আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ১০:৪৩

আক্রমণ আর উপহাসের বিতর্কে হিলারির কাছে ধরাশায়ী ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থীদের মুখোমুখি প্রথম বিতর্কে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে দিয়েছেন ডেমোক্রাট দলীয় প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। এ বিতর্কে তারা দুজন পরস্পরের বিরুদ্ধে আক্রমণ আর তীর ছুঁড়ে দিয়েছেন। 

ডেমোক্রেট প্রার্থী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন প্রথম বির্তকে প্রতিদ্বন্দ্বীকে ঘায়েল করতে চেয়েছেন জাতিগত বিদ্বেষ, লিঙ্গ বৈষম‌্যমূলক আচরণ এবং কর খেলাপের মত অভিযোগ এনে।

অন‌্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী আবাসন ব‌্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রতিপক্ষের মন্ত্রীত্বের দিনগুলোর কাজের সমালোচনা করেছেন, প্রশ্ন তুলেছেন বাণিজ‌্য চুক্তির ক্ষেত্রে তার আন্তরিকতা নিয়ে।

স্থানীয় সময় সোমবার রাতে নিউ ইয়র্কের হেম্পস্টেডে হোফসট্রা বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রাম্প ও হিলারির মধ্যে ৯০ মিনিটের এই বিতর্কে সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন এনবিসি টিভির লেস্টর হল্ট।

ট্রাম্প আঙুল তোলেন হিলারির ইমেইল কেলেঙ্কারির দিকে। অভিযোগ করেন, হিলারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট ‘বিস্তৃত’ হয়েছে।

“যখন এটি ক্ষুদ্র একটি গোষ্ঠী ছিল তখন আপনি মন্ত্রী হন, আর এটি এখন ৩০টির বেশি দেশে বিস্তৃত, তখন আপনি একে থামাতে পারবেন বলে আমি মনে করি না।”

ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ইরাক যুদ্ধের বিরোধিতা করেন এবং ক্ষমতায় গেলে ইসলামিক স্টেটকে পরাজিত করতে ইরাকের সব তেল তুলে নেয়ার ঘোষণা দেন। উত্তর কোরিয়াকে থামাতে চীনের সাহায্য নেয়ারও আগ্রহ প্রকাশ করেন রিপাবলিকান প্রার্থী।

কয়েক সপ্তাহ আগে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হিলারি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের মত ‘শারিরীক সক্ষমতা’ রাখেন কী না- সে প্রশ্নও তোলেন এ ধনকুবের।

অন্যদিকে হিলারি তার বক্তৃতায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোর মধ্যে থাকা ‘বর্ণবাদ’ দমনে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকজন কৃষ্ণাঙ্গ পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন, আহতও হয়েছেন অনেকে। ‘সন্দেহভাজন মনে হওয়ায়’ পুলিশ এদের উপর গুলি করার কথা জানালেও, বেশিরভাগ সময় হতাহতদের কাছে কোন অস্ত্র ছিল না বলে মার্কিন গণমাধ্যমের খবর।

প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নয় বলে উভয় প্রার্থীই বিতর্কে একে অন্যের দিকে কাদা ছোড়েন। তাঁদের বিতর্কে কর্মসংস্থান, আয়কর, পররাষ্ট্রনীতি, সন্ত্রাসবাদ, বর্ণবাদ প্রভৃতি প্রসঙ্গ উঠে আসে।

হিলারি ও ট্রাম্প আরও দুটি বিতর্কে মিলিত হবেন। নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণে দুই প্রার্থী ইতিমধ্যে প্রায় দেড় বছর কাটিয়েছেন। তাঁরা অসংখ্য বিতর্ক ও নির্বাচনী সভায় অংশ নিয়েছেন। পত্রিকা-টিভিতে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এসব ছাপিয়ে দুজনের জন্যই মুখোমুখি বিতর্ক গুরুত্বপূর্ণ।

প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য হিলারি ও ট্রাম্প আজ কার্যত ভোটারদের সামনে ‘সাক্ষাৎকার’ দিলেন। তাঁদের এই বিতর্কের ভিত্তিতে ভোটাররা ঠিক করবেন, কে বেশি যোগ্য।

দুই প্রার্থীর মধ্যে বিতর্কের ওপর নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক ভোটারের সিদ্ধান্ত। তিন পর্বের বিতর্ক দেখেই দেশটির ভোটারদের প্রায় ৫০ শতাংশ সিদ্ধান্ত নেবেন, কাকে ভোট দেওয়া যায়।

চলতি বছরের ৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচনী জরিপগুলোতে দুই প্রার্থীর পক্ষে কাছাকাছি জনসমর্থন লক্ষ্য করা গেছে।

বিবিসির সর্বশেষ জরিপে হিলারির পক্ষে ৪৮ শতাংশ আর ট্রাম্পের পক্ষে ৪৬ শতাংশ সমর্থনের কথা বলা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত