বিবিসি বাংলা

১৭ মার্চ, ২০১৭ ১৭:৩৪

‘ধর্ম অবমাননা’ বন্ধ করতে ফেসবুকের সহযোগিতা চায় পাকিস্তান

পাকিস্তান বলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাকিস্তানিদের পোস্ট করা "ধর্মীয় অবমাননামূলক বিষয়বস্তু" তদন্তের কাজে তারা ফেসবুকের সহায়তা চেয়েছে।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে সোশাল মিডিয়া সাইটগুলোতে এধরনের 'ব্লাসফেমাস' কনটেন্ট নিয়ে আপত্তির বিষয়টি পাকিস্তান যাতে মোকাবেলা করতে পারে তা দেখতে ফেসবুক পাকিস্তানে একটি দল পাঠাতে রাজি হয়েছে।

তবে পাকিস্তানে প্রতিনিধিদল পাঠানোর ব্যাপারে ফেসবুক এখনও পর্যন্ত কোন মন্তব্য করে নি।

পাকিস্তানে ধর্মীয় অবমাননা একটি খুবই স্পর্শকাতর একটি বিষয় যা অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।

ব্লাসফেমি আইনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে এবং সমালোচকরা বলেন পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের দমন করতে প্রায়ই এই আইনের অপব্যবহার করা হয়।

এ সপ্তাহে আরও আগের দিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াজ শরীফ সোশাল মিডিয়ায় ধর্মীয় অবমাননাকর বিষয়বস্তু প্রকাশ বন্ধে ব্যাপক অভিযান চালানোর পক্ষে মত ব্যক্ত করেন।

তার দপ্তরের আনুষ্ঠানিক টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি ব্লাসফেমিকে "ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ" বলে উল্লেখ করেন।

বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধরী নিসার পুনরাশ্বাস দেন যে বিষয়টি মোকাবেলায় পাকিস্তান অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি বলেন পাকিস্তান তার বার্তা পৌঁছে দিতে "প্রয়োজনীয় যে কোনোরকম ব্যবস্থা" নেবে।

তিনি জানান তার কর্মকর্তাদের তিনি প্রতিদিন আমেরিকায় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এবং সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

''যেসব ব্যক্তি এসব ধর্মীয় অবমাননাকর কনটেন্ট দিচ্ছে তাদের সম্পর্কে সবরকম তথ্য ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশাল মিডিয়া সেবাদানকারী সংস্থাগুলোকে আমাদের সঙ্গে শিয়ার করতে হবে," তাকে উদ্ধৃত করে খবর দিয়েছে ডন পত্রিকা।

তবে ঠিক কীধরনের ধর্মীয় অবমাননাকর কনটেন্ট অনলাইনে দেখা গেছে সে সম্পর্কে এ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে খুব একটা তথ্য জানানো হয়নি। তবে অতীতে নবীকে অবমাননা করে অথবা কোরানের সামলোচনা বা অপব্যাখ্যা করে নানাধরনের কনটেন্ট অনলাইনে এসেছে।

তবে সমালোচকরা বলছেন ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর দমনপীড়ন চালাতেই সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

পাঁচজন মুক্তমনা ব্লগার সম্প্রতি নিখোঁজ হয়ে যাবার পর তাদের বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ায় ধর্মীয় অবমাননাকর বিষয় পোস্ট করার অভিযোগ আনা হয়। গভীরভাবে রক্ষণশীল একটি দেশের জন্য এটা খুবই গুরুতর একটা অভিযোগ। এধরনের অভিযুক্তরা সহজেই জনরোষের শিকার হয়।

এপি বার্তা সংস্থা ফেসবুকের একটি বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে বলছে ফেসবুক সরকারের এই অনুরোধকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

"আমরা আমাদের সেবাদানের শর্ত এবং আইন মেনে অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করে থাকি। এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনুরোধ রক্ষা করতে হলে পারস্পরিক আইনী সহায়তা বিষয়ক চুক্তি বা আনুষ্ঠানিক অনুরোধের প্রয়োজন হবে," বলে বিবৃতিতে ফেসবুক জানাচ্ছে।

পাকিস্তানে আগেও অশ্লীল সাইট বা ইসলাম বিরোধী সাইট বন্ধ করার ঘটনা ঘটেছে এবং ২০১০ সালে নবীকে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য প্রকাশের জন্য পাকিস্তানের একটি আদালতের নির্দেশে ফেসবুক বন্ধও করে দেওয়া হয়েছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত