বিনোদন ডেস্ক

০৫ আগস্ট, ২০১৬ ১৭:৫৪

আমরা গানের সঙ্গে রাজনীতি খোঁজার চেষ্টা করি না : শাফিন আহমেদ

ব্যান্ড দল মাইলস'র ভোকাল শাফিন আহমেদ বলেছেন, 'প্রতিবছর ভারত থেকে বাংলাদেশে অনেক শিল্পী আসেন। আমরা তখন খোঁজার চেষ্টা করি না, বাংলাদেশকে তাঁরা তাঁদের মনের মধ্যে কতটা লালন করেন! কীভাবে লালন করেন। আমরা গানের সঙ্গে রাজনীতি খোঁজার চেষ্টা করি না।'
 
ভারতীয় ব্যান্ড দল ফসিলস'র বাঁধায় সে দেশে গান গাইতে যেতে না পারার প্রতিক্রিয়ায় এমনটি বলেন শাফিন।
 
ভারতের স্বাধীনতা দিবসের আগে ১৩ আগস্ট কলকাতায় ‘আজাদী ফেস্টিভ্যাল’ নামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সেখানকার একটি এফএম রেডিও। ওই অনুষ্ঠানে গান গাইতে আমন্ত্রণ জানানো হয় বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড মাইলসকে। কিন্তু বাংলাদেশের মাইলস ব্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় ফসিলস ব্যান্ড ভারতবিদ্বেষী মন্তব্য করার অভিযোগ আনলে সেই কনসার্টে দুই দলেরই অংশগ্রহণ বাতিল হয়ে যায়।

এই ঘটনার সূত্রপাত প্রসঙ্গে শাফিন আহমেদ বলেন, খুব সম্ভবত গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-ভারত সেমিফাইনাল খেলাটা। সে সময় ফেসবুকে দুই দেশের ক্রিকেটভক্তদের মধ্যে আমরা একটু উত্তেজনা দেখেছি। উত্তেজনাপূর্ণ সেই খেলায় আমাদের ব্যান্ড সদস্যের ফেসবুকে ফসিলসের কেউ বাংলাদেশিদের ‘ইডিয়টস’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। এরপর আরও অনেকে এই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। সেখানে অত্যন্ত আপত্তিকর কিছু কথা ছিল।

ওটার সূত্র ধরে ফসিলস ব্যান্ডের রূপম ইসলাম বলেন, বাংলাদেশিদের মানুষ বলে গণ্য করা কিংবা তাঁদের বন্ধু হিসেবে রাখা মুশকিল। একপর্যায়ে তিনি বাংলাদেশকে ‘নব্য পাকিস্তান’ বলে অপমান করেন। তাতে উভয় পক্ষে কিছু মনোমালিন্য হয়। এত দিন পর সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সেটাকে টেনে আনা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং সেখানে মাইলসবিদ্বেষী মনোভাব তৈরি করা কিংবা মাইলসকে সরিয়ে রাখার অপচেষ্টা হিসেবেই দেখি। বাংলাদেশি হিসেবে দেশের বিপক্ষে যায়—এমন কোনো মন্তব্যের ব্যাপারে দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমরা মন্তব্য করতেই পারি। এটা আমাদের অধিকার। আর আমাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইল একান্ত নিজস্ব। এখানে কী লিখলাম বা না লিখলাম, তার ব্যাখ্যা কলকাতার কোনো ব্যান্ড বা রূপম ইসলামকে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। জুনিয়র একটা ব্যান্ড, যারা হোটেলের লবিতে দাঁড়িয়ে আমাদের হাতে তাদের সিডি তুলে দিয়েছে, তাদের সম্মানের জায়গাটা হঠাৎ কোথায় গেল! মনে হয়, বিষয়টা অন্য জায়গায়। তারা হয়তো নিজেদের অবস্থান নিয়ে যথেষ্ট নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

তিনি বলেন, ভারতে আমরা শেষ বাজিয়েছিলাম পাঁচ বছর আগে। সেটি ছিল দিল্লিতে সার্কের একটি অনুষ্ঠানে। তার আগে অবশ্য মাইলস নিয়মিত ভারতে বাজাত। হঠাৎ কমে যাওয়ার কারণটা মনে হয়েছে, কেউ কলকাঠি নেড়েছে। এত দিন পর যে আরেকটা অনুষ্ঠান হওয়ার সুযোগ ছিল, সেটাকে সরাসরি ‘হামলা’ করে বন্ধ করা হলো। এতে কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হলেন কলকাতায় মাইলসভক্তরা। আমাদের না যাওয়ার খবর শুনে, এ ধরনের অনেক লেখা ফেসবুকের মাধ্যমে ভক্তরা জানাচ্ছেন। তাঁরা লিখেছেন, ‘আমাদের দুঃখ, মাইলসের কনসার্ট দেখতে পেলাম না।’

শাফিন বলেন, তারপরও আমরা বাংলাদেশে রুপম ইসলমাকে স্বাগত জানাচ্ছি, স্বাগত জানাব। বাংলাদেশে প্রায় প্রতি মাসে ভারতের বহু শিল্পী গান করে যাচ্ছেন। আমাদের মন অনেক বড়। ঢাকার সাংস্কৃতিক অঙ্গনটাকে আমরা ক্রমশ বড় করছি, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। উচ্চাঙ্গসংগীতের সবচেয়ে বড় আয়োজন আমাদের দেশে হয়। পাঁচ দিনব্যাপী এই আয়োজন নিয়ে আমরাই গর্ব করতে পারি। প্রতিবছর এই অনুষ্ঠানে ভারতের উচ্চাঙ্গসংগীতের সাধকেরা আসেন। আমরা তো খোঁজার চেষ্টা করি না, বাংলাদেশকে তাঁরা তাঁদের মনের মধ্যে কতটা লালন করেন! কীভাবে লালন করেন। আমরা গানের সঙ্গে রাজনীতি খোঁজার চেষ্টা করি না।

সূত্র : প্রথম আলো

আপনার মন্তব্য

আলোচিত