সিলেটটুডে ডেস্ক

০৫ জুন, ২০১৬ ২০:৪৭

যুক্তরাষ্ট্রে পানি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

বিশ্বের প্রতিটি নদী বিশ্ব নাগরিকের । তাই যেখানেই নদীর সমস্যা সেখানেই বিশ্ব-নাগরিকের উৎকণ্ঠা। নদীরক্ষার প্রচেষ্টা এখন শুধু নদীতীরের বাসিন্দাদের দায়িত্ব নয়, পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকেই যেকোনো নদীর পাশে দাঁড়ানো যায়। একটি নদীর হারিয়ে যাওয়া শুধু একটি দেশের বা অঞ্চলের ক্ষতি নয়; পুরো বিশ্বকে ক্ষতির দায় নিতে হয়। তাই বাংলাদেশ সহ বিশ্বের পানি বিপর্যয় প্রতিরোধ ও নদীরক্ষার প্রচেষ্টা আরও শক্তিশালী করতে সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন। শনিবার ওয়াটারকিপার এলায়েন্স-এর পানি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে লন্ডন ওয়াটারকিপার ও ওয়াটারকিপার'স বাংলাদেশ-এর মধ্যে সহযোগিতামূলক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর কালে সংক্ষিপ্ত আনুষ্ঠানিকতায় এ কথা বলা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার উইলমিংটন নগরীতে পানি ও নদী বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়াটার কিপার এলায়েন্সের ৫ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন ১লা জুন শুরু হয়। সম্মেলনের চতুর্থ দিনে ওয়াটারকিপার'স বাংলাদেশ ও লন্ডন ওয়াটারকিপার যৌথভাবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের নদীরক্ষায় কাজ করতে সম্মত হয়। লন্ডন ওয়াটার কিপার-এর থিও থমাস এবং ওয়াটারকিপার'স বাংলাদেশ-এর সমন্বয়ক শরীফ জামিল এই যৌথসিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করেন।

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের দুই দেশের নদী রক্ষা ও সংরক্ষণে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে এই যৌথযাত্রার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সম্মেলনের মুল মঞ্চে এসময় ওয়াটারকিপার এলায়েন্সের প্রেসিডেন্ট রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র, নির্বাহী পরিচালক মার্ক ইয়াগী, আন্তর্জাতিক পরিচালক শ্যারন খান, সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আব্দুল করিম কিম ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল উপস্থিত ছিলেন। বিশ্বের প্রায় ৩৪টি দেশের ২৯০টি ওয়াটারকিপার, রিভারকিপার, বেকিপারের প্রতিনিধিরা এ সময় সম্মেলনস্থলে উপস্থিত ছিলেন।

যৌথযাত্রার ঘোষণা কালে ওয়াটারকিপার এলায়েন্সের প্রেসিডেন্ট রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র বলেন দূষিত পানি আমাদের সবার জীবনের জন্যে গুরুতর হুমকি। প্রতি বছর দূষিত পানির কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সী দেড় কোটি শিশু মৃত্যু বরণ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬ শতাংশ হ্রদ এবং ৪০ শতাংশ নদীর পানি দূষিত ও ব্যবহার অযোগ্য। তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের নদী ও পানি দূষণ মুক্ত রাখার প্রচেষ্টায় সার্বিক সহযোগিতার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

যৌথযাত্রার ঘোষণা কালে ওয়াটারকিপার'স বাংলাদেশ-এর সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশের দেশান্তরী প্রবাসীদের কোন না কোন নদীর সাথে সম্পর্ক রয়েছে। দেশের নদী ও প্রকৃতির দুর্দশা তাঁদেরকে স্পর্শ করে। তাঁদের কাছে জরুরী ভাবে দেশের প্রকৃতি ও পরিবেশের চিত্র তুলে ধরতে হবে। দেশের নদী রক্ষায় যুক্তরাজ্যে বসবাসকারীদের সম্পৃক্ত করতে 'লন্ডন ওয়াটার কিপার' কাজ করবে ।

লন্ডন ওয়াটারকিপার থিও থমাস বলেন, বাংলাদেশীরা যুক্তরাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ জনগোষ্ঠী । ফেলে আসা বাংলাদেশকে ভুলতে না পারলেও যুক্তরাজ্যের মূলধারায় প্রায় প্রতিটি কর্মকাণ্ডে তাঁরা অংশ নিচ্ছে। তাঁদেরকে যুক্তরাজ্যের নদীরক্ষায় সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের নদীরক্ষায় সশরীরে অংশ না নিলেও যুক্তরাজ্যের নদীরক্ষায় তাঁরা সরাসরি অংশগ্রহণ করবে। যুক্তরাজ্যে নদীরক্ষার কার্যক্রমে বাংলাদেশীদের সম্পৃক্ত করতে ওয়াটারকিপার'স বাংলাদেশ কাজ করবে।
লন্ডন ওয়াটারকিপার ও ওয়াটারকিপার'স বাংলাদেশ-এর মধ্যে সহযোগিতামূলক দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে আগামী বছর যুক্তরাজ্যে সিলেট বিভাগের নদ-নদী ও সুন্দরবন নিয়ে পৃথক দুইটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত