সিলেটটুডে ডেস্ক

২৯ এপ্রিল, ২০১৮ ১৫:৫৮

চারুপাঠের ৪র্থ দ্বি-বার্ষিক চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন

চারুপাঠ চারুবিদ্যালয়ের দশ বছরপূর্তি উপলক্ষে ৪র্থ দ্বি-বার্ষিক চিত্র প্রদর্শনীর শুভ উদ্বোধন এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৯ এপ্রিল) সকাল ১০টায় নগরীর মুসলিম সাহিত্য সংসদে এই চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়।

চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন একুশে পদক প্রাপ্ত সঙ্গীত শিল্পী সুষমা দাস। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে সিলেট উপস্থিত ছিলেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. গোলাম শাহি আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক নিবাশ রঞ্জন দাশ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন চারুপাঠের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার দাস। চারুপাঠের শিক্ষক ডলি দেবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চারুপাঠের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নন্দিতা দেব।

প্রদর্শনীদের ক্ষুদে চিত্রশিল্পীদের ৪১০টি চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয়েছে। চিত্র প্রদর্শনীতে চারুপাঠের ২১৪জন শিক্ষার্থীর তৈলরং, জল রং, রংপেন্সিল, পেন্সিলস্কেচ, পেনস্কেচ ওয়েল প্যাস্টেলসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আঁকা সেরা ৫টি শ্রেষ্ঠ চিত্রকর্ম পেয়েছে ‘শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন পদক’ এবং ১৫টি শিল্পকর্মকে ‘চারুপাঠ পদক’ প্রদান করা হয়েছে।

চারুপাঠ চারুবিদ্যালয়ের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মার্জিয়া হোসাইনের সভাপতিত্বে ৫টি বিভাগে বিভক্ত চিত্রকর্মের মধ্যে প্রতিটি বিভাগে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জনকারী চিত্রশিল্পীদেরকে পুরস্কার ও সনদ প্রদান করেন অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন পদক ২০১৮ পেয়েছে তুর্য দত্ত (চিমাবুয়ে ব্যাচ), দেবাঞ্জলী রায় (পেন্সিল ব্যাচ), তাসনিম খান (চারকোল ব্যাচ), পৃথিরাজ চৌধুরী (রিবাল্টা ব্যাচ) এবং অনিকা তাসনিম (জয়নুল ব্যাচ)।

৫টি বিভাগে চারুপাঠ পদক পেয়েছে, এর মধ্যে গ্রুপ ’এ’  ইনফ্যান্ট ও ১ম বর্ষ: প্রাচুর্য দেব প্রাচ্য, আদিত্য রায় অর্ঘ, আরাবী চৌধুরী কাভি, গ্রুপ ’বি’ ২য় বর্ষ: জান্নাতুল ফেরদৌস নিঝুম, আফিফ মাসরুর হোসাইন, নন্দিনী আচার্য, গ্রুপ ’সি’ ৩য় বর্ষ: জাকিয়া সুলতানা জেরিন, সাদিয়া রহমান, তনুশ্রী দে, গ্রুপ ’ডি’ ৪র্থ বর্ষ: শাহারিয়ার আলম তালুকদার, মাহরুখ মুহাইমিন অনিন্দ্য, নুরুল আহসাব খান, গ্রুপ ’ই’ ৫ম, ৬ষ্ঠ ও ৭ম বর্ষ: শ্রী নীলকান্ত দেব, পূজা তালুকদার এবং সামিন মাহতাব দেওয়ান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. গোলাম শাহি আলম বলেন, শিশুদের হাতে র্আঁকা প্রতিটি চিত্র তুলে ধরে তাদের মধ্যে সুপ্ত চিন্তা, চেতনা ও সৃষ্টিশীলতা। চিত্রকর্ম শিশুদের জ্ঞানের বিকাশ ও সৃজনশীলতায় সহায়ক ভূমিকা রাখে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশের চিত্রশিল্পীদের আঁকা চিত্রকর্ম বিশ্বের অনেক দেশের শিল্পীদের চেয়েও অনেক অর্থপূর্ণ এবং সুন্দর প্রকৃতির বহি:প্রকাশ বহন করছে। এসব চিত্রশিল্পকে বহি:বিশ্বে তুলে ধরার জন্য সরকারের ভূমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

চারুপাঠ চারুবিদ্যালয়ের এ ক্ষুদে শিল্পীদের হাতে আঁকা চিত্রগুলো দেখে তিনি বলেন, শিশুদেরকে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং কালচারকে যেভাবে এসব ছবিগুলোতে ফুটে উঠেছে তাতে তাদেরকে দেশের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে এবং নিজের কৃষ্টিকে ধরে রাখার মাধ্যম হিসেবে সহযোগিতা পালন করছে। আর এই মহান কাজটি পরিচালনা করার জন্য তিনি চারুপাঠকে ধন্যবাদ জানান।

সভাপতির বক্তব্যে মার্জিয়া হোসাইন পপি বলেন, চিত্র প্রদর্শনীতে ক্ষুদে চিত্রশিল্পীদের প্রতিটি চিত্রকর্ম এক একটি ছোট গল্প। চারুপাঠ সুপ্ত চেতনার বিকাশে ক্ষুদে শিল্পীদের নিয়ে যেতে সাহায্য করে তাদের সেই স্বপ্নের জগতে। স্বাধীনতায় বিশ্বাসী চারুপাঠ চারুবিদ্যালয় যান্ত্রিক জগতের বেরসিক জীবন থেকে প্রস্ফুটিত ছোট সোনামনিদের সৃষ্টিশীল মননে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

অনুষ্ঠানসমূহে চারুপাঠ চারুবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, চিত্রপ্রদর্শনী আগামী ১মে পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত