আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৮ অক্টোবর, ২০২৩ ১৪:০১

এবার লেবানন থেকে ইসরায়েলে হামলা

ইসরায়েলে সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। জবাবে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলও। ইসরায়েলি সেনাদের দাবি, লেবাননের ওই এলাকা থেকে তাদের একটি সেনা স্থাপনা লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছিল। তারাও লেবাননে গোলাবর্ষণ করেছে। খবর আল জাজিরার।

ইসরায়েলি সেনাদের এক বিবৃতিতে বলা হয়, লেবাননের যে জায়গা থেকে গুলি চালানো হয়েছিল, সেখানে আঘাত শুরু করেছে ইসরায়েলি আর্টিলারি। এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বিবৃতিতে বলা হয়নি।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, তাদের একটি ড্রোন লেবাননের সীমান্তবর্তী মাউন্ট ডভ এলাকায় ‘একটি হিজবুল্লাহ অবকাঠামোয়’ আঘাত করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স প্ল্যাটফর্মে তারা এ কথা বলে।

নিরাপত্তা বাহিনীর তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, লেবাননের ভূখণ্ড থেকে উৎক্ষেপণ করা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ভোরে ইসরায়েল অধিকৃত শেবা ফার্মে ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে।

এক বিবৃতিতে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ইসরায়েলে সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলার দায় স্বীকার করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রাডার সাইট, জিবদিন ও রুওয়াইসাত আল-আলমে ব্যাপক আর্টিলারি শেল ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। আমরা অধিকৃত লেবানিজ শেবা ফার্ম এলাকায় তিনটি ইসরায়েলি স্থাপনায় হামলা করেছি।’

এর আগে গতকাল শনিবার আকস্মিকভাবে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণ করে এই গ্রুপ। গতকাল ভোর থেকে স্থল, জল ও আকাশপথে সমন্বিত হামলা করে তারা।

আল জাজিরার তথ্যমতে, হামাসের হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩০০ জন নিহত হয়েছে। হামাসের হামলার পর গাজায় পাল্টা বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। দেড় হাজারের বেশি আহত হয়েছে।

টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে বলা হয়েছে, বিপুলসংখ্যক সেনা জড়ো করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। বড় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সীমান্তের অন্তত ২২টি পয়েন্ট দিয়ে দক্ষিণ ইসরায়েলে ঢুকে পড়েন হামাসের যোদ্ধারা। গাজা সীমান্ত থেকে ১৫ মাইল দূরের শহরেও পৌঁছে যান তাঁরা। কিছু কিছু জায়গায় কয়েক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালিয়েছেন হামাস সদস্যরা। ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে রাতেও তাঁদের লড়াই চলছিল।

এ দিকে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যের সহিংসতার বিষয়ে আজ রোববার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ একটি জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে। স্থানীয় সময় বেলা ৩টায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে এক বিবৃতিতে বলা হয়।

বড় সংঘাত এড়াতে মধ্যপ্রাচ্যে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, ‘শুধু আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত এড়িয়ে শান্তি ফেরানো যেতে পারে।’

হামাসের এই হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে প্রতিরক্ষা সমর্থনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র অ্যাড্রিয়েন ওয়াটসন বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলের সরকার ও জনগণের সঙ্গে আছি। এই হামলায় ইসরায়েলিদের প্রাণ হারানোর জন্য সমবেদনা জানাচ্ছি।’

হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা জাচি হানেগবির সঙ্গে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা জেক সুলিভান।

ন্যাটোর মুখপাত্র ডিলান হোয়াইট বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে আছি। মুক্ত সমাজ গঠনে সন্ত্রাসবাদ প্রধান হুমকি। ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।’

ইসরায়েলে হামাসের এই হামলায় ফ্রান্স, জার্মানি ও ভারত নিন্দা জানিয়েছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত