সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

১২ আগস্ট, ২০১৬ ১৯:৩০

তথ্যনিরাপত্তায় বৈশ্বিক ব্যয় বাড়বে ৭.৯ শতাংশ

তথ্যনিরাপত্তায় ২০১৬ সালের ব্যয় আগের বছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়বে। বৈশ্বিকভাবে তথ্যনিরাপত্তা পণ্য এবং সেবা বাবদ ব্যয় এ বছর পৌঁছবে ৮ হাজার ১৬০ কোটি ডলারে। মার্কিন বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনারের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানানো হয়েছে। খবর ইটি ব্যুরো।

গার্টনারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কনসাল্টিং এবং আইটি আউটসোর্সিং তথ্যনিরাপত্তা ব্যয়ের বড় দুই খাত। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২০ সালের শেষ পর্যন্ত নিরাপত্তা যাচাইকরণ, আইটি আউটসোর্সিং এবং ডাটা চুরি রোধে সর্বোচ্চ ব্যয় পরিলক্ষিত হবে।

ইন্টারনেট মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেবাটি থেকে প্রাপ্ত সুযোগ-সুবিধা এবং এর বহুমুখী ব্যবহার উপযোগিতার ফলে প্রতিনিয়তই বাড়ছে গ্রাহক সংখ্যা। সংশ্লিষ্ট সেবার প্রসারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার।

বিশ্বনেতাদের পক্ষ থেকেও তথ্যপ্রযুক্তিকে দিনবদলের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি খাত কেন্দ্র করে গ্রাহকের গোপনীয়তা এবং তথ্যনিরাপত্তার বিষয়টি বর্তমানে আলোচিত ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইন্টারনেট এবং টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলোও গ্রাহক তথ্যের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে তথ্যনিরাপত্তা বাবদ ব্যয় বাড়ছে দ্রুত।

বৈশ্বিকভাবে প্রতিরোধী নিরাপত্তা বাবদ ব্যয়ে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। কারণ নিরাপত্তা সফটওয়্যার ব্যবসায়ীরা গ্রাহকদের নিয়মিত নিরাপত্তা পণ্য ক্রয়ের পরামর্শ দিচ্ছেন। যদিও তথ্য নিরাপত্তা এবং ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট (এসআইইএম) এবং সিকিউর ওয়েব গেটওয়ে (এসডব্লিজি) সলিউশন গ্রাহকদের নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্ত এবং এ ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে দ্রুত সাড়া দিচ্ছে। বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দ্রুত নিরাপত্তা দুর্বলতা শনাক্ত এবং কার্যকর সমাধানের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী চার বছরে এসডব্লিউজি বাজারে তথ্যনিরাপত্তা বাবদ ব্যয় বাড়বে ৫-১০ শতাংশ পর্যন্ত।

বিষয়টি ঘিরে গার্টনারের জ্যেষ্ঠ গবেষণা বিশ্লেষক এলিজাবেথ কিম বলেন, বিভিন্ন অর্গানাইজেশন এখন দ্রুত নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্ত এবং কার্যকর সমাধান পেতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কারণ প্রতিরোধীমূলক ব্যবস্থা দৃঢ় হলে নানা ম্যালওয়্যার আক্রমণ ঠেকানো ও ব্লক করা সম্ভব হয়। এতে করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি হওয়া রোধ করা সম্ভব। আমরা দৃঢ়ভাবে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্যনিরাপত্তা বাবদ ব্যয়ের ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নিরাপত্তা ব্যয় বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো কর্মীজনিত এবং দক্ষ কর্মীর ঘাটতি। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্ত এবং সে অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। ভবিষ্যতে আরো খারাপ সময় আসছে, যখন অভ্যন্তরীণ দক্ষতা এবং টুল ব্যবহারের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা ত্রুটিজনিত হুমকি শনাক্ত ও সমাধান করতে হবে। বর্তমানে কোনো প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে পরিচালিত বাইরের ও অভ্যন্তরীণ হামলাগুলো বেশ সুগঠিত।

গার্টনারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিরাপত্তা সফটওয়্যার, নিরাপদ ই-মেইল গেটওয়ে (এসইজি) এবং এন্ডপয়েন্ট সুরক্ষা প্লাটফর্মের (ইপিপি) জন্য নিরাপত্তা ব্যয় বৃদ্ধি এরই মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। চাহিদা বৃদ্ধি এবং ইন্টারনেটের নানা সেবা এড়িয়ে চলার বিকল্প না থাকায় গ্রাহকরা বাধ্য হয়েই নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যয় বৃদ্ধি করছে। বলা হচ্ছে, ২০১৮ সাল নাগাদ নিরাপত্তা সফটওয়্যারের বিক্রি বার্ষিক ২-৩ শতাংশ হারে বাড়বে।

বিশ্লেষকদের মতে, ক্লাউড সেবার প্রসার ঘটছে দ্রুত। এর পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হলে নিরাপত্তা সফটওয়্যার বাজারে এক ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ধারণা করা হচ্ছে, সফটওয়্যার নিরাপত্তা বাবদ ব্যয় ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত