প্রত্যুষ তালুকদার, দিল্লি থেকে

১৮ অক্টোবর, ২০২৩ ১৪:৪৬

ভারতে লাল কেল্লা পরিদর্শনে বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দল

ভারত সফররত বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দল মুঘল সাম্রাজ্যের অন্যতম নিদর্শন দিল্লির রেড ফোর্ট বা লাল কেল্লা পরিদর্শন করেছে।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে ভারতের স্বাধীনতা ও সংগ্রামের ইতিহাস জড়িয়ে থাকা এই স্থানটি পরিদর্শন করে বাংলাদেশের সাংবাদিকরা।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে ২৮ সদস্যের বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দলটি এক সপ্তাহের সফরে ভারতে অবস্থান করছে।

ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি প্রেস অফিসার শিলাদিত্য হালদারের নেতৃত্বে পরিদর্শনকালে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের মাঝে এসময় ছিলেন জনকণ্ঠের সম্পাদক ওবায়দুল কবির মোল্লা, ডিবিসি নিউজের প্রণব সাহা, মাছরাঙা টিভির রেজওয়ানুল হক রাজা, একাত্তর টিভির শাকিল আহমেদ, নিউজ২৪ টিভির রাহুল রাহা, দিপক আচার্য্য, বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাজী শাহেদ, দেশ টিভি ও দৈনিক চাঁদনী বাজারের রিপোর্টার সঞ্জু রায়, যমুনা টিভির শিবলী নোমান, ডিবিসি নিউজের সিলেট প্রতিনিধি প্রত্যুষ তালুকদার, আলোকিত বাংলাদেশের দিপক দেব, জাগো নিউজের আসিফ আজিজ প্রমুখ।

পরিদর্শন শেষে সাংবাদিক প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেন, পারসিক, ইউরোপীয় ও ভারতীয় শিল্পকলার সংমিশ্রণে তৈরি এই অভিনব শিল্পকলা মনোমুগ্ধকর। এখানে এসে মনে হয়েছে সত্যি ইতিহাসকে কাছ থেকে দেখছি।

উল্লেখ্য, সপ্তদশ শতাব্দীতে মুঘল সম্রাট শাহজাহান কর্তৃক নির্মিত লাল কেল্লা বিশাল প্রাচীর বিশিষ্ট একটি দুর্গ। ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত এই দুর্গটি ছিল মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে। অপূর্ব নির্মাণশৈলীর লাল রঙের বিশাল এ স্থাপনাটি ভারতের সমৃদ্ধ প্রাচীন স্থাপত্যকলার অন্যতম উদাহরণ। প্রথম দিকে এর নাম ছিল কিলা-ই-মুবারক। কারণ এই দুর্গে সম্রাটের পরিবারবর্গ বাস করতেন। দুর্গটি যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। এই নদীর পানিতে পুষ্ট হতো দুর্গের পরিখাগুলো।

লাল কেল্লা ছিল দিল্লি ক্ষেত্রের সপ্তম নগরী তথা শাহজাহানের নতুন রাজধানী শাহজাহানাবাদের রাজপ্রাসাদ। পরবর্তীকালে অবশ্য তিনি দিল্লি থেকে আগ্রা শহরে রাজধানী স্থানান্তরিত করেছিলেন। লাল কেল্লায় বসবাসকারী শেষ মুঘল সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফর। দুর্গের প্রাচীর মসৃণ এবং দৃঢ়। এর দুটি প্রধান দরজা হলো দিল্লি গেট ও লাহোর গেট। লাহোর গেট প্রধান দরজা। এই গেট দিয়ে ঢুকলে একটি লম্বা আচ্ছাদিত বাজার পথ পড়ে। এর নাম চট্টা চক। এই পথের দু’দিকের দেয়াল দোকানের মতো করে স্টল দিয়ে সাজানো। চট্টা চক ধরে সোজা এলে উত্তর-দক্ষিণ পথ পাওয়া যায়। এই পথটি আসলে দুর্গের পশ্চিমের সামরিক ক্ষেত্র ও পূর্বের রাজপ্রাসাদের সীমানা।

এই পথের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত দরজাটিই হলো দিল্লি গেট। দিল্লি গেটের বাইরে একটি বড় মুক্তাঙ্গন রয়েছে। এটি এককালে দিওয়ান-ই-আম-এর অঙ্গন হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এখানে ঝরোখা নামে একটি অলঙ্কৃত সিংহাসনে বসে সম্রাট জনসাধারণকে দর্শন দিতেন। এই স্তম্ভগুলো সোনায় চিত্রিত ছিল এবং সোনা ও রুপার রেলিং দিয়ে সাধারণকে সিংহাসনের থেকে পৃথক করে রাখা হতো। আর দিওয়ান-ই-খাস ছিল পুরোপুরি শ্বেতপাথরে মোড়া একটি কক্ষ। এর স্তম্ভগুলো পুষ্পচিত্রে সজ্জিত ছিল। ভেতরের অলঙ্করণের কাজে ব্যবহৃত হয়েছিল মহামূল্যবান ধাতুসমূহ।

প্রায় চারশো বছরের পুরনো লাল কেল্লা স্বাধীন ভারতেও এক অনন্য স্মারক। কারণ প্রতি বছরের ১৫ অগস্ট ভারতের প্রধানমন্ত্রীরা এখানেই তেরঙা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন, জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত