শাবিপ্রবি প্রতিনিধি

১৬ জানুয়ারি, ২০২২ ১১:৫২

শাবিতে তিন দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ কমিটির পদত্যাগসহ ৩ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলনের তৃতীয় দিন আজ রোববার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে অবস্থান নেয়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন।

তবে এ আন্দোলন শিক্ষার্থীদের ক্ষুদ্র একটি অংশের আন্দোলন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. আলমগীর কবির।

তিনি বলেন, শুক্রবার উপাচার্য হল সম্পর্কিত তাদের বিভিন্ন দাবি মেনে নিয়েছেন এবং তা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারপরও কিছু শিক্ষার্থী গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি করছেন।

প্রক্টর আরও বলেন, আমরা তাদের অনুরোধ করেছি যাতে কোনভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় সমস্যার সৃষ্টি হয় এমন কিছু না করেন। উপাচার্য সার্বিক বিষয়টি দেখছেন।‌

গত বৃহস্পতিবার রাতে হলটির আবাসিক এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে ফোনে আলাপকালে হলটির প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজা খারাপ ব্যবহার করেছেন, এমন অভিযোগে তার ও সহকারী প্রাধ্যক্ষ রাবেয়া তোড়ার পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলনে নামেন ছাত্রীরা।

শুক্রবার দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। বৈঠক শেষে উপাচার্য বৈঠকটি ফলপ্রসূ হয়েছে বলে জানালেও শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি মানা হয়নি জানিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান।

ওইদিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দাবি ৩টি মানার জন্য শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সময় দিয়ে আন্দোলন আপাতত স্থগিত করেন তারা।

এদিকে গতকাল শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মৃন্ময় দাস ঝোটনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা খলিলুর রহমান, আশরাফ কামাল আরিফ, সজিবুর রহমান, ঋষাণ তন্ময়, মাহবুবুর রহমান, সাজ্জাদ হোসেন, শফিউল হক রাব্বি এ হামলা চালায়।

ছাত্রলীগ নেতা আশরাফ কামাল আরিফ বলেন, ‘আমরা একটা অ্যাম্বুলেন্সকে পথ করে দিতে গেলে তারা বাধা দেয়। তখন এ নিয়ে আমাদের সঙ্গে একটু হাতাহাতি হয়।’

প্রক্টর আলমগীর কবির বলেন, ‘একটি অ্যাম্বুলেন্সকে পথ করে দিতে সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থী যান। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্স যেতে বাধা দিলে একটু হাতাহাতি হয়।’

ছাত্রীদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগ, হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর করে হলের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, অবিলম্বে দায়িত্বশীল প্রভোস্ট কমিটি নিয়োগ দেওয়া।

শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তাদের এ ৩ দফা দাবি না মানায় শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনে নামেন। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে 'এক কিলোমিটার সড়ক' অবরোধ করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত