গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি

৩০ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৫:০০

পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে নৌকার কর্মী-সমর্থকদের হয়রানির অভিযোগ

গোলাপগঞ্জে ইউপি নির্বাচন

গত ২৬ ডিসেম্বর ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গোলাপগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে। উপজেলার ২ নং সদর ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান তমজ্জুল আলী তোতা মিয়া আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। কিন্তু জামাতের ঘরানার প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতীকের জাহাঙ্গীর আলম পরাজয়ের গ্লানি সইতে না পেরে প্রতিনিয়ত তার নিজ এলাকার নৌকার কর্মী ও সমর্থকদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়াসহ নানাভাবে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন জয়ী প্রার্থী নৌকার তমজ্জুল আলী তোতা মিয়া।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের আগেও স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাত নেতা জাহাঙ্গীরের এলাকা ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে আমার পোস্টার ও ব্যানার ছেড়া হয় এবং আমার কর্মী সমর্থকদের হুমকি ধমকি দেওয়া হয়। যা আমি গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশকে অবগত করি।  তাৎক্ষণিক পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে। নির্বাচনে হেরে এই প্রার্থী আমার লোকদের প্রতি হুমকি ধমকির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন।

এ ব্যাপারে সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও ৯নং ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত ইউপি সদস্য চুনু মিয়া জানান, আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী হিসেবে নৌকার প্রার্থী পক্ষে কাজ করেছি। ইউপি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই পরাজিত প্রার্থীর পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি নৌকার পক্ষে কাজ করায় ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য লিয়াকত আলী, আলিম উদ্দিন, বিরাই মিয়া, ওসমান আলী বাচ্চু মিয়া ও রাহিম উদ্দিন সহ আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকদের বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছে না স্বতন্ত্র প্রার্থী জামাত নেতা জাহাঙ্গীরের কর্মী দোলাল, জামাল, সাদ্দাম, নাজিম, কালা ও সাবু সহ তাদের সহযোগীরা। নৌকার কর্মী সমর্থকদের স্থানীয় কারখানা বাজারেও আসতে দেওয়া হচ্ছেনা। বাজারে আসলে তাদের ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সামাদ জিলু জানান, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হয়রানির অভিযোগ আমিও পেয়েছি। নির্বাচনে হারজিত থাকবে, কিন্তু সাধারণ কর্মীদের সাথে এমন আচরণ আসলেই দুঃখজনক। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ খুব শিগগিরই বসবো।

এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি লুৎফুর রহমান জানান, নির্বাচনের আগেও জামাত নেতা জাহাঙ্গীর আলম আমাদের নৌকার প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের হুমকি ধমকি দেওয়া হয়েছে। পোস্টার ব্যানারও ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এলাকার সম্প্রীতি যাতে নষ্ট না হয় এজন্য আমরা কোন মামলা মকদ্দমায় যাইনি বা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করিনি। আমরা থানা প্রশাসনকে মৌখিক ভাবে জানিয়েছি। এভাবে যদি প্রতিনিয়ত আমাদের নেতাকর্মীদের হুমকি ধমকি, ধাওয়া করা হয় তাহলে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে আমরা বসবো। নির্বাচন শেষ হয়ে গিয়েছে। এলাকায় আমরা সবাই ভাই ভাই হিসেবে সম্প্রীতি বজায় রেখে চলতে চাই।কিন্তু যদি তারপরও আমাদের নেতাকর্মীদের হয়রানি করা অব্যাহত থাকে তাহলে  আমরা আমাদের সংগঠন নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হবো।

কিন্তু এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তাদের কর্মী সমর্থক এই এলাকায় নাই। থাকলে না আমরা হয়রানি করবো। তারা চাচ্ছে এই এলাকায় একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে।

এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুনূর রশিদ চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে পুলিশ এই এলাকায় পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয়ভাবে ভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। নির্বাচন পরবর্তী যাতে কোন সহিংসতা না হয় এজন্য প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত