নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ নভেম্বর, ২০১৫ ২০:৩৮

মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতির কাছে যুদ্ধাপরাধীদের প্রাণভিক্ষা আবেদন নাকচ

সব ধরনের আইনি পর্যায় শেষে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত দুই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও আলী আহসান মুজাহিদ মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রপতির কাছে নিজের কৃতকর্মের জন্যে স্বীকারোক্তি প্রদান করতঃ প্রাণভিক্ষা চাওয়ার পর সেটা নাকচ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আবদুল হামিদ।

এর ফলে এ দুই শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় কার্যকর এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা।

এর আগে শনিবার সকালে দুই ম্যাজিস্ট্রেট কারাগারে প্রবেশ করলে তাদেরকে প্রাণভিক্ষার বিষয়টি জানানো হয়। এরপর বিষয়টি নিয়মমাফিক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় হয়ে পৌঁছায় বঙ্গভবনে। সেখানে রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদনে নারাজি জানান।

মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদন যেদিন (২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর) খারিজ হয়েছিল, সেদিনই তাঁর ফাঁসি কার্যকর হয়। দলটির আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করা হয় রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ার পাঁচ দিনের মাথায়, চলতি বছরের ১১ এপ্রিল।

এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের রায়ের কপি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যান ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তারা l

এর আগে বুধবার (১৮ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চে রায় পুনঃবিবেচনার আবেদন খারিজ করে দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আপিল বিভাগের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন।

বেঞ্চের অপর বিচারপতিরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

রিভিউ খারিজের পরের দিন বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে সাকা চৌধুরীর পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে মুজাহিদের পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি ওই একই দপ্তরে জমা পড়ে।

এরপর দুটি রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রারের দপ্তর হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পৌঁছায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের দপ্তরে। এক ঘণ্টা পর রায়ের অনুলিপি নিয়ে নাজিম উদ্দিন রোডে কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশ্য রওনা হন ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তারা। রাত নয়টায় তা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সাকা চৌধুরীর রিভিউ খারিজের রায় লিখেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। ১৩ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে একমত হয়েছেন বেঞ্চের অপর তিন বিচারপতি। আর মুজাহিদের রিভিউ খারিজের রায় লিখেছেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। ২৯ পৃষ্ঠার এই পূর্ণাঙ্গ রায়ে একমত হয়েছেন বেঞ্চের অন্য সদস্যরা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত