সিলেটটুডে ডেস্ক

০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ২২:৫৮

‘সুস্থ সংস্কৃতি চর্চায় অবদান রাখছে মনিপুরী নৃত্য’

সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মৃণাল কান্তি দেব বলেছেন, একটি জাতির চালচিত্র তাঁর সাহিত্য-সংস্কৃতির দর্পণে নির্মিত হয়। বাংলাদেশে সুস্থ সংস্কৃতির চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার পাশাপাশি বিদেশেও দেশের সুনাম বয়ে আনছে মনিপুরী নৃত্যশিল্প। এটা দেশের জন্য যেমন গৌরবের তেমনি অত্যন্ত আনন্দের। বাংলাদেশের সংস্কৃতির অন্যতম আনন্দদায়ক বিনোদন অনুষঙ্গ মনিপুরী নৃত্যকে বাঁচিয়ে রাখার কার্যক্রমকে অব্যাহত রাখতে হবে।

একাডেমী ফর মনিপুরী কালচার এন্ড আর্টস (এমকা), সিলেটের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠানের ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর রিকাবিবাজারস্থ কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে এমকার সভাপতি দিগেন সিংহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, ফিজা এন্ড কোং (প্রা:) লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম বাবুল, নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যপরিচালক শর্মীলা বন্দ্যোপাধ্যায়, নৃত্যশিল্পী সংস্থা সিলেট বিভাগের সভাপতি অনিল কৃষাণ সিংহ।

ফিজা এন্ড কোং (প্রা:)-এর সহযোগিতায় আলোচনা সভা ও নৃত্যানুষ্ঠানে সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে নৃত্য উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করে মনিপুরী ঐতিহ্যের প্রতীক উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয় অতিথিবৃন্দকে। এমকা’র ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান দেশের প্রথিতযশা নৃত্যশিল্পী শ্রী হরিদাসকে নিবেদিত করা হয়। শুরুতে প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে নৃত্যগুরু হরিদাসের স্মৃতি এবং কর্মের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এমকা’র সাধারণ সম্পাদক শান্তনা দেবী। আবৃত্তি শিল্পী নাজমা পারভীনের সঞ্চালনায় সভায় নৃত্যগুরু হরিদাসের জীবনী নিয়ে আলোকপাত করেন নৃত্যরথের পরিচালক নন্দিতা দাশ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিলেট সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ চৌধুরী মিশু। আলোচনা সভার পরে শুরু হয় নৃত্যানুষ্ঠান। নৃত্যানুষ্ঠানে শিল্পাঙ্গন, নৃত্যরঙ এবং নৃত্যশৈলীর নৃত্যশিল্পীরা ছাড়াও বিভিন্ন নৃত্য প্রদর্শন করেন এমকা’র নৃত্যশিল্পীরা।

নৃত্যানুষ্ঠানে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত নৃত্যনাট্য ‘তাশের দেশ’ এমকার পরিবেশনায় পরিবেশিত হয়। ‘তাশের দেশ’ নৃত্যনাট্য পরিচালনা করেন নৃত্য পরিচালক এবং এমকা’র সাধারণ সম্পাদক শান্তনা দেবী। অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দ নৃত্যানুষ্ঠান উপভোগ করে এর ভূয়সী প্রশংসা করেন।

শুদ্ধ মনিপুরী নৃত্য চর্চার মাধ্যমে মনিপুরী নৃত্যকে টিকিয়ে রাখা এবং মণিুপুরী ছেলেমেয়েদেরকে বাংলা সংস্কৃতির পাশাপাশি মনিপুরী সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করতে উৎসাহ দিয়ে আসছে এমকা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির বলেন, মনিপুরী নৃত্য শুদ্ধ সংস্কৃতির অংশ। মণিপুরীরা দেশে-বিদেশে যথেষ্ট সম্মান কুড়িয়েছে। যা দেশের জন্য গৌরবের। মনিপুরী নৃত্যকে চর্চার মাধ্যমে সুস্থ সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখার জন্য এমন আয়োজন অব্যাহত রাখতে হবে।

ফিজা এন্ড কোং (প্রা:) লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম বাবুল বলেন, নৃত্য একটা শিল্প। এটাকে চর্চা করতে হলে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। নৃত্যজ্ঞান সম্পর্কে অবহিত হলেই এটাকে সঠিকভাবে উপভোগ করা যাবে।

নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যপরিচালক শর্মীলা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মনিপুরীদের নৃত্য দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। আজকের এই অনুষ্ঠানে তাঁর ‘তাশের দেশ’ নৃত্যনাট্য পরিবেশিত হওয়ায় রবীন্দ্রনাথের নৃত্যশিল্পের প্রতি ভালোবাসা আরো প্রকাশিত হবে। এমকা’র ১৫ বছর পূতি অত্যন্ত আনন্দের। মনিপুরী সংস্কৃতির চর্চায় এমকা আরো বেশি অবদান রাখবে বলে আমি আশাবাদী।

সভাপতির বক্তব্যে এমকা’র সভাপতি দিগেন সিংহ বলেন, ২০০৩ সালের জুন মাস থেকে সুস্থ সংস্কৃতি তথা মনিপুরী সংস্কৃতির বিকাশে কাজ করে আসছে এমকা। নৃত্যের মত একটি অনিন্দ্য শিল্পকে চর্চার মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এতে বেঁচে থাকবে সংস্কৃতিও।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত