নিজস্ব প্রতিবেদক

০১ অক্টোবর, ২০২০ ০২:১০

সাবেক শিবির নেতার মৃত্যুতে শোকবার্তা দিয়ে প্রত্যাহার শিক্ষা উপমন্ত্রীর

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সাবেক শীর্ষ নেতা হাসান মাহমুদ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে পরে সেটা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

গত সোমবার জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহমদ বাবলুর ছোট ভাই হাসান মাহমুদ চৌধুরী (৬১) রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। গুলশান আজাদ মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে তাকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

তার মৃত্যুতে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাউজানের সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, জামায়াত ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগরের আমীর মুহাম্মদ শাহজাহান ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব শাবান মাহমুদসহ অনেকেই শোকপ্রকাশ করেন।

বিজ্ঞাপন

তবে হাসান মাহমুদ চৌধুরীর রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশের পর ফেসবুকে এক পোস্ট দিয়ে গণমাধ্যমে প্রেরিত শোকবার্তা প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

শিক্ষা উপমন্ত্রী তার ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, চট্টগ্রামের "কাশেম-নুর ফাউন্ডেশন" এর প্রধান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলুর ভাই, জনাব হাসান মাহমুদ চৌধুরীর মৃত্যুতে অনেকের মতো আমিও শোক প্রকাশ করেছি। তার সাথে আমার বিশেষ পরিচয় ছিলোনা। অস্ট্রেলিয়ায় চট্টগ্রাম সমিতির একটি অনুষ্ঠানে আমার সাথে প্রথম পরিচয়। যতদূর জানি এই ফাউন্ডেশন করোনাকালীন সময়ে দান অনুদান সহযোগিতা করেছে চট্টগ্রামে। তাই দানশীল ব্যক্তির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করাই স্বাভাবিক। তবে অতীতে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিবিরের রাজনীতি করেছেন বলে আমাকে জানানো হয়েছে, এবং এই অভিযোগও তোলা হয়েছে যে তিনি ছাত্রলীগ নেতা হত্যার মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, আমি সেই সময়ের রাজনীতির প্রত্যক্ষদর্শী ছিলাম না, তবে যারা ছিলেন তারা এই কথা বলেছেন, এবং যারা বলেছেন তারা ত্যাগী রাজনৈতিক কর্মীই ছিলেন। সুতরাং, ছাত্র শিবিরের খুনের আর বাংলাদেশ বিরোধী রাজনীতির সাথে জড়িত ব্যক্তির অপরাধ শুধুই কিছু টাকা দান করলেই মোচন হয়ে যাবেনা। অতীত রাজনৈতিক ও ফৌজদারি অপরাধের (যদি করে থাকে) অনুশোচনা তার ছিলো কিনা জানিনা, তবে সেই রাজনীতির প্রতি এবং এর ধারককে অবশ্যই ধিক্কার জানাই। বাংলাদেশ বিরোধী রাজনীতি, খুন-হত্যা-রাহাজানির রাজনীতি, স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনৈতিক শক্তিকে হত্যার করার রাজনীতি, কখনোই আর্থিক অনুদান দিলেই মোচন হয়ে যাবেনা, যেতে পারেনা।

তিনি আরও বলেন, শিবিরের খুনের রাজনীতি এবং এই রাজনীতিকে যেই ব্যক্তিই ধারণ করেছে, যদি তা সত্য হয়ে থাকে এবং, যদি অনুশোচনা না করে থাকেন তাহলে তার প্রতি সহানুভূতি এবং শোক প্রকাশের কোনো অবকাশ নাই।

উল্লেখ্য, ১৯৮৬ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিবিরের রক্তাক্ত অভ্যুত্থান ও দিনদুপুরে জাতীয় ছাত্র সমাজ নেতা হামিদের হাত কেটে নিয়ে উল্লাস করার নেতৃত্বে হাসান মাহমুদ চৌধুরী ছিলেন বলে অভিযোগ। তখন তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত