সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ জুলাই, ২০১৭ ১৪:১৫

ভারতে রাষ্ট্রপতি হিসেবে রামনাথ কোবিন্দের শপথ

ভারতের ১৪তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে রামনাথ কোবিন্দ শপথ নিয়েছেন। তিনি বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির স্থলাভিষিক্ত হলেন।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) স্থানীয় সময় বেলা ১২টা ১৫ মিনিটে সংসদের সেন্ট্রাল হলে দেশটির রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাকে শপথ পড়ান প্রধান বিচারপতি জে এস খেহার।

এসময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সদ্য সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীসহ রাজ্য সভার চেয়ারম্যান, লোক সভার স্পিকার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবর্গ ও প্রত্যেক সাংসদ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শপথের পরেই নতুন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে দেয়া হয় গান স্যালুট। গান স্যালুটের পরে সেন্ট্রাল হলে বক্তব্য রাখেন তিনি।

বিহার রাজ্যের সাবেক গভর্নর কোবিন্দ বিরোধীদলীয় প্রার্থী মীরা কুমারকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। বিজেপির এই প্রার্থী মোট ভোটের দুই-তৃতীয়াংশ পেয়েছেন। লোকসভা, রাজ্যসভাসহ ১১টি রাজ্যের ভোট গণনা শেষে বৃহস্পতিবার ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান। ওই দিন ফল ঘোষণার পর জয়ের প্রতিক্রিয়ায় কোবিন্দ বলেন, আমি বুঝতে পারছি এটি একটি মহান দায়িত্ব।

এদিকে, প্রথমবারের মতো দলীয় কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়ে জয় পেল ক্ষমতাসীন বিজেপি। কোবিন্দের এ জয়ের মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতা আরও সুসংহত হল।

এ নিয়ে ভারতে দু’জন দলিত সম্প্রদায় থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন। এর আগে কে আর নারায়ণন দলিত সম্প্রদায় থেকে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন।

এদিকে গতকাল ২৪ জুলাই বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মেয়াদ শেষে তাকে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানান নরেন্দ্র মোদি।

১৭ জুলাই সোমবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সাংসদ ও বিধায়ক মিলিয়ে মোট চার হাজার ৮৯৬ জন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এরপর ২০ জুলাই সকাল ১১টা থেকে ভোটগণনা শুরু হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে বিকাল ৫টায় ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা অনুপ মিশরা জানান, রামনাথ কোবিন্দ নিরাপদ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন। আমি তাকে ভারতের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে নাম ঘোষণা করছি। সাধারণ নির্বাচনের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফাত রয়েছে। সাধারণ নির্বাচনে একটি ভোটের মূল্য এক। কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদাতাদের ভোটের মূল্য এক জটিল পদ্ধতিতে নির্ধারিত হয়। লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যদের একেকজনের ভোটের মূল্য ৭০৮ এবং রাজ্য বিধানসভার সদস্যদের ভোটের মূল্য নির্ধারিত হয় সেই রাজ্যের বিধানসভার মোট আসন ও জনসংখ্যার নিরিখে।

নির্বাচনী কমিশনের দেয়া তথ্যানুসারে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন কোবিন্দ ব্যালটের হিসাবে মোট দুই হাজার ৯৩০ জন সাংসদ ও বিধায়কের ভোট পেয়েছেন। ভোটের মূল্য হিসাবে তিনি মোট চার লাখ ৭৯ হাজার ৫৮৫ ভোট পেয়েছেন, যা মোট ভোটের ৬৫. ৬৫ শতাংশ। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ প্রার্থী মীরা কুমার ব্যালটের হিসাবে মোট এক হাজার ৮৪৪ জন সাংসদ ও বিধায়কের ভোট পেয়েছেন। ভোটের মূল্যের হিসাবে তিনি পেয়েছেন দুই লাখ ৪০ হাজার ৫৯৪ ভোট, যা মোট ভোটের ৩৪.৩৫ শতাংশ। ফল ঘোষণার আগেই অবশ্য রাষ্ট্রপতি হিসেবে কোবিন্দের জয় নিশ্চিত বলে মনে করছিলেন অধিকাংশ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত