১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ২৩:৩৪
‘এমন মানব সমাজ কবে গো সৃজন হবে যেদিন হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খৃষ্টান জাতি গোত্র নাহও রবে’ এই স্লোগানে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট লালন সাঁইর ১৩৫তম তিরোধান উৎসব উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকাল ‘মানুষ ভজ’ শিরোনামে সিলেট নগরীর চাঁদনিঘাট এলাকার শারদা স্মৃতি ভবন প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়।
আলোচনা সভা শেষে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কিংবদন্তি সুরকার ও সংগীত পরিচালক প্রয়াত সুজেয় শ্যামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেটের সভাপতি নাজিকুল ইসলাম রানার সভাপতিতে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন সিলেট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন।
চারণ সিলেটের সহযোগী সংগঠক মো. মাসুদ রানার সঞ্চালনায় সভায় আলোচক ছিলেন সিলেট জেলা বাসদের আহবায়ক আবু জাফর, কথাকলি সিলেটের সভাপতি শামছুল বাসিত শেরো, মদনমোহন কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক উজ্জ্বল দাস।
সভায় বক্তারা বলেন, আমরা লালনের গান গেয়েছি কিন্তু তার গানের রস কেউ গ্রহণ করেনি। সবাই শুধু জানতে চায় লালন হিন্দু না মুসলমান। কিন্তু লালন প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন মানব ধর্ম। এই মানব ধর্মের সাথে সুফিবাদের মিল আছে। এমনকি রবীন্দ্র ও নজরুল সাহিত্যে লালনের প্রভাব রয়েছে। লালন বেঁচে ছিলেন ১১৬ বছর। তার জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি ছিলেন অবহেলিত। মানবতাবাদী ও সাম্যের সমাজের জন্য লালন মৃত্যুর আগে পর্যন্ত গান গেয়ে গেছেন। বর্তমানে এত বিজ্ঞানের উৎকর্ষের মধ্যেও লালন এখনো অপ্রাসঙ্গিক নন। কারণ তিনি মানবতার, সাম্য ও সাম্প্রদায়িকতা কথা বলতেন। লালন বিশ্বাস করতেন সৃষ্টিকে সেবা করতে পারলে সব হয়। লালনের গান ও জীবনাদর্শ চর্চার মাধ্যমেই হবে মানব জাতীর মহা মুক্তি।
আলোচনা সভা শেষে চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনা শুরু করেন। ‘সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে’ দলীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এরপর অন্যান্য আমন্ত্রিত শিল্পীরাও লালনের গান পরিবেশন করেন।
আপনার মন্তব্য