২৩ নভেম্বর, ২০১৯ ০১:৪৯
ইন্দোনেশিয়ার একটি অন্যতম প্রদেশ বালি। ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য অত্যন্ত প্রিয় একটি স্থান এটি। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের মানুষের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায় এ শহরে।
বালিতে স্থানীয় লোকজনের তুলনায় বিদেশিদেরই আধিক্য বেশি লক্ষ্য করা যায়। আর মূল শহরে বালির বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি দেখা মিলাই ভার। শহরজুড়ে কেবল হোটেল আর রেস্তোরাই। পর্যটনশিল্পের ওপর নির্ভর করে এই প্রদেশ দাঁড়িয়ে আছে।
প্রকৃতি দুহার ভরে সৌন্দর্য দিয়েছে এই শহরকে। বালি ও তার আশেপাশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপমালা নুসা পেনিদা, নুসা লেমবনগান ও নুসা সেনিনগান নিয়ে প্রদেশ গঠিত হয়েছে। এর রাজধানী দেনপাসার দ্বীপের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত। প্রদেশের অর্থনীতির প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে এই পর্যটন খাত থেকে। ক্ষুদ্র দ্বীপমালাগুলোও পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
প্রতি বছর প্রায় তিন মিলিয়ন পর্যটক বালিতে ঘুরতে আসেন। এর মধ্যে অস্ট্রেলীয় ও চীনাদের সংখ্যাই পাল্লা দিয়ে বেশি।
ভ্রমণ বিষয় আন্তর্জাতিক গ্রুপ ট্রিপএডভাইজার বালিকে পর্যটকদের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে পছন্দনীয় স্থানের সম্মানে ভূষিত করেছে।।
পূর্ব জাভার ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার দূরে বালি দ্বীপের অবস্থান। বালি প্রণালি দ্বারা বালি ও জাভা পৃথক হয়েছে। পূর্ব থেকে পশ্চিমে দ্বীপটি ১৫৩ কিলোমিটার ও উত্তর থেকে দক্ষিণে ১১২ কিলোমিটার। নুসা পেনিদা জেলা বাদে প্রশাসনিক ভাবে এর আয়তন ৫ হাজার ৭শ ৮০ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৭৫০ জন।
২০১৪ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বালির জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৪২ লক্ষ ২৫ হাজার। দ্বীপের অধিকাংশ লোকই সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সম্প্রদায়ের। প্রাচীন বালিতে পসুপ্ত, ভৈরব, শিব সিদ্ধান্ত, বৈষ্ণব, বৌদ্ধ, ব্রহ্মা, ঋষি, সরা ও গণপতি এ নয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের আবাস ছিল। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের নির্দিষ্ট দেবতার পূজোও দিতেন।
অনেক দৃষ্টিনন্দন মন্দিরের অবস্থান রয়েছে এই প্রদেশে। যেমন- উলুওয়াতু মন্দির, তানাহ লট মন্দির, লেম্পুয়াং মন্দির ইত্যাদি। প্রতিটি মন্দিরের সৌন্দর্যের মাত্রা ভিন্ন ভিন্ন।
বালিয় সংস্কৃতির পুরোটাই ভারতীয়, চীনাদের দ্বারা প্রভাবান্বিত এবং প্রথম শতক থেকে হিন্দু সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে।
বালি শহরের আরেকটা বিশেষত্ব না বললেই নয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এই শহরের বহুতল ভবন নেই বললেই চলে। সর্বোচ্চ ৫ তলা পর্যন্ত ভবন দেখা যায়, তাও অতি সামান্য। অধিকাংশ ভবনই তিনতলা বা চারতলা বিশিষ্ট। আর প্রতিটি ভবনেরই ছাদ দোচালা বা চৌচালা ধরনের। এই শহরের বিশেষত্বকে বিশেষভাবে ফুটিয়ে তুলেছে এ ভবনগুলো।
খ্রিস্ট-পূর্ব প্রায় দুই হাজার বছর পূর্বে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জলপথ দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে অস্ট্রোনেশিয়ান ব্যক্তিরা অভিবাসিত হয়ে এখানে বসবাস করছেন। সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত দিক দিয়ে বালিয়বাসী ইন্দোনেশীয় দ্বীপপুঞ্জ, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার ব্যক্তিদের সাথে সম্পৃক্ত।