রাবি প্রতিনিধি

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১৯:০৩

শিক্ষকের কাছে নিরাপদ বোধ করছেন না রাবি'র শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমদের কাছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ বোধ করছেন না। তাই একাডেমিক ও প্রশাসনিক সব কার্যক্রম থেকে তানভীর আহমদকে বিরত রাখার আবেদন করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে বিভাগের সভাপতি প্রদীপ কুমার পাণ্ডের কাছে এ আবেদনপত্র জমা দেন শিক্ষার্থীরা। বিভাগের ১৭৯ জন শিক্ষার্থী এই আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেন। ঈদের ছুটির পর বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে না আসলেও তারা ফোনে এই আবেদনপত্রের সঙ্গে সম্মতি প্রকাশ করেছেন।

শিক্ষার্থীরা আবেদনপত্রে অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি আমাদের বিভাগের মাতৃতুল্য শিক্ষক সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহানের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে এসেছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আমাদের শিক্ষক আকতার জাহানকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের কথা।

এ নির্যাতনের সঙ্গে তাঁর সাবেক স্বামী ও বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমদের জড়িত থাকার বিষয়টিও উঠে এসেছে। এমনকি আকতার জাহানের জানাজা সম্পন্ন হওয়ার আগেই তানভীর আহমদ অত্যন্ত নগ্নভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ম্যামের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করেন। যা আমাদেরকে অত্যন্ত মর্মাহত ও ব্যথিত করেছে।

সুইসাইড নোটে আকতার জাহান উল্লেখ করে গেছেন, তার সন্তানও তানভীর আহমদের কাছে নিরাপদ নয়। একই সঙ্গে গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও এই শিক্ষকের চরিত্র নিয়ে নানা ধরনের ঘটনা উঠে এসেছে। এমতাবস্থায় বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা অত্যন্ত আতঙ্কিত, ভীতসন্ত্রস্ত ও উদ্বিগ্ন এবং তানভীর আহমদের কাছে কোনোভাবেই নিজেদেরকে নিরাপদ বোধ করছি না।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) আকতার জাহানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তানভীর আহমদের বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তানভীর আহমদের সঙ্গে বিভাগের কোনো সভাসহ একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন বিভাগের শিক্ষকরা। তারা মনে করেন, এ ধরনের নৈতিকতাহীন একজন সহকর্মীর সঙ্গে বিভাগে আমাদের পক্ষে পেশাগত কার্যক্রম চালানো অসম্ভব। এর পরিপ্রেক্ষিতে তানভীর আহমদ বিভাগের সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন।

৯ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আবাসিক ভবন জুবেরি ৩০৩ নম্বর কক্ষ থেকে আকতার জাহানের (৪৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরে ১০ নভেম্বর শনিবার সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত শেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ডাক্তার এনামুল হক বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার মৃত্যু বিষক্রিয়া জনিত কারণে হয়েছে। তবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে ভিসেরা রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’

ওই দিন শনিবারই আকতার জাহানের ছোটো ভাই কামরুল হাসান রতন অজ্ঞান আসামি উল্লেখ মামলা করেন। এতে তিনি বলেন, ‘সুইসাইড নোট থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, তিনি (আকতার জাহান) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী/ প্ররোচনাকারীদের খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে মর্জি হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত