সিলেটটুডে ডেস্ক

১০ নভেম্বর, ২০১৫ ২২:১৮

অ্যামনেস্টিকে ক্ষমা চাইতে বলেছে বাংলাদেশ সরকার

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার করা উচিত এমন বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে ক্ষমা চাইতে বলেছে বাংলাদেশ সরকার।

এই সংক্রান্ত বিবৃতিটি প্রত্যাহার করতেও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

গত ২৭ অক্টোবর অ্যামনেস্টির ওই বিবৃতি আসার পর দেশব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সে পরিস্থিতিতে অ্যামনেস্টিকে শক্ত জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। বাংলাদেশের লন্ডন মিশনের মাধ্যমে চিঠিটি এরই মধ্যে অ্যামনেস্টির কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

ওই বিবৃতিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে নিয়ে অ্যামনেস্টির বক্তব্যকে ‘তীব্র আপত্তিকর’ বলা হয়েছে ঢাকা থেকে পাঠানো চিঠিতে।

যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আইনি লড়াইয়ের চূড়ান্ত নিষ্পত্তির আগে অ্যামনেস্টির বিবৃতিটি আসে।

বিএনপি ও জামায়াত নেতার বিচার ও আপিল প্রক্রিয়ায় ‘গুরুতর ত্রুটি’ রয়েছে দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, “একাত্তরে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিগুলোও গুরুতর অপরাধ করেছিল। তবে তাদের কারও বিরুদ্ধে তদন্ত হয়নি বা কাউকে বিচারের আওতায় আনা হয়নি।”

“স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিগুলোকে নিয়ে তীব্র আপত্তিকর বক্তব্যের জন্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কাছে অবিলম্বে বিবৃতি প্রত্যাহার এবং আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা দাবি করছে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকার,” বলা হয়েছে চিঠিতে।

বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরুদ্ধে ‘যারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচারণা চালাচ্ছে সেই তালিকায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অন্তর্ভুক্তি দুঃখজনক’ হিসেবে দেখা হচ্ছে বলে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ বিবৃতিতে (আগেরগুলোর মতোই) মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতার জায়গা থেকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যুদ্ধাপরাধের বিচারকে ‘রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলায় তাদের অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে বলে এতে বলা হয়েছে।

“এটা করে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক ও মন্তব্যকারীর জায়গা থেকে তারা সরে গেছে এবং আসামিপক্ষ ও তাদের দেশি-বিদেশি অপপ্রচারকারী, বিচারকে ব্যাহত করায় যাদের কায়েমি স্বার্থ আছে, তাদের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করা হয়েছে।”

অ্যামনেস্টির এই বিবৃতি নিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন,যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এই ‘গর্হিত কাজ’ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি।

এদিকে ৬ নভেম্বর (শুক্রবার) লন্ডনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রধান কার্যালয়ে বাংলা সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ করে বলেছে, তাদের মন্তব্য ভুলভাবে প্রচার করছে বাংলাদেশের সরকার ও গণমাধ্যম।

সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করে বলে, মুক্তিযুদ্ধকালে যারাই অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদেরই বিচার হওয়া উচিত। এমনকি যদি মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যেও এ অপরাধী থেকে থাকে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত