সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

২১ নভেম্বর, ২০১৬ ১২:৩৭

ভারতের কানপুরে রেল দুর্ঘটনা, দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান অব্যাহত

ভারতের কানপুরে সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার পর দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চলছে । আর এ দুর্ঘটনার নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩৩ জনে ।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হতাহত ও বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের খোঁজে রোববার রাতভর বগিগুলোর মধ্যে তল্লাশি চালান উদ্ধারকর্মীরা। অনেক বগি দুমড়ে মুচড়ে যাওয়ায় এ কাজে তাদের মেটাল কাটার, টর্চ ও ক্রেনসহ নানা ভারীভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে হচ্ছে।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) রাত ৩টার দিকে কানপুর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে পুখরাইয়া এলাকায় ইন্দোর-পাটনা এক্সপ্রেসের ১৪টি বগি লাইনচ‌্যুত হয়ে পরস্পরের সঙ্গে ধাক্কা খায়।

দি হিন্দুর খবরে বলা হয়, সোমবার (২১ নভেম্বর) সকাল পর্যন্ত ১৩৩ জনের লাশ পাওয়া গেছে, আহত হয়েছেন দুই শতাধিক যাত্রী।

উত্তর প্রদেশ পুলিশের মহা পরিচালক জাবেদ আহমেদ জানান, নিহতদের মধ্যে ৮০ জনকে শনাক্ত করা গেছে, যাদের মধ্যে অন্তত ১৩ জন নারী ও শিশু।

এ দুর্ঘটনা যখন ঘটে, অধিকাংশ যাত্রী তখন গভীর ঘুমে। ইঞ্জিনের পেছনে থাকা দুটি স্লিপার কোচ পরস্পরের সঙ্গে প্রচণ্ড ধাক্কায় লোহার পিণ্ডের আকার নেয়। পরের দুটি কোট ছিটকে যায় দূরে ক্ষেতের মধ্যে। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরেকটি এসি কোচ।

এনডিটিভি জানিয়েছে, ইঞ্জিনের পেছনে থাকা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি বগির মধ্যে একটি প্রায় দুমড়েমুচড়ে একটির নিচে আরেকটির আটকে গেছে। ফলে ভেতরে ঢুকে এখনও তল্লাশি চালাতে পারছেন উদ্ধারকর্মীরা।

ভেতরে ঢোকা সম্ভব হলে লাশের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন উত্তর প্রদেশ পুলিশের পরিচালক দলজিৎ চৌধুরী।

২৪ ঘণ্টার বেশি সময় উদ্ধারকাজ চলার পর সোমবার সকালে ভারতের রেল মন্ত্রণালয় আহত যাত্রীদের নাম প্রকাশ করেছে। তাদের মধ্যে ৫৮ জনের অবস্থা ‘গুরুতর’।

ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার কারণ এখনও নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও রেল লাইনের ত্রুটির কারণে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে থাকতে পারে বলে রেল কর্মকর্তাদের ধারণা।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেয়াদোত্তীর্ণ এ বগিগুলো আগেও দুর্ঘটনায় পড়েছিল। আর রেল কর্মকর্তারা ট্রেনটিতে ১২০০ যাত্রী থাকার কথা বললেও আরও অন্তত ৫০০ যাত্রী বিনা টিকেটে ওই ট্রেনে ভ্রমণ করছিলেন বলে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এ দুর্ঘটনায় যারা বেঁচে গেছেন, নিজেদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা সংবাদমাধ্যমকে বর্ণনা করেছেন তারা।

ইয়াকুব আহমেদ নামে একজন হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, “ঘুম ভেঙে ভয়াবহ ঝাঁকুনি টের পাই। কর্কশ শব্দ করে ট্রেন থেমে যায়। আমি মানুষের ভিড়ের নিচে চাপা পড়ে যাই…সবাই সাহায্য চেয়ে চিৎকার করছিল।”

আপনার মন্তব্য

আলোচিত