রাবি প্রতিনিধি

২২ জুলাই, ২০১৭ ২২:১৩

ছয় মাস ধরে নিখোঁজ রাবি শিক্ষার্থী ফরহাদ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রুহুল কুদ্দুস মীর ফরহাদ আলী গত ছয় মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। সাধারণ ডায়েরি করার চার মাস পার হলেও এখনো তার কোন খোঁজ করতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

ফরহাদের মা ফাহিমা খাতুনের দাবি, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার পথে নগরীর ডিঙ্গাডোবা মোড় থেকে র‌্যাব পরিচয়ে কয়েকজন ফরহাদকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর রাজপাড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলেও প্রথমে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। দুই মাস পর গত এপ্রিল মাসে পুলিশ জিডি গ্রহণ করেন। এরপর চারমাস পার হলেও এখনো কোনো খোঁজ দিতে পারেনি পুলিশ। র‌্যাব অফিসেও কয়েকবার খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু তারা কিছু জানেন না বলে উল্লেখ করেন। ঘটনার পরদিন শুধু বাড়ি এসে একটু তল্লাশী করেছিলো র‌্যাব সদস্যরা। এরপর আর কোন খোঁজ নেই।

জানা গেছে, ফরহাদ আলী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। নগরীর ভাটাপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবারের সাথে থাকতেন। তার বাবা মীর ফজলুল করিম স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের হিসাব সহকারী পদে অবসর গ্রহণ করেছেন। এখন ভাড়া বাসা ছেড়ে দিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদরের আলুপদিয়া মনিরামপাড়া নিজেদের বাড়িতে ফিরে গেছেন তারা। সেখান থেকেই নিয়মিত রাজশাহী এসে ছেলের খোঁজ করছেন বাবা-মা। কিন্তু বারবার হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন তারা। ছেলের খোঁজে ইতিমধ্যে অনেক টাকা-পয়সা খরচ করেছেন তারা।

সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখিত তথ্যমতে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টার দিকে ফরহাদ একটি পুরনো মোটরসাইকেল নিয়ে ভাটাপাড়ার বাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা দেন। মোটরসাইকেলটি ডিঙ্গডোবা মোড়ের একটি গ্যারেজে রেখে তিনি ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ধরার জন্য মোড়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাম লেখা একটি মাইক্রোবাস সেখানে এসে দাঁড়ায়। গাড়ি থেকে চার-পাঁচজন লোক নেমে ফরহাদকে জোর করে তাদের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই স্থানীয় কয়েকজন লোক তার বাড়িতে ফোন করে বিষয়টি জানায়। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির লোকজন বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে ফরহাদের খোঁজ নিতে থাকেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো খোঁজ পাননি।

এ বিষয়ে রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি থানায় নতুন জয়েন করেছি। এ বিষয়ে কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব জানান, ‘বিভাগের কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সাথে এমন ঘটনা ঘটলে আমরা শৃঙ্খলা কমিটি বিষয়টি তদারক করি। যখন ফরহাদের বিষয়টি শুনি তখন বিভাগীয় সভাপতি এবং আমরা র‌্যাব অফিসে খোঁজ নিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কিছু জানে না বলে জানায়। আমি যতদূর জানি ফরহাদ তাবলীগ জামায়াত করতো, একটু ধার্মিক ছিলো এবং প্রচুর বন্ধুদের সাথে ঘোরাঘুরি করতো। খুবই চঞ্চল স্বভাবের ছেলে ছিলো। ব্যক্তিগতভাবে আমার কখনো মনে হয়নি সে খারাপ কিছুর সাথে জড়িত।’

এ বিষয়ে র‌্যাব-৫ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর এএম আশরাফুল ইসলাম জানান, ‘অনেক আগের ঘটনা তাই বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত