সিলেটটুডে ডেস্ক

২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২২:০৪

ওটা ‘ফেইক নিউজ’, আমি এই ধরনের কথা বলিনি: ‘এই সময়ের’ সাক্ষাৎকার নিয়ে ফখরুল

‘নির্বাচনের ৩০টি আসনের প্রতিশ্রুতি না পেয়ে’ পিআর নিয়ে জামায়াতে ইসলামী চাপ সৃষ্টি করছে বলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের যে ভাষ্য প্রচার করেছে কলকাতার সংবাদমাধ্যম ‘এই সময়’, সেটিকে ‘ভুয়া’ বলছেন বিএনপি মহাসচিব।

ওই বক্তব্য নিয়ে আলোচনার মধ্যে নিউ ইয়র্কে সফররত মির্জা ফখরুল দেশের একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে বলেছেন, “ওই নিউজটা ফেইক নিউজ। ওরা (পত্রিকাটি) আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) দিয়ে এই মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর সংবাদ দিয়েছে।

“কোনো রাজনৈতিক নেতা এরকম অবান্তর কথা বলতে পারে? আপনি বলুন। এটা উদ্দেশ্যমূলক। কলকাতার ‘এই সময়ে’ আমি এই ধরনের কোনো কথা বলিনি।”

সম্প্রতি কলকাতার দৈনিক ‘এই সময়’ বিএনপি মহাসচিবের সাক্ষাৎকার ছেপেছে। সেখানে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের কাছে ‘৩০টি আসন’ চেয়েছিল জামায়াত। এর জবাবে ‘অনেক কম’ সংখ্যার কথা বলেছে বিএনপি, যা তাদের ‘মনঃপূত হয়নি’।

“জামায়াতকে আর আমরা মাথায় উঠতে দেব না। তারা যত বড় না শক্তি, আমরা অকারণে তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি।”

এর প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, “এ ধরনের সম্পূর্ণ অসত্য, অমর্যাদাকর ও প্রতিহিংসাপরায়ণ বক্তব্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মত প্রবীণ রাজনীতিবিদ দিয়েছেন তা বিশ্বাস করতে আমাদের কষ্ট হয়। এই বক্তব্যের সাথে সত্য ও শিষ্টাচারের কোনো মিল নেই।

“যদি এ বক্তব্য তার হয়ে থাকে, তবে বাধ্য হয়ে আমরা তার প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি এই বক্তব্য যদি তার হয়ে থাকে–তাহলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কার কাছে এই আসনগুলো দাবি করেছে–তার প্রমাণ জাতির কাছে উপস্থাপন করার জন্য দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে আহবান জানাচ্ছি।”

সাক্ষাৎকারে ফখরুল বলেন, “পিআর-টিআর সবই বিএনপির উপরে চাপ সৃষ্টির কৌশল। জামায়াত কিন্তু নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করছে।”

ফখরুলের কাছে ‘এই সময়’ এর প্রশ্ন ছিল, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে ভারতের প্রভাব ছাড়া নির্বাচন ও সরকার গঠন হবে। সত্যিই কি বাংলাদেশে ভারতের কোনো প্রভাব আর অবশিষ্ট নেই?

জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ভারত মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী। সেই সময়ে এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে ভারত। ভৌগোলিকভাবেও বাংলাদেশের তিন দিকে ভারত, একদিকে সাগর। সুতরাং ভারতের প্রভাব বাংলাদেশে থাকবেই। সমস্যা হল, বাংলাদেশ বলতে শুধু আওয়ামী লীগকে বুঝেছে ভারতের শাসকেরা।

“আওয়ামী লীগের ভাষ্য মেনে বিএনপি আর জামায়াতকে একই বন্ধনীতে ফেলেছে। জামায়াত আর বিএনপির রাজনীতি তো এক নয়। আমরা অসাম্প্রদায়িক, মধ্যপন্থী একটি গণতান্ত্রিক দল। মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত সংবিধান রক্ষায় আজও আমরা স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে লড়াই করছি। বামেরা আমাদের সঙ্গে রয়েছে।”

এর প্রতিবাদে জামায়াতের বিবৃতিতে গোলাম পরওয়ার বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি এবং সংগঠনের মর্যাদা সম্পর্কে তিনি যে তাচ্ছিল্যের ভাষায় কথা বলেছেন, তার বিচারের ভার জনগণের আদালতের উপর ছেড়ে দিলাম। প্রিয় জনগণের উপর আমাদের যথেষ্ট আস্থা রয়েছে।

“আমাদের কার্যক্রম দেশ ও জনগণের জন্য। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য। আমাদের ভরসার মূল জায়গা মহান রবের করুণা ও সাহায্য। ভবিষ্যতে এ ধরনের অসত্য ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।”

আপনার মন্তব্য

আলোচিত