সিলেটটুডে আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৮ এপ্রিল, ২০১৭ ১০:৫৭

গল্পের ‘মোগলি’ থেকে বাস্তবের বন দুর্গা

দ্য জাঙ্গল বুক-এর মোগলির কথা নিশ্চয় মনে আছে? মানবসন্তান হয়েও জঙ্গলে পশুদের মধ্যে থেকে পশুদের মতোই আচরণ ছিল তার। মানুষও হয়েছিল জঙ্গলের পশুদের মধ্যেই। গল্পের মোগলি নয়, এ বার বাস্তবের মোগলির খোঁজ মিলল ভারতের উত্তরপ্রদেশের বরাইচে কাটরানিয়াঘাট জঙ্গলে। তবে এই মোগলি ছেলে নয়, একটি ১০ বছরের মেয়ে।

মাস দুয়েক আগে স্থানীয় গ্রামবাসীদের কয়েকজন কাটরানিয়াঘাট জঙ্গলে কাঠ কাটতে গিয়ে একটি দৃশ্য দেখে থমকে যান। একটি বছর দশেকের মেয়েকে ঘিরে রয়েছে এক দল হনুমান। সম্পূর্ণ নগ্ন, বড় বড় চুল, অনেকটা পশুর মতোই দেখতে লাগছিল মেয়েটিকে। সে নির্বিকারে ওই হনুমানের দলের সঙ্গে কথা বলছে! গভীর অরণ্যে এ রকম অবস্থায় একটি বাচ্চা মেয়েকে দেখে সবাই অবাক হয়ে যান। হনুমানগুলোর কাছ থেকে তারা মেয়েটাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই হনুমানগুলো তেড়ে আসে তাদের দিকে। কয়েকজনকে আক্রমণও করে বলে জানান গ্রামবাসীরা।  কয়েকবার মেয়েটিকে আনতে গিয়ে হনুমানের তাড়া খেয়ে ফিরে আসেন গ্রামবাসীরা

অবশেষে তারা স্থানীয় থানায় বিষয়টি জানান। পুলিশের একটি দল মেয়েটির খোঁজে বের হয়।কিন্তু তার খোঁজ না পেয়ে ফিরে আসে। একদিন পুলিশের একটি টহল গাড়ি কাটরানিয়াঘাট অরণ্যের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশকর্মীরা মেয়েটিকে হনুমানের দলের সঙ্গে দেখতে পায়। মেয়েটিকে হনুমানের দলের কাছ থেকে কোনও রকমে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে যায়।

এক পুলিশকর্মী জানান, মেয়েটিকে আনার সময় হনুমানের দল গাড়ির পেছন পেছন তাড়া করছিল। মেয়েটিকে পরে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

চিকিৎসক ডি কে সিং জানান, মেয়েটির গায়ে ও হাতে ক্ষত ছিল। মনে হচ্ছিল অনেক দিন খেতে পায়নি। হাসপাতালেও সে চার হাত-পায়ে হাঁটছিল। খেতে চাইছিল না। নখ, চুল বিশাল বড় হয়ে গিয়েছিল। মেয়েটি কথা বলে না, শুধু আওয়াজ করতে পারে।

প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, মেয়েটিকে কেউ জঙ্গলে ছেড়ে গিয়ে গিয়েছিল। অনেক দিন ধরে হনুমানের দলের সঙ্গে থাকতে থাকতে তার স্বভাবে পরিবর্তন আসে। মেয়েটিকে সুস্থ করে আপাতত হোমে পাঠানের চেষ্টা চলছে। খোঁজ চালানো হচ্ছে মেয়েটির পরিবারেরও। আর মেয়েটির নাম রাখা হয়েছে বন দুর্গা।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত