সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

২০ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০৫

ধর্ষণ চেষ্টাকারীর উদ্দেশ্যে তরুণীর আবেগঘন চিঠি

একটি বদ্ধ কামরায় তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন এক ব্যক্তি। সেই ঘটনার প্রায় এক বছর পর সেই ব্যক্তিকেই আবেগঘন এক চিঠি লিখেছেন ওই তরুণী।

যুক্তরাজ্যের এই তরুণীর নাম সারা রিওবাক। বর্তমানে ইন্টার্নশিপ করছেন ফ্রান্সে। ফ্রান্সেরই একটি নাইটক্লাবে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়।

চিঠি সম্পর্কে ডেইলি মেইলকে সারা বলেন, গত প্রায় এক বছর ধরে যেই আবেগ-অনুভূতিকে তিনি এড়িয়ে চলেছেন, সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন চিঠিতে।

চিঠিতে সারা লিখেন, 'প্রিয় ব্যক্তি, আমি আপনাকে এই ডিসেম্বরের ঠান্ডা বিকেলে লিখছি, আমাকে ধর্ষণচেষ্টার প্রায় এক বছর পর। কারণ এত দিনে প্রথমবারের মতো কাগজ-কলম নিয়ে বসার মতো যথেষ্ট শক্তি অর্জন করেছি আমি। আমি আপনাকে লিখছি কারণ আজ বিকেলে আমাদের আবার দেখা হলো। তবে আশপাশের পরিবেশ আগের মতো ছিল না। আপনার হাত পিছমোড়া করে বাঁধা ছিল, সে দুটি আমার শরীরকে আঁকড়ে ধরার মতো অবস্থায় ছিল না।'

সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে তিনি লিখেছেন, 'আপনি বলেছেন যে আপনি যা করেছেন, তা খুব অল্প সময়ের জন্য ছিল। আপনি আমাকে ২০ মিনিটের জন্য একটি ঘরে বন্দি করেননি, আমার পোশাক খুলে ফেলার চেষ্টা করেননি। আপনি আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেননি। আপনি বলেছেন, মেঝেতে আমার শরীরের ওপর আপনার শরীর ছিল। কারণ অতিরিক্ত মদ্যপানের জন্য পা হড়কে মাটিতে পড়ে গিয়েছিলাম আমি। আপনি আমাকে জোর করে মাটিতে ফেলে আমার ওপর চেপে বসেছিলেন। এরপর আমি আপনাকে আমার দুই পায়ের মাঝখান থেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ফেলতে পেরেছিলাম। কারণ আপনি সিদ্ধান্ত নেননি যে আপনি থেমে যাবেন। আমি আপনাকে থামতে বাধ্য করেছিলাম। আপনার চোখগুলো ছিল কালো এবং আপনি সরাসরি আমার আত্মার ভেতর তাকিয়ে ছিলেন। এ সময় আপনি বললেন, আপনি আমাকে ছাড়তে চান না। আমি না বলেছিলাম, জানিয়েছিলাম যে আমি ট্যাম্পুন পরে আছি। এরপর আমি আপনাকে লাথি মারলাম, ভয়ে চিৎকার করলাম এবং কাঁদতে শুরু করলাম। আপনি আমাকে ধরে শরীরজুড়ে ব্যথা দিতে লাগলেন। অথচ আমি আপনাকে আমাকে ছোঁয়ার অধিকার দেইনি।'

এমন অন্যায়ের বিপক্ষে সোচ্চার হওয়ার কথা জানিয়ে সারা লিখেন, 'আদালতে আমি আমার মতো প্রতিটি নারী, যাঁরা আপনার মতো পুরুষদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন, তাঁদের পক্ষে কথা বলব। প্রতিটি ধর্ষিত, নির্যাতিত, আক্রান্ত, ইচ্ছের বিরুদ্ধে স্পর্শ হওয়া নারীর পক্ষে কথা বলব।'

চিঠির শেষ অংশে সারা লিখেছেন, 'আমি চাই এটা পুরুষরাও পড়ুক। যাতে একজন আক্রান্ত নারীর মতো তাঁরাও অনুভূতিটা বুঝতে পারে। আমি চাই এসবের পরিবর্তন হোক।'

আপনার মন্তব্য

আলোচিত