সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ মে, ২০১৬ ২৩:৫০

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে কোনো চুক্তি পাকিস্তানের সঙ্গে হয়নি

যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পাকিস্তানের বিবৃতিকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন আমরা আমাদের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব না- এমন কোনো চুক্তি পাকিস্তানের সঙ্গে হয়নি।

ইসলামাবাদের বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় বুধবার রাতে প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, “নিজামী পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছিল- সেটি বস্তুতপক্ষে স্বীকার করে নিল তারা।”

পাকিস্তান বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে পাকিস্তান ছাড়া বিশ্বে আর কারও কোনো মাথাব্যাথা নেই।”

মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধাপরাধে নিজ দেশে বিচার করা হবে শর্ত দিয়ে ১৯৫ জন সেনা সদস্যকে ফেরত নেয় পাকিস্তান।

একাত্তরের যুদ্ধাপরাধে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বুধবার প্রথম প্রহরে কার্যকরের পর দুপুরে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে প্রতিক্রিয়া জানায়, যাতে ‘পাকিস্তানের সংবিধান সমুন্নত রাখাই নিজামীর একমাত্র অপরাধ’ বলে দাবি করা হয়।

এর আগে একাত্তরে জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নেতা নিজামীর মৃত্যুদণ্ড পুর্নবিবেচনার আবেদন খারিজ হওয়ার পরও ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছিল পাকিস্তান।

এ ধরনের বিবৃতিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ অভিহিত করে ঢাকায় দেশটির হাই কমিশনার সুজা আলমকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি দেশটিকে তাদের আচরণ নিয়ে সতর্ক করে চিঠি দেয় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ইসলামী ছাত্র সংঘের পাকিস্তান প্রধান হিসেবে নিজামী যুদ্ধকালীন গণহত্যায় জড়িত কুখ্যাত আল-বদর বাহিনীর প্রধান নেতা ছিলেন। তার মৃত্যুদণ্ড পুর্নবিবেচনার আবেদন খারিজের পর পাকিস্তানের বিবৃতিতে ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আলোকে একাত্তরে ঘটনাবলী নিয়ে বাংলাদেশে কাছ থেকে ‘ভবিষ্যৎমুখী দৃষ্টিভঙ্গী’ আশা করার কথা বলা হয়েছিল।

আর ফাঁসি কার্যকরের পর দেওয়া বিবৃতিতে পাকিস্তানের দাবি, ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার একাত্তরের কর্মকাণ্ড ‘ক্ষমার দৃষ্টিতে বিবেচনায় করে বিচারের কাজে এগুবে না সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।’

এর আগে পাকিস্তানি হাই কমিশনার তলব করে তার হাতে ধরিয়ে দেওয়া সতর্ক বার্তায় ১৯৭৪ সালের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সম্পর্কে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, “সুপ্রতিবেশীসুলভ ও শান্তিপূর্ণ সহ অবস্থানের পরিবেশ তৈরিতে প্রয়োজনীয় উদ্দীপনার জন্য ওই চুক্তি করা হয়েছিল।

“যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার পরিকল্পনাকারী ও দালালরা দায়মুক্তি ভোগ করবে বা বিচার এড়িয়ে যাবে- চুক্তিটিতে এরকম কিছুর ইঙ্গিত কখনই ছিল না।”

বরং একাত্তরে চিহ্নিত পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বাধ্যবাধকতা থাকার পরও তাদের বিচারের আওতায় আনতে দেশটিতে ‘ব্যর্থ’ বলা হয় বাংলাদেশের প্রতিবাদপত্রে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত