শাবুল আহমেদ

২৯ অক্টোবর, ২০১৮ ২২:০৭

শিশুনাট’র শিশুরা দেখিয়ে দিলো- আমরাই পারি

স্বাধীনতা এবং সমাজ উন্নয়নসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় পর্যায়ে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড-২০১৮ প্রদান করা হয়েছে।
সিলেট বিভাগের ৫ টি সংগঠনসহ দেশের ৩০টি সংগঠনকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
এরমধ্যে অন্যতম বিয়ানীবাজার পৌরশহরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ খাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু নাট্য সংগঠন "শিশু নাট"।

সাংস্কৃতিক বিপ্লবে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য  সেরা-৩০ এ মনোনীত হয়ে এ স্বীকৃতি অর্জন করে সংগঠনটি।  

রবিবার ঢাকার সাভারে শেখ হাসিনা যুব ইনস্টিটিউটে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের চূড়ান্ত পর্বের অনুষ্ঠানে এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

প্রাথমিক পর্যায় সারাদেশ থেকে ১০০ টি সংগঠনকে চূড়ান্ত পর্বের জন্য মনোনীত করা হয়।

রবিবার অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনে 'সেরা ৩০' এর ফলাফল ঘোষণা করা হয় তাদের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেয়া হয়।

অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রদান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

সেরা ৩০-এ মনোনীত হয়ে শিশু নাট'র পক্ষে সজীব ওয়াজেদ জয় এর কাছ থেকে সম্মাননা স্মারক ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন খাসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিশু নাট'র সমন্বয়ক তন্ময় পাল চৌধুরী।

এছাড়া বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার হিশেবে একটি ল্যাপটপ, একটি ট্যাব, সনদ ও একটি মোবাইল সেট প্রদান করা হয়।

অভিবাদন শিশু নাট। অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা তন্ময় পাল চৌধুরী এবং খাসা সপ্রাবি'র সকল শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের। সাফল্যের এ ধারা অব্যাহত থাকুক।

আমরা মনে করি- এ গৌরব কেবল শিশু নাটের নয় এটি গোটা বিয়ানীবাজারবাসীর। সাফল্যে অর্জনের মধ্যে দিয়ে শিশু নাট যে দৃষ্ঠান্ত দেখিয়েছে তা থেকে আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য অনেকখানি বেড়ে গেল। তাদের এ অর্জন  আমাদের আগামীর পথচলায় অনুপ্রেরণা ও অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।
১৪ এপ্রিল ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ বিদ্যালয়ভিত্তিক নাট্য সংগঠন হিশেবে বিয়ানীবাজারে প্রথম আত্মপ্রকাশ করে শিশু নাট্য সংগঠন "শিশু নাট"।

অল্প সময়ের মধ্যে তাদের এ বিশাল অর্জনে
ব্যক্তিগতভাবে আমি অভিভূত এবং মুগ্ধ হয়েছি। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের অভিনয় শৈলী নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় যার ফলশ্রুতিতে এ জনপদের জন্য তারা ব্যতিক্রমী সুনাম বয়ে এনেছে।

আত্মবিশ্বাস এবং সৃজনকর্ম দিয়ে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল আমরাই পারি।

শিশু নাট ইতোমধ্যে ফটকাবাজি, দীপুর গল্প, সেই ছেলেটি, ক্রান্তিকাল, অনুশোচনা, বেহুদা আলাপসহ বেশ কিছু নাটক মঞ্চায়ন করেছে। ক্ষুদে এ শিক্ষার্থীরা কেবল নাটকে অভিনয় নয় করেনি নাটক লেখালেখিতে যুক্ত রয়েছে। ৫ম শ্রেণির ছাত্রী হুমায়রা জান্নাত সদ্য "ভন্ড" নামক একটি নাটক লিখে এবং নির্দেশনা দিয়ে সাড়া জাগিয়েছে। এছাড়া শিশুশ্রম নিয়ে সে নতুন একটি নাটকের পাণ্ডুলিপি তৈরী করেছে।

শিক্ষার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চায় এতদ্বঞ্চলকে এগিয়ে নিতে প্রতিটি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় এরকম সাংস্কৃতিক সংগঠন গঠন একান্ত প্রয়োজন। আশা করি সকলের সহযোগিতা এবং আন্তরিকতায় এ কাজগুলো সম্পাদিত হবে ।

আসুন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাই। প্রত্যকেই হয়ে ওঠি একটি বাংলাদেশ। গড়ে তুলি সুখী-সুন্দর, দুর্নীতিমুক্ত সোনার বাংলা।

জয়তু ইয়াং বাংলা, জয় হোক মনন ও সৃজনের।  

লেখক : সাংবাদিক। সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ-বিয়ানীবাজার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত