সিলেটটুডে ডেস্ক

২২ মার্চ, ২০২৪ ০০:৫৮

পাবনায় জন্ম নেওয়া এ কোন জাস্টিন ট্রুডো?

আসল জাস্টিন ট্রুডো, নকল জন্মসনদ

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সারাবিশ্বে পরিচিত নাম; বাংলাদেশেও। জাস্টিন ট্রুডোর জন্ম পাবনার সুজানগরে! শুনতে অবাক লাগলেও একটি জন্মসনদ সেই তথ্যই বলছে।

জাস্টিন ট্রুডোর নামে জেলার সুজানগর উপজেলার আহম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) থেকে জন্মসনদটি নিবন্ধন হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জন্মসনদের ছবি ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকাল পর্যন্ত সার্ভারে জন্মসনদটি ছিল। বিষয়টি জানাজানির পর দুপুর থেকে সার্ভারে জন্মসনদটি আর পাওয়া যায়নি।

সনদটিতে দেখা গেছে, ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি জন্মনিবন্ধন সনদটি ইস্যু করা হয়েছে। যেখানে নিবন্ধিত ব্যক্তি নাম হিসেবে রয়েছে জাস্টিন ট্রুডো, পিতা-পিয়েরে ট্রুডো, মাতা-মার্গারেট ট্রুডো। জন্ম তারিখ-২৫ ডিসেম্বর ১৯৭১। জন্মসনদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়া হয়েছে ১৯৭১৭৬১৮৩১৭০৩৫৫০৯।

জানা গেছে, এ জন্মসনদের প্রথম চারটি ডিজিট ছিল ২০০৪। সেটা পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে ১৯৭১। জন্মনিবন্ধনটির আসল মানুষের নাম আজিজুল। সেখানে দেওয়া হয়েছে জাস্টিন ট্রুডো। ১৯ মার্চ রাত ৯টা ৫১ মিনিটে পেমেন্ট হয়েছে। ৯টা ৫২ মিনিটে রিসিভ হয়েছে এবং রাত ৯টা ৫৪ মিনিটে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সেটি অনুমোদন (অ্যাপ্রুভ) করেছেন।

স্থানীয় সূত্র বলছে, ২০২৩ বছরের শেষের দিকে ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মিয়া মারা যান। এর পর থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রউফ।

ইউপি সচিব আওলাদ হাসান বলেন, ‘জন্মনিবন্ধন সার্ভারের ইউজার ন্যাম ও পাসওয়ার্ড আমার কাছে থাকলেও নিলয় কীভাবে পেল কিছুই বুঝতে পারছি না। সে হ্যাকার হিসেবেও দক্ষ বলে শুনেছি। সে যে কোনোভাবে ইউজার ন্যাম ও পাসওয়ার্ড হ্যাক করে এসব অনিয়ম করেছে। আমি এসব ঘটনার কিছুই জানি না। আমার কোনো দোষ নেই। এখন স্যাররা তদন্ত করলে সব জানা যাবে।’

আহম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য লজ্জাজনক বিষয়। কম্পিউটার অপারেটর নিলয় কীভাবে এই ভুয়া কাজটি করল, বলতে পারছি না। সেটাই এখন ভাবার বিষয় যে ১৯ মার্চ রাতে আবেদন করা হলো, আবার কিছুক্ষণের মধ্যে অ্যাপ্রুভ দেওয়া হলো, কীভাবে। ইউএনও স্যারও তো অ্যাপ্রুভ করেন নাই। এখন নিলয় হ্যাক করেও এসব করতে পারে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ দায় এড়াতে পারি না। এড়ানোর সুযোগ নেই। এখন দেখা যাক, তদন্তে কী হয়। এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’

সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুখময় সরকার বলেন, ‘আমার কাছ থেকে ওই জন্মসনদটির অ্যাপ্রুভ যায়নি। এখন কীভাবে হলো সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই মুহূর্তে বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না। তদন্ত শেষে জানানো যাবে।’

পাবনা জেলা প্রশাসক মুহা. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর বৃহস্পতিবার এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক সাইফুর রহমানকে ঘটনা তদন্ত করে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্তের পর দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত