আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১১:৪৪

এনআরসি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের ঘোষণা মমতার

যতক্ষণ না ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএবি) ও নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বাতিল হচ্ছে, ততক্ষণ রাস্তায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে রাজপথে নেমেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) মিছিলে নেমে এ ঘোষণা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এ দিন দুপুরে কলকাতার রেড রোডে বি আর আম্বেদকরের মূর্তি থেকে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত বিশাল মিছিল বের করেন মমতা।

পরে সেখানে জমায়েতে কেন্দ্র সরকারের উদ্দেশে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কী করবে, আমার সরকার ফেলে দেবে? আমাকেও ফেলে দাও। এখানে এনআরসি বা সিএবি চালু করতে হলে আমার মৃতদেহের ওপর দিয়ে করতে হবে।

তিনিই যে প্রথম নোটবন্দি এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন, তা জানিয়ে মমতার বক্তব্য, ‘আস্তে আস্তে আরও সকলে বলবে।’

মিছিলে সামনে যেখানে মমতা ছিলেন, তার চারপাশে ছিল কঠোর নিরাপত্তাবলয়। সেখানে দেখা যায়নি কোনো নেতা-মন্ত্রীকে। বরং তার পাশে ছিলেন বাংলার কয়েকজন ক্রীড়াবিদ।

মিছিলে জনসমাগম সম্পর্কে মমতার মন্তব্য, ‘লাখ লাখ মানুষের মিছিল হয়েছে। শেষ মাথা এখনো দেখা যাচ্ছে না।’

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় গত কয়েক দিন ধরে রাজ্যজুড়ে যে অগ্মিগর্ভ-বিশৃঙ্খলা চলছে, তার নেপথ্যে বিজেপি রয়েছে বলে এ দিন সরাসরি অভিযোগ করেন মমতা।

তিনি স্পষ্টই বলেন, কেউ কেউ নিজের আখের গোছাতে টাকার বিনিময়ে বিজেপির কাছে মাথা নত করে আগুন জ্বালাচ্ছে। কারা করছে তার প্রমাণ আমার কাছে আছে।’

সেই মদতদাতাদের বিজেপির দালাল বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মন্তব্য, ‘বিজেপি হিন্দু-মুসলিমের গোলমাল বাধাতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই গোলমাল করছে। বিজেপি যত না খারাপ, বিজেপির দালালরা তার থেকেও খারাপ। এই দালালদের আমি ক্ষমা করি না।’

নিজে পথে নেমে কেন্দ্রবিরোধী আন্দোলন করলেও কোনোভাবে হিংসা যে তিনি বরদাস্ত করবেন না, তা জানিয়ে মমতার আবেদন, ‘উগ্র আন্দোলনে যাবেন না। কেউ ট্রেনে আগুন জ্বালাবেন না। পোস্ট অফিসে আগুন দেবেন না। এতে মানুষের অসুবিধা হয়।’ শীতের মরসুমে একের পর এক ট্রেন বন্ধ থাকায় মানুষের যে ভোগান্তি হচ্ছে, তারও সমালোচনা করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘দুটো ট্রেনে আগুন লেগেছে বলে সব ট্রেন বন্ধ করে দেবে?’

তিনি বলেন, কেন্দ্র আমার কাছে জানতে চাইছে, সিআইএসএফ, সিআরপিএফ, বিএসএফ চাই? আমি বলেছি, আমার পুলিশই যথেষ্ট। কাউকে চাই না। মানুষই পুলিশের সঙ্গে সামলাতে পারবে। গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলন হবে।

বিজেপিকে তার পাল্টা হুঁশিয়ারি, ‘নিজের বেলায় সাতখুন মাফ! আর যত কিছু বাংলার ওপর হামলা! দিল্লি আগে সামলা, পরে দেখিস বাংলা। বাংলা আমরা সামলে নেব।’

মানুষকে তিনি আশ্বস্ত করেন, আমরা সকলে এ দেশের নাগরিক। কারও দয়ায় এখানে আমরা থাকি না। স্বাধীন দেশের নাগরিক আমরা। না খেয়ে থাকব, কিন্তু কোনোভাবেই আত্মসমর্পণ করব না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত