মিজানুর রহমান

২৫ জুন, ২০২২ ০৩:০১

তৌহিদ আফ্রিদীর লাইভ ও ফেসবুক সাংবাদিকতা

ফেসবুক নিউজফিডে সিলেটের বন্যার ত্রাণ বিতরণকে কেন্দ্র করে ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদীর সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও চোখে পড়লো। সংবাদ সম্মেলনে টেবিলে দেখি ২০টির বেশির মাইক্রোফোন। মাইক্রোফোনগুলোতে মূলধারার গণমাধ্যমের লোগো নেই। বুঝতে বাকি রইলো না সম্মেলনে যারা আছেন তারা সবাই কথিত ফেসবুক সাংবাদিক।

আগ্রহের বশে পুরো সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও দেখলাম। ইউটিউবার আফ্রিদী কেন কথিত ফেসবুক সাংবাদিকদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করলেন সেই ব্যাখ্যা দেখে বেশ নড়েচড়ে বসলাম। তার বক্তব্যে আমি বুঝলাম- এই যে ফেসবুক সাংবাদিকতার নাম ধরে যারা লাইভ করছেন বা নিউজ শেয়ার করছেন, সবার আগে এইগুলো সবার নজরে আসে। দেশের বেশিরভাগ গণমাধ্যম নিউজ কাভারের সময় প্রথম সূত্র বা তথ্য পান ফেসবুক ব্রডকাস্ট করা পেইজগুলোতে।

আমার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টে দেশের নামকরা গণমাধ্যমের অনেক সংবাদকর্মী আছেন। কথিত ফেসবুক সাংবাদিকরা মূলধারার সাংবাদিক নয় বলে তাদের অনেকই কথা বলতে দেখি বা অস্বীকার করতে দেখি। এক্ষেত্রে তৌহিদ আফ্রিদীকে বেশ কৌশলী মনে হয়েছে। স্থানীয় ২০টির মত লাইভ পেইজ তার বক্তব্য প্রচার করেছে। এতে যে পরিমাণ মানুষের কাছে তার বক্তব্য গিয়েছে মূলধারার গণমাধ্যমে কর্মীদের দ্বারা টেলিভিশনের টিআরপি কিংবা ওয়েবসাইটের ভিজিটর এতো হতো না।

ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স যৌথ উদ্যোগে ডিজিটাল সাংবাদিকতার উপরে অনলাইন কোর্স চালু করেছে। সময়ের সাথে সাথে সবকিছু বদলাচ্ছে এই বিষয়টি মেনে নিয়ে মূলধারার সংবাদ মাধ্যমগুলোকে কাজ করা উচিত। নইলে একটা সময় আসবে তৌহিদ আফ্রিদীর মত অনেকেই কথিত ফেসবুক সাংবাদিকদের দ্বারস্থ হবেন এমনকি সাধারণ মানুষও সোশ্যাল মিডিয়ার নির্ভরশীল হবেন।

যারা ফেসবুকে সাংবাদিকতার নামে কাজ করছেন বলতে দ্বিধা নেই- এদের বেশিরভাগ অংশ স্বল্প শিক্ষিত বা সাংবাদিকতা পেশা নিয়ে জ্ঞান কম। যেখানে মেটা কিংবা রয়টার্স এর আন্তর্জাতিক মানের সংস্থাগুলো ডিজিটাল সাংবাদিকতার উপরে প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। সুতরাং এই বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে চলা প্রয়োজন। বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- সরকার তথা বেসরকারি উদ্যোগে এই সম্ভাবনাময় ফেসবুক সাংবাদিকতা ইন্ডাস্ট্রিকে প্রশিক্ষিত করা। এতে সঠিক ও গুণগত সংবাদ সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাবে এবং গুজব নিরসনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত