সিলেটটুডে ডেস্ক

০৬ অক্টোবর, ২০২০ ১১:১৪

নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন : ইউপি মেম্বারসহ গ্রেপ্তার আরও ২

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় এক নারীকে (৩৭) বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারসহ আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ওই মেম্বার হলেন, মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ (৪৮)। তিনি একলাশপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার।  গ্রেপ্তারকৃত অপরজন মামলার এজাহারভূক্ত ৫ নম্বর আসামি মো. সাজু (২১)। এ নিয়ে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হলো ৬ জন।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান শেখ গ্রেপ্তারের স্ত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পলাতক আসামি সাজুকে সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকার শাহবাগ এলাকা থেকে জেলা পুলিশের একটি দল গ্রেপ্তার করে। মোয়াজ্জেম হোসেনকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে জয় কৃষ্ণপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সুপার আরও বলেন, গ্রেপ্তার দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ মঙ্গলবার আদালতে হাজির করা হতে পারে। এছাড়া ঢাকায় গ্রেপ্তার মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন বাদলকে গত সোমবার রাতে বেগমগঞ্জ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর র‍্যাব। তাকেও আজ আদালতে হাজির করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ভুক্তভোগী গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন এবং নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে একদল যুবক। ঘটনার এক মাস পর রোববার দুপুরে নির্যাতনের ওই ভিডিও কেউ একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেন। মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে (ভাইরাল) পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশও তৎপর হয়ে ওঠে।

পুলিশ জানতে পারে, স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড বাদল এবং কর্মী রহিম, সুমনসহ পাঁচ-ছয়জন গৃহবধূর সঙ্গে এমন বর্বর আচরণ করেছে।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি হারুনুর রশীদ জানান, এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার নারী বাদী হয়ে রোববার রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন- বাদল, মো. রহিম, আবুল কালাম, ইস্রাফিল হোসেন, সাজু, সামছুদ্দিন সুমন, আবদুর রব, আরিফ ও রহমত উল্যা। তাদের সবার বাড়ি বেগমগঞ্জে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গৃহবধূর বিয়ে হয় বছর তিনেক আগে। স্বামী তাকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করতে থাকে। দীর্ঘদিন স্বামীর কোনো যোগাযোগ ছিল না। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে আসে। মাদক ব্যবসায়ী দেলোয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তার লোকজন নিয়ে রাত ১০টার দিকে গৃহবধূর ঘরে প্রবেশ করে 'অনৈতিক' কাজের অভিযোগ এনে তাকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তারা।

এক মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ফুটেজ দেখে অনেকেই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত