্রিটিশ বাংলাদেশী চিত্র শিল্পী মুক্তা চক্রবর্তীর ব্যাতিক্রম ধর্মী শিল্পভাবনা “Stay Alive With Fine Arts” বা চিত্রশিল্পের সাথে বেঁচে থাকা’র শুরু হলো শনিবার।

সুতপা চৌধুরীর উপস্থাপনায় শিল্পী মুক্তা চক্রবর্তীর নিজের ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেল থেকে সরাসরি লাইভে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন  লন্ডনের গোল্ডস্মিথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণারত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যতত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং নাট্যনির্দেশক সুদীপ চক্রবর্তী, বার্মিংহাম থেকে অভিনেতা, নির্দেশক এবং লেখক মুরাদ খান এবং ঢাকা থেকে চিত্রশিল্পী এবং কমিউনিটি বেইজ শিল্প সংগঠন গিদরী বাউলের প্রধান কামরুজ্জামান স্বাধীন।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে আমন্ত্রিত অতিথিরা করোনাকালীন এবং করোনা পরবর্তী সময়ে শিল্পী এবং সংগঠনের টিকে থাকা এবং অবস্থার সাথে অভিযোজনের গুরুত্ব সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্টানের শুরুতে চিত্রশিল্পী মুক্তা চক্রবর্তী লিখিত বক্তৃতায় তাঁর এই ভিন্নধর্মী শিল্পভাবনার কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, এই মহামারী অন্য সব পেশার মতো শিল্পী এবং শিল্পপ্রেমীদের জন্যও হতাশার কারণ। শিল্পীরা নিজেদের কাজ মানুষের সামনে তুলে ধরতে না পারলে যেমন একধরণের হতাশাগ্রস্ত হোন ঠিক তেমনি শিল্প অনুরাগীরাও নানা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে শিল্পের রস আস্বাদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।  দিনের পর দিন ঘরে থেকে মানুষ মানসিক ভাবে কোনঠাসা হয়ে যাচ্ছেন। সেই সকল শিল্প অনুরাগীরা যাতে সহজেই ঘরে বসে শিল্পের সাথে নিজেদের সংযুক্ত রাখতে পারেন সেই সুযোগ করে দেবার জন্য চিত্রশিল্পী মুক্তা চক্রবর্তী তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ আঁকবেন সাতটি চিত্রকর্ম।

এই উদ্যোগের অংশ হিসাবে নিজের আঁকা নির্বাচিত কিছু চিত্রকর্ম দিয়ে করবেন একটা ভার্চুয়াল একজিবিশন। সেই সাথে নতুন ধারার একটি শর্টফিল্ম তৈরী করবেন নিজের রং তুলিকে উপজীব্য করে। নতুন ধারার এই ফিল্মকে ক্যানভাস ফিল্ম নাম দিয়ে শিল্পী জানালেন প্রত্যেকটা চিত্রকর্মের একটা গল্প থাকে। প্রত্যেকটা রং একেকটা অর্থ বহন করে, প্রত্যেকটা তুলির আঁচড়ের থাকে এক একটা কারন। ক্যানভাস ফিল্মে উঠে আসবে একটি চিত্রকর্মের প্রতিটা আচঁড়, রেখা আর রঙের গল্প।

লোগো উন্মোচনের পরে করোনাকালীন বা করোনা পরবর্তী সময়ে শিল্পী এবং শিল্পসংগঠনের অভিযোজন সম্পর্কে সুদীপ চক্রবর্তী বলেন হাততালি মুখর প্রসেনিয়াম ছাড়া যেখানে নাটক মঞ্চায়নের কথা কখনোই ভাবিনি সেখানে আজকের বাস্তবতা ভিন্ন ভাবে মঞ্চনাটকের শিল্পভাবনা ভাবতে বাধ্য করছে। মুরাদ খান বলেন আমরা ক মাস আগেও লাইভ সম্প্রচার নিয়ে ভাবিনি কিন্তু এখন ভাবছি। এই করোনাক্রান্ত অস্বাভাবিক সময়ে ভিন্নভাবে  মঞ্চায়ন বা শিল্পভাবনা ভাবতে হবে। সেই ভিন্ন ভাবনা থেকেই আমাদের কিছু কাজ ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারের কাজ শুরু হয়ে গেছে। সময়ের সাথে এবং অবস্থার সাথে অভিযোজন করে টিকে থাকাটা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। করোনাকালীন ঘরবন্দি সময়ে শিল্পানুরাগী সহ সকল মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যকে বিবেচনায় নিয়ে নতুন নতুন শিল্পভাবনার ভার্চুয়াল বিস্তারকে তিনি অত্যন্ত দূরদর্শী এবং সময়োপযোগী বলে আখ্যায়িত করেন।

চিত্রশিল্পী কামরুজ্জামান স্বাধীন বলেন বাংলাদেশের আদিবাসী  বিভিন্ন গোষ্ঠিকে সাথে নিয়ে তাঁরা শিল্পের মূলকাজটা করেন সেহেতু তাঁর প্রধান উদ্বেগ ছিলো কিভাবে সবাইকে নিয়ে টিকে থাকবেন।  ইতিমধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই কিছু কাজ তাঁরা করছেন এবং অবশ্যই আগামীতে যদি এমন  দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির উদ্ভব হয় তবে শিল্পীরা কিভাবে  মোকাবিলা করবে তা এখন থেকেই ভাবতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত