সিলেটটুডে ডেস্ক

২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ২৩:৪৪

আসামি দাঁড়াতে পারেন না, তাই ফাঁসি স্থগিত

ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি একজন পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তি। হুইল চেয়ারে বসিয়ে তাঁকে আনা হলো। কোমরের নিচ থেকে অবশ হয়ে যাওয়ায় আসামি ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়াতে পারলেন না। আর এতেই তাঁর দণ্ড স্থগিত করলেন দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট।

পাকিস্তানের লাহোরের ফয়সালাবাদের একটি কারাগারে মঙ্গলবার ভোররাতে এমন ঘটনা ঘটেছে।

পাকিস্তানের কারাবিধি অনুযায়ী, আসামি হেঁটে মঞ্চে আসবেন; দাঁড়ানো অবস্থায় দড়ির ফাঁস লাগানো অংশ তাঁর গলায় পরাতে হবে। আসামি দাঁড়াতে সমর্থ না হলে তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা যাবে না।

কর্মকর্তারা বলেছেন, দণ্ড থেকে আপাতত বেঁচে যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম আবদুল বাসিত। নিজের প্রেমিকার চাচাকে হত্যার দায়ে ২০০৯ সালে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন এবং তাঁর ফাঁসির রায় হয়। ২০১০ সালে কারাবন্দী অবস্থায় তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হন। তাঁর কোমরের নিচের অংশ অবশ হয়ে যায়। গত ২২ জুলাই তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে আবেদন করলেও সুপ্রিম কোর্ট ও লাহোর হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে অনুমোদন দেয়।

ভোর রাতে ফয়সালাবাদের কারাগারে তাঁর ফাঁসির আয়োজন করা হয়। স্বজনেরা বাসিতের লাশ নেওয়ার জন্য কারাগারের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎ করেই স্বজনদের কাছে খবর আসে ফাঁসি স্থগিত করা হয়েছে।

আবদুল বাসিতের আইনজীবীর বরাত দিয়ে বিবিসি অনলাইনে বলা হয়েছে, কারাবিধি অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিকে ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়াতে হয়। কিন্তু বাসিত পক্ষাঘাতগ্রস্ত। তাঁর পায়ের অংশ অবশ থাকায় তিনি দাঁড়াতে পারেননি। তিনি হুইলচেয়ারে বসা ছিলেন। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট ফাঁসি স্থগিত করার নির্দেশ দেন।

পক্ষাঘাতগ্রস্ত বাসিতের ফাঁসি কার্যকর না করার দাবিতে পাকিস্তানের মানবাধিকার সংগঠনগুলো আগে থেকেই সোচ্চার ছিল। তাঁদের দাবি, বাসিতের ফাঁসি কার্যকর হলে তা হবে নিষ্ঠুর ও অমর্যাদাকর।
এদিকে, আইনজীবীরা বলেছেন, এই মৃত্যুদণ্ড পরে কার্যকর করা হবে কি না সে বিষয়ে এখনো সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রাষ্ট্রপতি ক্ষমা ঘোষণা করলে বাসিত বেঁচে যেতে পারেন।

পাকিস্তানে দীর্ঘদিন ফাঁসি কার্যকর করা বন্ধ ছিল। তবে পেশোয়ারের একটি বিদ্যালয়ে তালেবানের হামলায় শিশুসহ দেড় শতাধিক নিহতের ঘটনার পর সন্ত্রাসবাদ দমনে কঠোর অবস্থান নেয় পাকিস্তান। গত বছরের ডিসেম্বরে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা শুরু হয়। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত ২৩৯ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত