বিনোদন ডেস্ক

০৪ নভেম্বর, ২০১৬ ০৬:৪৪

ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিন আজ

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের নব্বই তম জন্মদিন আজ। ১৯২৫ সালের আজকের এই দিনে তিনি পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশের) ঢাকা শহরের ঋষিকেশ দাস লেনে জন্ম গ্রহন করেন।

ঋত্বিক ঘটকের বাবার নাম সুরেশ চন্দ্র ঘটক, মা ইন্দুবালা দেবী। পরিবারের মধ্যে আগে থেকেই শিল্প-সাহিত্যের চর্চা ছিল। বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক একজন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হলেও কবিতা ও নাটক লিখতেন। তাঁর বড় ভাই ঐ সময়ের খ্যাতিমান এবং ব্যতিক্রমী লেখক মনীশ ঘটক ছিলেন ইংরেজির অধ্যাপক এবং সমাজকর্মী।

চিরকালের দুরন্ত ও পরিপাট্যহীন ঠোঁটকাটা ঋত্বিক মাত্র ৫১ বছরের জীবদ্দশায় ৮টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পেরেছিলেন। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, তথ্যচিত্র এবং প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন সবমিলিয়ে ১০টি। আরও অনেকগুলো কাহিনীচিত্র, তথ্যচিত্রের কাজে হাত দিয়েও শেষ করতে পারেননি। হাতে গোনা কয়েকটি চলচ্চিত্র দিয়েই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রকারদের কাতারে নিজের স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি। ঋত্বিক ঘটকের প্রথম চলচ্চিত্র ‘নাগরিক’। দুভাগ্যজনক হলেও সত্য, ১৯৫২ সালে নির্মিত এ সিনেমা তার জীবদ্দশায় মুক্তি পায়নি। প্রথম সিনেমা নির্মাণের পাঁচ বছর পর ১৯৫৭ সালে ঋত্বিক ঘটক নির্মাণ করেন ‘অযান্ত্রিক’। এটিই ঋত্বিকের মুক্তি পাওয়া প্রথম সিনেমা। সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চমকে যায় চলচ্চিত্র বোদ্ধা আর দর্শকেরা।

এরপর তিনি নির্মাণ করেন ‘মেঘে ঢাকা তারা’(১৯৬০) ‘কোমল গান্ধার’(১৯৬১) ও ‘সুবর্ণরেখা’(১৯৬৫)। ১৯৬৫ সালে সুবর্ণরেখা মুক্তি পাবার পর আট বছরের বিরতি নিয়ে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে এসে নির্মাণ করেন তার বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘তিতাস একটি নদীর নাম’। বাংলাদেশ- ভারতের যৌথ প্রযোজনায় সিনেমাটি নির্মিত হয়। অদ্বৈত মল্লবর্মণের ধ্রুপদ উপন্যাস থেকে নেওয়া এ সিনেমা মুক্তির পর পেয়েছিল ব্যাপক প্রশংসা। এরপর ১৯৭৪ সালে মুক্তি পায় ঋত্বিকের শেষ ছবি ‘যুক্তিতক্ক আর গপ্পো’। কাহিনীর ছলে তিনি নিজের কথা বলে গেছেন এ সিনেমাতে। ‘যুক্তিতক্ক আর গপ্পো’ সিনেমায় নিজের রাজনৈতিক মতবাদকেও দ্বিধাহীনভাবে প্রকাশ করেছেন এই স্বাধীনচেতা মানুষ। এরপরই ঋত্বিক ঘটক মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। প্রায় তিন বছর তিনি মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

মানসিক ভারসাম্য হারানো অবস্থাতেই এই কৃতি চলচ্চিত্রকার ১৯৭৬-এর ৬ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৫০ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন। কখনো পুরস্কারের আশা না করা এই বিখ্যাত পরিচালককে ১৯৬৯ সালে ভারত সরকার পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করেন।

১৯৭৫ সালে ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’ চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ কাহিনীর জন্য ভারতের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত