বিনোদন ডেস্ক

৩১ মে, ২০১৬ ১৪:৪৫

শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে ‘প্রাক্তন’, অভিনেতারা জানালেন নিজের প্রাক্তনের গল্প

শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ‘প্রাক্তন’। গল্প নয়, ছবির অভিনেতারা জানালেন তাঁদের জীবনের প্রাক্তনদের কথা।

শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়

একদম ছোটবেলার একটা গল্প মনে পড়ছে। বরাহনগরে থাকি তখন। দেখতাম পাড়ার দাদারা সাতসকালে দুধের বোতল হাতে বেরিয়ে পড়ত। কেন, কী বৃত্তান্ত বুঝতে পারতাম না! একদিন আমিও ওদের দেখাদেখি দুধের বোতল নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। যেখানে ওরা দাঁড়াত সেখান দিয়ে ওই সময় অক্সিলিয়াম কনভেন্টের একটা স্কুল বাস যেত। বাসের শেষ সিটে বসা একজনকে দেখতে আমার যাতায়াতটাও নিয়মিত হয়ে গেল। হাতে দুধের বোতলটা থাকত অজুহাত হিসেবে। কোনওদিন কিন্তু কথোপকথন হয়নি। সাইকেল চালিয়ে বাসের পিছনে যাওয়া.. চোরা চাহনি...ওই পর্যন্তই। অনেকদিন পরে ফের যোগাযোগ হয়। ততদিনে আমি পরিচালক। পারিবারিক সূত্রে একটি অনুষ্ঠানে যাই। মেয়েটির এক আত্মীয়ের সঙ্গে কথা হয়। তারপর মেয়েটির সঙ্গেও দেখা হয়েছিল। এখন সে সংসারী। তার স্বামীর সঙ্গেও দেখা হল। সে হাসতে হাসতে বলল, ‘‘এবারে শুধু দুধের বোতলটাই নেই!’’
আরেকটা ঘটনাও মনে পড়ছে। সেটা অবশ্য পরিণত বয়সের। কলেজজীবনে একটা সম্পর্ক ছিল। যেটা আর পরিণতি পায়নি। আমি ক্রমশ থিয়েটার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ছিলাম। তারপর যোগাযোগের সুতোটা একেবারেই কেটে যায়। ‘অলীক সুখ’ নিয়ে বেঙ্গালুরুতে গিয়েছিলাম। ফেসবুকে যথারীতি আপডেট দিয়েছিলাম। মেয়েটি আমাকে ফেসবুকে ফলো করত। যদিও সেটা আমি জানতাম না। বেঙ্গালুরুতে লোকজনের সঙ্গে স্ক্রিনিং নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছি, তখনই মোবাইলে একটা ফোন আসে। ওপারের জন বলে, ‘চিনতে পারছিস’? জানি না কোথা থেকে নম্বর পেল! আমরা কলেজে পড়ার সময় তো আর মোবাইল ছিল না। মেয়েটি দেখা করতে চেয়েছিল। কিন্তু কাজের চাপে আমি আর পেরে উঠিনি। কিন্তু 
ওই ফোনটা সেদিন বেশ অপ্রত্যাশিতই ছিল!

 

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়

প্রাক্তনদের সঙ্গে দেখা হয়। আমার নিজস্ব একটা আদর্শ আছে। তুমি যদি আমার সঙ্গে ভালভাবে কথা বলো, আমিও বলব। এড়িয়ে গেলে, আমিও এড়িয়ে যাব। অস্বস্তিকর কোনও পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইব না। সম্পর্ক থাক বা না-থাক, ব্যক্তিগত শ্রদ্ধাটা থাকা উচিত।

 

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

প্রাক্তনদের সঙ্গে কখনও-সখনও দেখা হয় বইকী! কোনও বিয়েবাড়ি বা অনুষ্ঠানে। বাড়ির লোকেরা বলবে, আমার প্রাক্তনের সীমা-পরিসীমা নেই। আসলে তো তা নয়। যদিও তারা আর প্রাক্তন নেই। তারা অধুনাতন! কারও সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়া মানে তার বিষয়ে আমার একটা শ্রদ্ধাও থাকবে। অন্য আবেগ হয়তো চলে গিয়ে থাকতে পারে। কিন্তু তাকে অশ্রদ্ধা করার কোনও কারণ তো নেই। তাই দেখা হলে কুশল বিনিময় হয় বড়জোর।

 

নন্দিতা রায়

প্রাক্তন সকলের জীবনেই থাকে। তবে কোনও খারাপ লাগা নেই। ঝামেলা, অশান্তি ভাল লাগে না। মিল হয়নি, দু’জনে আলাদা রাস্তা বেছে নিয়েছি। দেখা হলে হেসে কথা বলব। ব্যস, ওই পর্যন্তই। কোনও সম্পর্কেই অশান্তির মাধ্যমে শেষ হওয়া উচিত নয়।

 

সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়

থাক না ওসব কথা। যে ছিল, তাকে নিয়ে স্মৃতির সবটাই ঝাপসা হতে বসেছে। আমার স্ত্রী কমলিনীই প্রায় প্রাক্তন হতে বসেছিল! প্রথম প্রথম ‘খুব ভাল বন্ধু’ ছিলাম। যা হয় আর কী! অথচ একসঙ্গে হাসছি-কাঁদছি। একদিন কমলিনী মুম্বই চলে গেল। প্রায় দু’বছর আমাদের চিঠিতে যোগাযোগ ছিল। এসটিডি’র খরচ কোথায় পাব? শেষমেশ রীতিমতো ট্যানট্রাম করে ওকে বললাম, কলকাতায় ফিরে আসতেই হবে। ও এল। এছাড়া আমার প্রাক্তন প্রেমিকা মাধুরী দীক্ষিত। ওর বর ডক্টর নেনে’কে হাতে পেলে না...! বাড়িতে এত পোস্টার ছিল, দিদি বলেছিল পানের দোকান। মা তো রীতিমতো স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমি শুয়ে আছি আর মাধুরী হাতে চা নিয়ে ঢুকছে!

 

 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত