সিলেটটুডে ডেস্ক

১৪ ফেব্রুয়ারি , ২০১৬ ১২:৪৭

মহাকর্ষ তরঙ্গ আবিষ্কার করা বিজ্ঞানী দলে বাংলাদেশের দীপঙ্কর

বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন শত বছর আগে তার অপেক্ষবাদ তত্ত্বে ধারণা দিয়েছিলেন- স্থান-কালকে বাঁকিয়ে দেয় যে তরঙ্গের কথা  সেই মহাকর্ষীয় তরঙ্গকে বাস্তবে শনাক্ত  করেছেন বিজ্ঞানীরা। এই খবর এখন পুরানো তবে নতুন খবর এই আবিষ্কারে অংশিদার বাংলাদেশও। কারণ  বিজ্ঞানীদের দলে যে রয়েছেন বাংলাদেশের দীপংকর তালুকদার।

গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে সংবাদ সম্মেলনে সেই ঘোষণা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এরপর থেকেই পুরো পৃথিবীতে আলোড়ন তুলেছে এই খবর। সেই গবেষক দলেরই একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র দীপঙ্কর তালুকদার (৩৯)।

দীপঙ্করের জন্ম ১৯৭৭ সালে, বরগুনায়। বাবা পরেশ তালুকদার একসময় ছিলেন বরগুনা পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান।

বরগুনা সরকারি কলেজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পদার্থবিজ্ঞানে মাস্টার্স শেষে (২০০২) মাস্টারমাইন্ড আর অক্সফোর্ড স্কুলে পড়িয়েছেন কিছুদিন। তারপর সরাসরি যুক্তরাজ্য থেকে পেলেন কমনওয়েলথ বৃত্তি, অ্যাডভান্সড ম্যাথমেটিকস পড়েছেন কেমব্রিজে (২০০৩)। এরপর কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডাক এল, তিনি উদ্বুদ্ধ হলেন ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির ডাকে। কারণ অধ্যাপক বললেন, ‘এখানে তুমি মহাকর্ষ তরঙ্গবিজ্ঞান নিয়ে পড়তে পারবে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের দুটি লাইগোর শনাক্তকারকে কাজ করার সুযোগ আমাদের আছে।’

লাইগো (এলআইজিও) মানে হলো লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল-ওয়েভ অবজারভেটরি। তিনি গেলেন ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে, স্নাতক পড়ার অংশ হিসেবে এক বছর কাটালেন জার্মানির হ্যানোভারের আলবার্ট আইনস্টাইন ইনস্টিটিউটে। সেখানে তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল, ‘আকাশের স্থানীয় অ্যাস্ট্রো ফিজিক্যাল উৎসসমূহ থেকে কীভাবে দীর্ঘকালীন মহাকর্ষ তরঙ্গ খোঁজা যায়’।

সেখান থেকে ফিরে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তৃতীয় মাস্টার্স। ২০১২ সালে তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করেন। একই সঙ্গে কলেজ অব সায়েন্সের আউটস্ট্যান্ডিং গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট পুরস্কার পান। পিএইচডি গবেষণার বিষয়ও ছিল, দুটি ব্ল্যাকহোল মিলিত হলে যে অশান্ত ব্ল্যাকহোল তৈরি হয়, সেখান থেকে আসা বৃত্তায়িত মহাকর্ষ তরঙ্গের সংকেত কীভাবে শনাক্ত করা যাবে।

২০০৭ থেকে দীপঙ্কর মহাকর্ষ তরঙ্গ গবেষণা শুরু করেন। লাইগো সায়েন্টিফিক কোলাবরেশনের সদস্য হন ২০০৮ সালে। এ মুহূর্তে তিনি অরিগন বিশ্ববিদ্যালয়ে লাইগো সায়েন্টিফিক কোলাবরেশনের হয়ে কাজ করছেন। যখন তিনি প্রথম সেখানে যোগ দেন, ওই কোলাবরেশনে তখন ৪০০ বিজ্ঞানী কাজ করতেন। এখন ১৫টা দেশের হাজার খানেক বিজ্ঞানী এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত। আর কোনো বাংলাদেশি আছেন কি না, তিনি জানেন না।

সূত্র: প্রথমআলো


আপনার মন্তব্য

আলোচিত