শহিদুল ইসলাম

২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১২:৫৭

বিশ্বমানব হবি যদি কায়মনে বাঙালি হ’

ফেব্রুয়ারি মাস এলেই আমাদের জোরেশোরে বাঙালি হবার কথাটি সামনে চলে আসে। এ যেন অনেকটা স্বভাবগত সামনে চলে আসা। আমাদের হৃদয়ের তন্ত্রীতে অনুরণন তোলে। আমরা অনেকটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি। অন্তত এই একটা দিন আমরা বাঙালি হবার তোড়জোড় করি। আমরা বাঙালি হই। কিন্তু সত্যি করে কি আমরা কখনও ভেবে দেখেছি বাঙালি হওয়া, না-হওয়ার পার্থক্য কোথায়? এর গুরুত্ব কতটা? আসলে বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ নিয়ে আন্দোলনেই আমরা জীবনটা পার করে দিলাম, বাঙ্গালি হওয়া, না হওয়ার গুরুত্ব নিয়ে ভাববার সময় পেলাম কোথায়? তাই গুরুসদয় দত্তের চরণটি বেছে নিয়েছি আজকের লেখার শিরোনাম হিসেবে বিষয়টি নিয়ে সামান্য চিন্তার সূচনা করবো বলে।

বিষয়টি নিয়ে আগে যে কেউ ভাবেননি, এমন নয়। কিন্তু তাতে রাজনীতির ছোঁয়াটিই ছিল প্রবল। দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথম দিকে এ নিয়ে ভেবেছেন অনেকের সাথে আবদুল হক। শেষের দিকে আরো অনেকের সাথে ভেবেছেন বদরুদ্দীন উমর, আগেই বলেছি এঁদের ভাবনা মূলত ছিল রাজনৈতিক। যে ইসলামি জাতীয়তাবাদের জোয়ারে মধ্য চল্লিশে এদেশের বাঙ্গালি মুসলমান সাময়িক ভাবে তাদের বাঙালি পরিচয় ভুলে গিয়েছিল, সেই বাঙালি পরিচয় মনে করিয়ে দেয়ার দরকার ছিল। অবশ্য পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর সেদেশের অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা মহম্মদ আলী জিন্নাহ প্রথম ও শেষবারের মত তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানে সফরে এসে ১৯৪৮ সালে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা দিয়ে সে কাজটা অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছিলেন। বলা যায় বাঙালির মুখে প্রথম আঘাতটা তিনিই দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে পাকিস্তান ভাঙার বীজটিও বপন করে যান তিনি সেদিন। উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণাকে এদেশের মানুষ সেদিন বিনা বাধায় যেতে দেননি। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি প্রবল থেকে প্রবলতর হয়ে ওঠে এবং একুশ তারই সফল পরিণতি। উমর একে বাঙালি মুসলমানের ঘরে ফেরার দিন হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। তার এ সিদ্ধান্ত যদি সত্যি হয় তাহলে বলতেই হয় যে প্রথম থেকেই এদেশের মুসলমানরা তাদের ঘরে ছিলেন না ছিলেন নিজগৃহে পরবাসী হয়ে।

একুশের পর বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে সরাসরি কথা বলার সাহস পরবর্তী পাকিস্তানি শাসকদের হয়নি; কিন্তু বাঙালি ও তার ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির বিরুদ্ধে পরোক্ষ ষড়যন্ত্র শেষদিন পর্যন্ত করে গেছে। সমগ্র পাকিস্তান আমলে ইসলামি জাতীয়তাবাদ যা কিছু বাঙালির মহান সৃষ্টি তাকেই অস্বীকার করতে শেখায়। স্বাভাবিকভাবেই তার বিরুদ্ধে বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ক্রমশ প্রবল হয়ে ওঠে এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম তার বিজয় পতাকা গর্বভরে তুলে ধরে। সময়ের দাবি অনুযায়ী সে আন্দোলনে বিভিন্ন জন বিভিন্ন সময়ে তাদের অবদান রেখে গেছেন। সে ইতিহাস নানাজনে নানাভাবে আলোচনা করেছেন। কিন্তু আমি আজ ক্ষুদ্র জাতীয়তাবাদের কথা বলছি না-বলছি নির্ভেজাল বাঙালি হওয়া, না হওয়ার পার্থক্যের কথা। তার গুরুত্বের কথা।

জাতীয়তাবাদ একটি রাজনৈতিক প্রপঞ্চ। অন্যান্য রাজনৈতিক প্রপঞ্চের মতই তার গুরুত্ব-অগুরুত্বের প্রশ্নটি নির্ভর করে বাস্তব রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর। একটি জাতির জন্য বিশেষ এক রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সামাজিক অবস্থায় ‘জাতীয়তাবাদ’রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে যতটা কার্যকর হয়ে ওঠে, মূল্যবান হয়ে ওঠে, ভিন্ন অবস্থায় তার গুরুত্ব কমে যায়। এমন কি সামান্য মূল্যও আর অবশিষ্ট থাকে না। কোন দেশে বিদেশী শত্রুর উপস্থিতিতেই জাতীয়তাবাদ নামক রাজনৈতিক অস্ত্রটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তাই পাকিস্তানি শাসনামলে বাঙালি জাতীয়তাবাদ যতটা গুরুত্ব বহন করেছিল, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর ঐতিহাসিক কারণেই তার গুরুত্ব হ্রাস পায়। এমনকি সে হাতিয়ারের আজ আর কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।

তাই আমি রাজনৈতিক হাতিয়ার অতীতের বাঙালি জাতীয়তাবাদের কথা বলছি না- বলছি হাজার বছর ধরে যে ধানসিঁড়িটির ধারে আমার যে পরিচয়টি গড়ে উঠেছে তার কথা। যে বাংলার মুখ দেখে জীবনানন্দ আর সমগ্র পৃথিবীর রূপ খুঁজতে যেতে চান না, সেই বাংলার কথা বলছি। আমি বলছি সেই বাংলার কথা যে বাংলার দরজা খুলে কচি সবুজ দূর্বা-ঘাসের ওপর যে শিশির বিন্দুর মধ্যে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বরূপ খুঁজে পান। মানুষ হয়ে না হোক, শঙ্খচিল শালিকের বেশে বাংলায় বার বার ফিরে আসার আকুতি জানান জীবনানন্দ, আমি সেই বাংলার কথা বলছি। যে পথ দিয়ে হাজার বছর জীবনানন্দ হাঁটছেন, আমি সেই পথের কথা বলছি। আমি যার কথা বলছি, সেখানে নেই কোন রাজনৈতিক কুটিলতা-নেই কোন সংঘের সংকীর্ণতা।

আমি বলছি সেই ভাষার কথা যে আর্যভাষা ১৫০০-৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এদেশে প্রবেশ করে নানা বিবর্তনের পথ পরিক্রমণ শেষ করে ৬০০-১০০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে প্রাকৃত ভাষায় রূপ লাভ করে এবং ক্রমে বাংলা ভাষায় রূপান্তরিত হয়। আমি বলছি চর্যাপদ নামের সেই আদি বাংলা-সাহিত্যের কথা যা হাজার বছর পূর্বে এই বাংলাতেই রচিত হয়েছিল। আমি বাংলার সেই পুঁথি সাহিত্যের কথা বলছি, যা মধ্যযুগে হিন্দুও মুসলমান পুঁথি-সাহিত্যিকদের মিলিত প্রয়াসে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছিল। উনিশ শতকের শুরুতে যে পুঁথি সাহিত্যের শরীরে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগতে শুরু করে এবং বিংশ শতাব্দীর শুরুতেই বিশ্ব সাহিত্যে পরিণত হয় এবং রবীন্দ্রনাথ সদম্ভে ও সরবে বিশ্ববাসীকে তা জানিয়ে দেন, আমি সেই সাহিত্যের কথা বলছি। এর মধ্যে জটিলতা নেই- ক্ষুদ্রতা নেই, নেই কোন সংকীর্ণতার কাঁটাতার।

সেই বাংলাদেশ; সেই বাংলা ভাষা, সেই বাংলা সাহিত্য, সর্বোপরি সেই বাঙালির সঙ্গে এদেশের বাঙালি নামের মুসলমানের যোগাযোগ কতটুকু? যারা নিজেদের বাঙালি বলে পরিচয় দেয়, মাতৃভাষা বাংলার জন্য যারা অকপটে জীবন বিলিয়ে দিতে গর্ব করে, বাংলা ভাষাতেই যাঁরা সাহিত্য-সংস্কৃতি নির্মাণ করে? ইসলামি জাতীয়তাবাদের প্রতীক পাকিস্তানকে সশস্ত্র যুদ্ধে পরাজিত করে যে স্বাধীন ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের জন্ম, সেই বাংলাদেশের নরম পলিভেজা মাটির ওপর দাঁড়িয়ে পুনরায় আজ এ প্রশ্নটি হয়তো অনেককেই বিস্ময়াভিভূত করবে। কিন্তু এ প্রশ্নটি যে কিছুতেই মন থেকে তাড়িয়ে বের করে দিতে পারছি না। তাই ইতিহাসের পাতা উল্টিয়ে একটু পিছনের দিকে তাকানো যাক। দেখা যাবে এক সময় এদেশে একজন মুসলমানও ছিল না। মুসলিম বিজয়ের পর ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রথম থেকেই বলা যায় এদেশে ইসলাম ধর্মের প্রসার ঘটতে থাকে। ব্রাহ্মণ্য ধর্মের অমানবিক জাতিভেদ ও লোকায়ত বিকৃত তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্ম এদেশে ইসলাম প্রসারের সামাজিক ক্ষেত্র প্রস্তুত করেই রেখেছিল।

জার্নাল অফ এশিয়াটিক সোসাইটি অফ পাকিস্তানে প্রকাশিত (জুন ১৯৬৪) একটি প্রবন্ধের উদ্ধৃত করে পঞ্চানন সাহা আমাদের জানিয়েছেন যে অনুমান করা যেতে পারে যে তেরো শতকে শতকরা একজন, চৌদ্দশতকে তিনজন, পনেরো শতকে শতকরা ছয়জন, ষোল শতকে বারোজন, সতেরো শতকে পনেরো জন, আঠারো শতকে বাইশজন, উনিশ শতকের শেষভাগে (১৮৭১) উভয় বঙ্গে শতকরা বাইশজন মুসলমান ছিল। (হিন্দু-মুসলমান সম্পর্ক ‘নতুন ভাবনা’ বিশ্ববীক্ষা ১৯৯২ পৃষ্ঠা ১) বিংশ শতাব্দীতে তা বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৪৭-এর দেশভাগের বছরে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিল, যার শক্তিতে আমরা বাংলাকে কেটে দু টুকরো করেছিলাম। একটি মধ্যযুগীয় সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের অংশ হয়ে ক্ষণকালের জন্য আমরা বাঙালি মুসলমান বাঙালি হিন্দুর থেকে আলাদা হয়ে আলাদা প্রকোষ্ঠে ঢুকে আত্মপ্রসাদ লাভ করেছিলাম। কিন্তু সে আত্মপ্রসাদের স্থায়িত্বকাল ছিল খুবই ক্ষণস্থায়ী।

সেই পাকিস্তান রাষ্ট্রে ইসলামি জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে ২১শে ফেব্রুয়ারি সত্যি বাঙালি মুসলমানের জীবনে এক বিরাট দিন। ঘরে ফেরার দিন বলে স্বীকৃতি লাভ করেছে। দিনটি এলেই আমরা আবেগাচ্ছন্ন হয়ে পড়ি। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও একটা সন্দেহের কাঁটা মনকে বার বার ক্ষতবিক্ষত করে। সন্দেহের সে কাঁটাটি কিছুতেই মন থেকে উপড়ে ফেলা যাচ্ছে না। তাহলে সত্যি কি আমরা, বাঙালি মুসলমান, সেদিন নিজের ঘরে ফিরেছিলাম? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলবেন ‘নিশ্চয়ই’। কিন্তু আমার মন থেকে এ সন্দেহ আজও দূর হয়নি যে বাঙালি মুসলমানরা কোনদিন এদেশকে নিজেদের আপন দেশ ভাববে, যেমন ভেবেছিলেন রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ, সত্যজিৎ, অমর্ত্য সেনরা? বাঙালি মুসলমানেরা বাংলা ভাষাকে অন্তর দিয়ে ভালবেসে বাংলা সাহিত্য- সংস্কৃতিতে অবগাহন করে আপাদমস্তক বাঙালি হয়ে উঠতে পারবে? এ সন্দেহ আমার আজও গেল না। তাই তো আজ গুরুসদয় দত্তের এই চরণটি নিয়ে ভাবতে বসেছি। তাই তো ভাবতে বসেছি বাঙালি মুসলমানের ভিতর থেকে বাঙালি হিন্দুর মত একজন বিশ্বমানব বেরিয়ে আসতে পারলো না কেন?

গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বাঙালি হিন্দু ও মুসলমান, যারা সাম্প্রদায়িকতাকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করেন, বাঙালি ছাড়া নিজেদের যাঁরা অন্যকিছু ভাবতে পারেন না, তাদের মধ্যে যারা লেখালেখি করেন, তারা সব সময়েই মধ্যযুগের হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সমন্বয়ের ধারাটির ওপর জোর দেন। তারা বোঝাতে চান যে বৃটিশ শাসনের আগে এদেশের হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে এক চমৎকার সৌহার্দ্যের সম্পর্ক বিরাজ করতো। একে অন্যের সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নিত। একের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অন্যের মধ্যে কোন রকম হীনমন্যতার জন্ম হত না। সাম্প্রদায়িক পাপ তাদের সম্পর্ককে কখনই কলুষিত করতে পারেনি। কথাটা যে একেবারেই মিথ্যা তা বলা যাবে না। মধ্য যুগে হিন্দু ও মুসলমান রচিত পুঁথি সাহিত্যের দিকে তাকালে তা স্পষ্ট হয়। এটা বোঝা অসম্ভব হয়ে পড়ে লেখক হিন্দু না মুসলমান। তাই অনেকেই রায় দিয়েছেন যে মধ্যযুগের পুঁথি সাহিত্যে হিন্দু ও মুসলমানের অবদান প্রায় সমান। সমান হোক বা না হোক, মধ্যযুগীয় পুঁথি সাহিত্যে বাংলার মুসলমানের অবদান যে কম নয়, সে কথা সত্যি। কিন্তু তার পরেও কথা থাকে। বিভিন্ন পুঁথি প্রমাণ করে যে তখনও বাংলা ভাষা সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রতি সদয় ছিল না, এরকম বাঙালি মুসলমানের সংখ্যা নেহাত কম ছিল না।

সপ্তদশ শতাব্দীর কবি আবদুল হাকিমের লেখায় তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে দেখা যায়। যারা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে বাংলা ভাষাকে ঘৃণা করেন, তাদের জন্ম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। তাদের বাংলা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে পরামর্শ দেন। আবার এটাও সত্যি নয় যে নিম্নবর্ণের হিন্দু ও বিকৃত বৌদ্ধ ধর্ম থেকে যারা ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয়েছিলেন তারা বাপ দাদার দীর্ঘদিনের সংস্কৃতি পরিত্যাগ করে রাতারাতি আরবের ইসলামি সংস্কৃতি গ্রহণ করেছিলেন। প্রাক-ইসলাম ধর্ম-সংস্কৃতির অনেক প্রভাবই তাদের মধ্যে কার্যকর ছিল। তার প্রমাণ উনিশ শতকের ওয়াহাবি ও ফরায়েজি নামক ধর্ম-শুদ্ধি আন্দোলনে। ঐ দুটি পশ্চাদমুখী আন্দোলন ধর্মান্তরিত মুসলমানের জীবন ও সংস্কৃতি থেকে হিন্দু ও বৌদ্ধ সংস্কৃতির অবশেষটুকু ঝেঁটিয়ে বিদায় করতে চেয়েছিল।

বাংলার নরম পলিভেজা মাটি, ঘাসফুল, নদ-নদী, আকাশ-বাতাস থেকে জন্ম নেয়া সংস্কৃতি তাদের চোখে ছিল হিন্দু ও বৌদ্ধ সংস্কৃতি। সূক্ষ্ম বিশ্লেষণে দেখা যাবে যে ইসলামে ধর্মান্তরিত হবার প্রথম থেকেই এদেশের সংস্কৃতির সাম্প্রদায়িকীকরণ শুরু হয়ে যায়। অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও এদেশের ভাষা- সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রভাব থেকে ইসলাম দূরে সরে থাকতে পারেনি। প্রাক-ইসলামি অনেক কিছুই ভারতীয় ইসলাম আত্মস্থ করে নিয়েছে। বাহ্যিকভাবে দেখলে দেখা যাবে কেবল নামের পরিবর্তন হয়েছে। বাংলা নামের জায়গাগুলো আরবি নাম দখল করে নিয়েছে। রাজা গণেশের পুত্র যদু জালালউদ্দীন নাম নিয়ে সিংহাসনে বসেছিলেন। কিন্তু আফ্রিকার ইতিহাস ভিন্ন। এদেশের বিপরীত চিত্রই সেখানে চোখে পড়ে। সেখানে যখন ইসলাম ও খ্রিস্টধর্ম প্রচারকবৃন্দ ধর্ম প্রচার করছিলেন তখন মুসলমান ধর্ম প্রচারকগণ ছিলেন অনেক বেশি উদার। ধর্মান্তরিত নব্য মুসলমানের কাছে তাদের চাহিদা ছিল খুবই স্থিতিস্থাপক। পক্ষান্তরে খ্রিস্টধর্ম প্রচারকবৃন্দ ছিলেন সাংঘাতিকভাবে অনুদার। নব্য খ্রিস্টানদের কাছে তারা অনেক বেশি দাবি করতেন। তাদের পূর্বপুরুষের সংস্কৃতি থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছেদ কামনা করতেন। বিশুদ্ধতার দাবি আফ্রিকায় খ্রিস্টধর্ম প্রচারে সবচেয়ে বড় বাধা ছিল। তাই আফ্রিকায় ইসলাম দ্রুত প্রসার লাভ করে। পার্বত্য জেলার বান্দরবনের শৈ অং প্রু’র একটি লেখা থেকে এর সমর্থন পাওয়া যায়।

তিনি জানান ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে ধর্মান্তরের কাজে ইসলামি সংস্থার চেয়ে খৃস্টীয় মিশনারি কার্যক্রম আদিবাসী/উপজাতি সমাজে অধিকতর সমাদৃত হচ্ছে।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘খৃস্টীয় ধর্মে দীক্ষিত হবার পরও সেই ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যে জাতিরই হোক সে বা তারা তাদের পূর্বেকার বেশভূষা, ভাষা-কৃষ্টি, সামাজিক রীতিনীতি, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি সবকিছ্ইু অপরিবর্তিত রাখার সুযোগ পায়। অপর পক্ষে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের সাথে সাথে ঐ ব্যক্তিকে তার পূর্বতন সবকিছুই সম্পূর্ণভাবে বিসর্জন দিয়ে নতুন জীবনাচার অনুসরণ করতে হয়।’ (বাংলাদেশের উপজাতি ও আদিবাসী অংশীদারিত্বের নতুন দিগন্ত, কার্তিক ১৪০০)। আফ্রিকার উল্টো চিত্র।

আমি যা বলতে চাইছি তা হল মানুষ রাতারাতি তার ধর্ম পরিবর্তন করতে পারে। কিন্তু হাজার বছর ধরে যে ভাষা-সাহিত্য সংস্কৃতি তাকে জাপটে থাকে, তা থেকে তার বিচ্ছেদ ঘটানো যায় না। যেকোনো নতুন ধর্ম নতুন সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটায় এটা সত্যি। কিন্তু পুরনো সংস্কৃতির পুরোপুরি বিলোপ সাধন করতে পারে না। তাই তো ওয়াহাবি ও ফরায়েজি আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছিল। তবে ব্যর্থ হলেও তার প্রভাব সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে গেছে এমন ভাবার কোন সমাজতাত্ত্বিক যুক্তি খুঁজে পাওয়া যায় না। সমাজে যা ঘটে, তা সে সমাজে কিছু রেখে যায়। ভাল হোক আর মন্দ হোক। ওয়াহাবি ও ফরায়েজি আন্দোলন এদেশে হিন্দু-মুসলমানের পার্থক্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল। হয়তো সেই পথ ধরেই এদেশে সাম্প্রদায়িকতার গাছটি শক্তি সঞ্চয় করে ৪৭-এ দেশভাগের পথ সুগম করেছিল।

পাশাপাশি উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে মুসলিম আশরাফ শ্রেণী যখন ইংরেজি ভাষার অর্থনৈতিক গুরুত্ব উপলব্ধি করেন, তখনও তাঁরা বাংলা ভাষাকে মুসলমানের ভাষা বলে গণ্য করতে রাজি হতে পারেননি। নবাব আবদুল লতিফ সাহেবের বাড়িতে মাসিক যে আলোচনা সভা হত সেখানে ইংরেজি, উর্দু, ফারসিসহ সব ভাষার প্রবেশাধিকার থাকলেও বাংলার ছিল না। বড়জোর বাংলা ছিল নিম্নশ্রেণীর মুসলমানের ভাষা- এটুকু বিশ্বাস করতে তারা রাজি ছিলেন। ১৮৮২ সালের হান্টার শিক্ষা কমিশনের সামনে পরিষ্কারভাবে নবাব আবদুল লতিফ সেকথাই বলেছিলেন। আর বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি? তা যে পুরোপুরি হিন্দুর দ্বারা সৃষ্ট, হিন্দুর একান্ত নিজস্ব বিষয় সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ ছিল না তাঁর। তাই তা বিষবৎ পরিত্যাজ্য।

উনিশ শতকের গোড়ায় যখন আধুনিক বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির গোড়াপত্তন ঘটছে, সেখানে মুসলমানরা ছিল পুরোপুরি অনুপস্থিত। অনুপস্থিত থাকতে কেউ তাদের বাধ্য করেনি। বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতির নির্মাণের পথ থেকে তারা নিজেরাই নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন কারণ তা বিজাতীয় অমুসলিম সাহিত্য সংস্কৃতি। তাই তারা বাংলা ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি থেকে মুসলমানের স্বাতন্ত্র্যকে সব সময় বড় করে দেখেছেন। এমনকি বিংশ শতাব্দীতেও আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ইসলামি সাহিত্য রচনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ। নজরুল উত্তরে তাঁকে জানিয়েছিলেন যে ইসলামি সাহিত্য কি, তা তিনি জানেন না।

পৃথিবীর সকল জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে অদ্ভুত প্রশ্নটির জন্মদাতা আমরা বাঙালি মুসলমান। তাহলে ‘বাঙালি মুসলমানের মাতৃভাষা কি?’ একজন ইংরেজ বা ফ্রেঞ্চ বা জার্মানকে যদি ঐ প্রশ্ন করা যায় তাহলে সে তা বুঝবে না। কিন্তু উনিশ শতকের শেষ এবং বিশ শতকের প্রথমার্ধে আমরা বাঙালি মুসলিমরা এই প্রশ্নটিকে নিয়ে বেধড়ক বিতর্ক করেছি। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাকালে আমরা বাঙালি ছিলাম। এখন নই। এখন আমরা ‘বাংলাদেশী’। পশ্চিম বাংলার বাঙালি থেকে আলাদা করার জন্য তা নাকি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। পশ্চিম বাংলায় মুসলমানও আছেন, হয়তো কর্তাব্যক্তিরা তা ভুলে গিয়েছিলেন।

পাকিস্তানিরা যেমন অন্য হরফে বাংলা লেখার চেষ্টা চালিয়েছিল, বাংলাদেশের শাসকরাও এক সময় বাংলা ভাষার পরিবর্তে ‘বাংলাদেশী’ ভাষা চালু করার প্রস্তাব রেখেছিলেন। এভাবে বাংলাদেশের হিন্দু ও বৌদ্ধরা মুসলমান হওয়ার পর তারা ক্রমান্বয়ে এদেশের মাটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। মহান একুশের ইতিহাস রচনার পরও বাঙালি মুসলমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করতে পেরেছে বলে আমার যথেষ্ট সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।

এদেশে ইসলামের আগমন, স্থানীয় হিন্দু ও বৌদ্ধদের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ, এদেশের ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে তার সংঘাত ও সমন্বয়ের এই সামান্য ইতিহাসটুকু তুলে ধরার পর যে সিদ্ধান্তটি বেরিয়ে আসে তাহলে বাংলার তথা ভারতবর্ষের ভাষা-সাহিত্য- সংস্কৃতির সঙ্গে আরবের ইসলামি ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির বৈরী সম্পর্কটি মৌলিক চরিত্রের। এই দুই সংস্কৃতির মিলন বা সমন্বয়ের চেষ্টা পুরোটাই ব্যর্থ হয়েছে বলা না গেলেও এটা মিথ্যা নয় যে শেষমেশ এই দুই সংস্কৃতির সংঘাতটাই জয়যুক্ত হয়েছে।

বাঙালি মুসলমান আজও কায়মনে বাঙালি হতে পারেনি। আবার পৃথিবীতে যারা খাঁটি মুসলমানের পতাকার ধারক ও বাহক বলে দাবি করেন তারা কখনই বাংলার মুসলমানকে খাঁটি মুসলমান বলে স্বীকার করেনি। তাই বাংলার মুসলমানরা ‘না ঘরকা না ঘাটকা’ই থেকে গেছে। তারা না হতে পেরেছে একশ’ ভাগ খাঁটি বাঙালি, না পেরেছে একশ’ ভাগ খাঁটি মুসলমান হতে। এ এক ত্রিশঙ্কু অবস্থা। এই ঝুলন্ত ত্রিশঙ্কু অবস্থায় কারো পক্ষে কি বিশ্ব মানবের পর্যায়ে যাওয়া সম্ভব? নিজের জমিতে যার পা দৃঢ়ভাবে স্থিত নয়, সে স্বর্ণলতার মত পরাশ্রয়ী। স্বর্ণলতা দেখতে কত সুন্দর! সেজন্যে তাকে আমরা সুন্দর নামটিও উপহার দিয়েছি। কিন্তু তার তো নিজের পায়ে দাঁড়াবার শক্তি নেই। নিজ ভূমিতে দাঁড়িয়ে বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে আত্মীয়তার আকাঙ্ক্ষা রবীন্দ্রনাথের ভাবনায় যেমন খুঁজে পাওয়া যায়, অমর্ত্য সেনের ভাবনাতেও পাওয়া যায়। আর সত্যজিৎ নিজস্ব সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্যকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে কখনো বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করার যুক্তি খুঁজে পাননি বরং বিশ্বের সকল সংস্কৃতি থেকে অনেক কিছু শেখার আছে বলে মনে করতেন। (আতাউর রহমান-শিক্ষাবার্ত : ডিসেম্বর ১৯৯৮)।

মহাকবি ফিরদৌসীর কথা মনে পড়ছে। তার সহস্রতম জন্মবার্ষিকীতে কাজী আবদুল ওদুদ ছোট্ট একটা লেখায় ফিরদৌসীর বিশ্বমানব হওয়ার পিছনে একটা যুক্তি খুঁজে পেয়েছেন। (ওদুদ রচনাবলী বাংলা একাডেমি ১ম খণ্ড পৃষ্ঠা : ৪০৬।) ফিরদৌসীর ‘আত্মবোধ ও আত্মবিসর্জনের ক্ষমতার’ জন্যই ওদুদ মনে করেন ‘যে ধর্ম তার দেশবাসী বিদেশী আরবদের কাছে থেকে লাভ করেছিলেন তার ভিতরকার যা চিরন্তন তা মনে প্রাণে গ্রহণ করতে তার ভিতরে দ্বিধা জাগেনি, অথচ তার ভিন্ন ধর্মাবলম্বী পূর্ব-পুরুষদের মাহাত্ম্যও তার মতো আর কোন দেশবাসীর চোখে প্রতিভাত হয়নি।’ অর্থাৎ একজন মুসলমান হয়েও ফিরদৌসী তার ইসলাম-পূর্ব পূর্বপুরুষদের সাহিত্য-সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে অস্বীকার করেননি।

বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মিসরিয় সাহিত্যিক নাগিব মাহফুজও ইসলামি সংস্কৃতির সঙ্গে প্রাচীন মিসরিয় সভ্যতার ঐতিহ্যকে অস্বীকার করেন নি। নোবেল বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন যে তার মধ্যে রক্তের দু’টি ধারা প্রবহমান। একটি চৌদ্দশ’ বছর পূর্বের ইসলামি ধারা: অন্যটি পাঁচ হাজার বছর আগের ফারাও সভ্যতা-সংস্কৃতির ধারা। মাহফুজ কায়মনে ‘মিশরিয়’ হয়েই বিশ্বমানব হতে পেরেছেন। ইসলাম মাহফুজের জন্যও বাধা হয়ে দাঁড়ায় নি। যদিও প্রাচীন সে মিসরিয় ও পারস্য-সভ্যতার সঙ্গে ইসলামি সভ্যতা-সংস্কৃতির বৈরিতা অস্বীকার করার উপায় নেই।

আসলে ইসলাম পূর্ব প্রাচীন সভ্যতাগুলোর সঙ্গে ইসলামের বিচ্ছিন্নতা মৌলিক। তাই মধ্যপ্রাচ্যের মাটিতে জন্ম নেয়া প্রাচীন মিসর ও ব্যাবিলনীয় সভ্যতা এবং পাকিস্তানের প্রাচীন মোহেন জো দারো ও হরপ্পা সভ্যতার রূপ-রস-সৌন্দর্য আহরণ করা ইসলামের পক্ষে সম্ভব হয়নি। যদিও কোরআনে ধর্ম-সভ্যতা-সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা অস্বীকার করা হয়নি। ইসলাম পূর্ব ধর্মগুলোর প্রচারকদের ‘নবী’ বলে স্বীকার করেছে। তাই ওদুদের মতে ফিরদৌসী কায়মনে পারসিক হয়েই বিশ্বমানব হতে পেরেছিলেন। ইসলাম তার জন্য বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়ায়নি।

সবশেষে আর একজন বাঙালি বিশ্বমানবের কথা লিখে আজকের লেখাটি শেষ করব। তিনি এই বাংলার মাটিতেই জন্মেছিলেন। যশোরের সাগরদাঁড়ি। তিনি মধুসূদন দত্ত। রাতারাতি খ্রিষ্টান হতে তাঁর কোন সমস্যা হয় নি। সমস্যা হল যখন তিনি কায়মনে ইংরেজ হওয়ার চেষ্টা করলেন। বহুদিন তিনি ইংরেজি ভাষা সাহিত্য রচনার পর নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এলেন। এবারে তিনি কায়মনে বাঙালি হয়ে লিখলেন ‘মেঘনাদ বধ কাব্য’। নিজেকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিলেন। তাঁর সেই ভুলের জন্য অনুশোচনায় লিখলেন ‘বঙ্গভাষা’।

(হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন:-
তা সবে. (অবোধ আমি! অবহেলা করি,
পর-ধন-লোভে মত্ত, করিনুভ্রমণ
পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি.
কাটাইনু বহু দিন সুখ পরিহরি.
অনিদ্রায় অনাহারে সঁপি কায় মনঃ
মজিনু বিফল তপে অবরেণ্যে বরি:-
কেলিনু শৈবালে, ভুলি কমল-কানন!
স্বপ্নে তব কুললক্ষ্মী কয়ে দিলা পরে,-
‘ওরে বাছা, মাতৃকোষে রতনের রাজি,
এ ভিখারি-দশা তবে কেন তোর আজি?
যা ফিরি, অজ্ঞান তুই, যা রে ফিরি ঘরে!’
পালিলাম আজ্ঞা সুখে: পাইলাম কালে
মাতৃভাষা-রূপ খনি, পূর্ণ মণিজালে-)

তাঁর এ অন্তর্জালা কি আমাদের ছুঁতে পারবে? তাই একজন বাঙালি হিন্দু ও মুসলমানকে বিশ্বমানব হতে হলে প্রথমেই তাকে কায়মনে বাঙালি হতে হবে। হিন্দুর জন্য সমস্যা নেই। সমস্যাটা পুঞ্জিভূত হয়েছে বাঙালি মুসলমানদের জন্য। বিগত সাতশ’ বছরেও বাঙালি মুসলমান কায়মনে বাঙালি হতে পারেনি। তাই একজন বিশ্বমানবের সন্ধান তাদের মধ্যে পাওয়া যায় না। একুশের মহান ইতিহাস রচনা করা সত্ত্বেও এ কথা সত্যি।

লেখক পরিচিতি :
শহিদুল ইসলাম, সাবেক অধ্যাপক, ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়; প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট, (২০০০-২০০৩), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
বর্তমান পরিচালক, বঙ্গবন্ধু ইন্সটিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার এ্যান্ড বাংলাদেশ স্টাডিজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ।

  • এ বিভাগে প্রকাশিত লেখার বিষয়, মতামত, মন্তব্য লেখকের একান্ত নিজস্ব। sylhettoday24.com-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে যার মিল আছে এমন সিদ্ধান্তে আসার কোন যৌক্তিকতা সর্বক্ষেত্রে নেই। লেখকের মতামত, বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে sylhettoday24.com আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় গ্রহণ করে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত