০৪ জুন, ২০১৮ ০১:১৬
শিখদের সঙ্গে আদিবাসীদের তর্ককে কেন্দ্র করে তিন দিন ধরে অশান্ত ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং। এতে পর্যটকরা শিলং ছাড়তে শুরু করেছেন। মেঘালয় জুড়ে স্থগিত রয়েছে ইন্টারনেট সেবা।
রোববার (৩ জুন) সান্ধ্য আইনে কিছুটা ছাড় দেওয়া হলেও উত্তেজনা এখনো রয়েছে বলে জানা যায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনাবাহিনী ফ্ল্যাগ মার্চ করতে শুরু করেছে। এতে শঙ্কিত অনেক পরিবার রয়েছেন ঘরছাড়া।
গত শুক্রবার (১ জুন) সামান্য তর্ককে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে।
জানা যায়, শিলংয়ে আদিবাসীরা প্রথমে চড়াও হন শিখদের ওপর। তারপর বাঙালি অন্যান্যদের ওপর। এরপরেই শুরু হয় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ।
শুরুতে শিখরা সংঘবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ালেও এক সময়ে সেই প্রতিরোধ ভেঙে পড়ে। খাসি সম্প্রদায় আক্রমণ চালায় স্থানীয় পাঞ্জাবি বস্তিতে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে দেখে প্রশাসন কারফিউ জারি করে। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। শনিবার রাতে ফের সংঘর্ষ বাঁধে। এতে প্রায় তিনশ পাঞ্জাবি শিখ নারী ঘর ছেড়ে নিরাপত্তারক্ষী বেষ্টিত স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বাঙালি মহল্লাতেও। পর্যটকেরা শিলং ছাড়তে বাধ্য হন। ফ্ল্যাগ মার্চ করে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
শিখদের আক্রান্ত হবার খবর শুনে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং কথা বলেন মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কানার্ড সাংমার সঙ্গে। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংও ফোন করে শিলংয়ের পরিস্থিতির খোঁজ নেন।
এ ঘটনায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১০১ কোরে জিওসি লে. জেনারেল ডি এস আহুজা ছুটে এসেছেন শিলংয়ে।
খাসি হিল জেলার শাসক পিটার এস ডিকাহার সাংবাদিকদের জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। তবে উত্তেজনা রয়েছে। আজ (রোববার) সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কিছু এলাকায় কারফিউ ছাড় দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
অন্যদিকে ইস্ট খাসি হিল পুলিশ সুপার এন আর মারাক জানান, উত্তেজিত জনতার ইটের আঘাতে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ও কর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। জনতাও জখম হয়েছে বেশ কয়েকজন। তবে এই গোলমালে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যাননি বলে প্রশাসন দাবি করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী কনার্ড সাংমার তরফে এক বিবৃতিতে জনগণকে গুজবে কান না দিতে আবেদন করা হয়েছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে মেঘালয়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পেট্রল বা ডিজেল বিক্রির ওপর জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
আপনার মন্তব্য