নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ২১:৩৬

ফের বিদ্যুৎহীন উপাচার্য, ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি

বুধবার রাত নয়টার আবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আমিনুল হক ভূঁইয়ার অফিস কক্ষের বিদ্যুৎ ও ডিশ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এদিকে, রাতে শাবি ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আগ থেকেই ক্যাম্পাসে রাখা হয়েছে জলকামান। পুলিশ হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

সিন্ডিকেট সভার জন্য সন্ধ্যা ৬টায় শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ভবনের তালা খুলে দিয়ে ও বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করে দিয়েছিলো। এসময় রাত ৯টা পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছিলো শিক্ষার্থীরা। তবে এই সময়ের মধ্যে বৈঠকেই বসতে পারেননি সিন্ডিকেট সদস্যরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইশফাকুল হক সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সিন্ডিকেট বৈঠক আহ্বান করা হলেও সিন্ডিকেট সদস্যরা আসতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। রাতে তাঁরা বৈঠকে আসার 'সাহস করতে পারছেন না' বলে জানিয়েছেন তিনি।

রাত নয়টা পর্যন্ত বৈঠক শুরু না হওয়ায় উপাচার্য ভবনে আবার তালা ঝুলিয়ে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় শিক্ষার্থীরা।

এরআগে বুধবার বিকেল ৪টার দিকে তারা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলো। বেলা দেড়টা থেকে উপাচার্য কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান নেয় বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় চালুর ঘোষণা প্রদানের পূর্ব পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র সারোয়ার তুষার।

ছাত্রলীগের সংঘাতের জের ধরে বুধবার সকালে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দুপুরে সিন্ডিকেট সভা শেষে অধ্যাপক ড. কবির হোসেন জানান, ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস পরীক্ষা ও তিন ছাত্র হল বন্ধ থাকবে।

এদিকে সকালে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা শোনার পরই এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। সকালেই সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে তারা। প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধের পর উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান অনুসারীদের ধাওয়া করে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অঞ্জন রায়, আবু সাঈদ আখন্দ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম গ্রুপ। এ সময় গুলি ছোঁড়া ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ছাত্রলীগ। এনিয়ে উত্তেজনার মধ্য মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিয়ে ছাত্র হলগুলোতে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় বেশকিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

এই অভিযানের পর শাবির তিন হল বন্ধ ঘোষণা করে সকাল ৮ টার মধ্যে ছাত্রদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে নিজস্ব ক্ষমতা বলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে উপাচার্য ড. আমিনুল হক ভূঁইয়া।

ছাত্রলীগের সংঘাতের ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও পুরকৌশল বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. জহির বিন আলমকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত