সিলেটটুডে ডেস্ক

১২ জুন, ২০১৬ ১৩:৪৮

চুক্তি হয় নি, সমঝোতা হয়েছে : প্রতিমন্ত্রী

ইন্টারনেটে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়’ নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিকার পাওয়ার জন্য গুগল ও মাইক্রোসফটের সঙ্গেও সরকারের ‘সমঝোতা’ হয়েছে, তবে কোন ধরনের চুক্তি হয় নি বলে সংসদকে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে গুগলের এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার চুক্তি হয়নি।

রোববার (১২ জুন) সকালে দশম জাতীয় সংসদের একাদশতম অধিবেশনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজীর এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

প্রতিমন্ত্রী জানান, ফেসবুক, গুগল ও মাইক্রোসফটের সঙ্গে বিশদ আলোচনাপূর্বক সমঝোতা হয়েছে। তবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যারা তথ্য বিভ্রাট করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী শাস্তির বিধান রয়েছে।

দুই বিদেশি নাগরিক হত্যা ও পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলার ঘটনার পর জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের যোগাযোগের পথ বন্ধ করার কারণ দেখিয়ে গতবছর ১৮ নভেম্বর থেকে ২২ দিন বাংলাদেশে ফেসবুক দেখার সুযোগ বন্ধ করে রাখে সরকার।

এর আগে পরে বিভিন্ন সময়ে মাইক্রো ব্লগিং সাইট টুইটার এবং ইন্টারনেটে সহজে কথা বলার মাধ্যম স্কাইপ ও ইমো বাংলাদেশে বন্ধ রাখা হয় এই যুক্তিতে যে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরা পুলিশের নজরদারি এড়াতে এসব অ্যাপ ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করছে।

গত নভেম্বরে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুকের নানা ‘অপব্যবহার ও নেতিবাচক’ বিষয় তুলে ধরেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

এরপর চলতি বছর জানুয়ারিতে সিঙ্গাপুরে গিয়ে ফেসবুকের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান কার্যালয়ে বৈঠকও করেন তারা।

ওই সফরের পর দেশে ফিরে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, সাইবার নিরাপত্তা, নারীর প্রতি অবমাননাসহ বাংলাদেশের প্রচলিত ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ সাপেক্ষে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সরকারের অভিযোগ/অনুরোধ বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে।

এরপর গত এপ্রিলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তাদের ষান্মাষিক ‘গভার্নমেন্ট রিকোয়েস্ট রিপোর্ট’ প্রকাশ করলে দেখা যায়, তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ সরকারের করা অনুরোধে তারা প্রথমবারের মত সাড়া দিয়েছে।

গতবছর জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ১২টি অনুরোধের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ৩১ জন ব্যবহারকারীর তথ্য চাওয়া হয়েছিল ফেসবুকের কাছে। এর মধ্যে ১৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ তথ্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সরকারকে দিয়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়।

এর আগে ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত আড়াই বছরে মোট ৩৭ জন ব্যবহারকারীর তথ্য চেয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কোনো সাড়া পায়নি বাংলাদেশ সরকার।

রুস্তম আলী ফরাজীর আরেক প্রশ্নে তারানা হালিম বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে ফেসবুক, গুগল ও মাইক্রোসফট এর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের সদরদপ্তরসমূহের সহায়তায় বিটিআরসি ও ল’ এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও এ বিষয়ে জনসচেতনা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”

মোহাম্মদ ইলিয়াছের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের আগ পর্যন্ত সঠিকভাবে গ্রাহকের পরিচিতি নিশ্চিত করার কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা ছিল না। পরীক্ষামূলকভাবে নমুনা যাচাই করে দেখা যায় যে, দেশের অধিকাংশ গ্রাহকের পরিচিতি সঠিক নয়। তবে বর্তমান বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে গ্রাহকের পরিচিতি নিশ্চিতকরণ সম্ভব হচ্ছে, যা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজে সহায়তা করবে।

সংরক্ষিত আসনের সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে তারানা হালিম বলেন, “গুগল কর্তৃক ইউটিউবে নীতিমালা পরিপন্থি ভিডিও সরকারের অনুরোধে বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া শিশু পর্নোগ্রাফি রোধ ও এবং সাইবার নিরাপত্তায় মাইক্রোসফটের সাথেও সরকার কাজ করছে।”

দুইদিন সাপ্তাহিক ছুটির পর রোববার বেলা পৌনে ১১টায় ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত