নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ১৬:৫৩

শাবিতে এবার মাঠে নামলেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা, আন্দোলনকারীদের দোষারূপ

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যবিরােধীদের দীর্ঘ আন্দোলনের পর এবার মাঠে নামলেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা। আজ ক্যাম্পাসে তারা মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলনকরে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল করে তুলছেন বলে দাবি করেন। ব্যক্তিগত থেকে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনের সূত্রপাত বলেও দাবি করেন এসব শিক্ষকরা।

'মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষক পরিষদ' এর
‌ব্যানারে আজকের পাল্টা কর্মসূচী পালন করেন শিক্ষকরা। এরআগে প্রায় পাঁচ মাস ধরে 'মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদের' ব্যানারে উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে শিক্ষকদের একাংশ।

উপাচার্যের পক্ষ নিয়ে আজকের কর্মসূচীতে শিক্ষকরা দাবি করেন, ব্যাক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে চলমান আন্দোলনের উদ্ভব।

সোমবার দুপুর ১টায় ব্শ্বিবিদ্যালয়ের শিক্ষা ভবন-সি এর ২০৯ নং রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে এমনটি দাবি করেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম।

লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম বলেন, উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ কোন ক্রমেই তাঁর অপসারণের অন্দোলনের ভিত্তি হতে পারে না। ব্যাক্তিগত স্বার্থ ও দ্বন্দ্ব থেকেই এর উৎপত্তি বলে তিনি দাবি করেন।

তিনি গত ১২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন ড. জহির বিন আলম এর সাথে স্পেস সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষক দুর্ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে এ নিয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা উপাচাযর্যের নিকট গেলে, উপাচার্য তাদেরকে পর্যাপ্ত সময় দেন নি বলে অভিযোগ করেন শিক্ষকরা। এ নিয়ে সৃষ্ট বিরোধ পরবর্তীতে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। ফলে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।

অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম অভিযোগ করেন, শিক্ষক সমিতির বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত সভায় আন্দোলনকারীদের প্রতি আলোচনার আহবান জানালেও তারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, আন্দোলনকারীরা নিজেদের সরকার দলীয় দাবি করছেন। তাহলে কোন শক্তিবলে আন্দোলনকারীরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও শিক্ষক সমিমিতর নির্দেশ অমান্য করেন।

সর্বশেষ ৩০ আগস্ট শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটার পর আন্দোলনকারীরা নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের অভিযোগ করেন। পরে তিনি শিক্ষকদের আন্দোলন থেকে সরে এসে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহবান জানান।


মানববন্ধন : এরআগে বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষকদের এই অংশ।'উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনের নামে শাবিকে অস্থিতিশীল করে তোলার' প্রতিবাদে এই মানবন্ধন করেন উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা। সোমবার

মানববন্ধন শেষে এক সমাবেশে শাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. কবির হোসেন জানান, সামান্য স্পেস নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে বিশ্ববিদ্যালয় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃস্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে ভালোবাসলে আমরা ভর্তি পরীক্ষাকে বিঘ্নিত করতে পারিে না। ভিসি ক্ষমা চাওয়ার পরও তারা মানেনি। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনা তারা মানে না, তারা মন্ত্রনালয় মানে না, আইন মানে না, সরকার মানে না, শিক্ষকদের সভার সিদ্ধান্ত মানে না।

তিনি বলেন, আমরা একদিনের জন্যও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ চাইনা। আমরা চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফোরামের শিক্ষকদের নিয়ে একটি কমিটি করে আলোচনা করে সমাধান করতে পারি। সরকারকে আবেদন জানাই, গত ৫মাসে শাবিতে যা ঘটছে তার একটি তদন্ত করুন। সরকার যদি উপাচার্যকে নিয়ে যায় তারা যদি উপাচার্যও হয় আমরা শিক্ষকরা তাদের সাথেও কাজ করব, কিন্তু কোন মতেই বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করা চলবে না।

শাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. কবির হোসেনের সভাপতিত্বে ও ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদার এর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক দিলারা রহমান, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্তচিন্তা চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষক পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. আখতারুল ইসলাম।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত