সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০১:৫০

তবু নতুন নাটক লেখার প্রত্যয় সৈয়দ হকের

সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল  হক চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে লন্ডন থেকে দেশে ফিরেছেন।

৮০ পেরোনো এই লেখক ক্যান্সার থেকে সুস্থতার বিষয়ে চিকিৎসকদের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস পাননি বলে নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ জানিয়েছেন।

কবি জীবনের বাকি দিনগুলো দেশে কাটানোর জন্যই ফিরেছেন বলে এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাজ্য থেকে বৃহস্পতিবার যাত্রা করে শুক্রবার সকালে ঢাকা পৌঁছান সৈয়দ হক।

লন্ডন থেকে তাকে বিদায় জানানোর পর নাসির উদ্দীন ইউসুফ ফেইসবুকে লেখেন, “সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক লন্ডন এসেছিলেন ফুসফুসে কর্কট রোগের চিকিৎসার জন্য। প্রায় তিন মাস অসফল চিকিৎসার পর ফিরে যাচ্ছেন প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে।

“ডাক্তারদের মন খারাপ করা ঘোষণা… মাত্র ছ'মাস কবির জীবন। জীবনের এ অন্তিম কাল কবি কাটাতে চান নিজ বাসভূমে। জল কাদায় নিমগ্ন বাংলাদেশে, বন্ধু-স্বজন সান্নিধ্যে।”

বিষাদে ভরা বিদায়ের মুহূর্ত স্মরণ করে তিনি লিখেছেন, “বাংলা শিল্প সাহিত্য সাংস্কৃতিক ইতিহাসের প্রধানতম এ কবি নাট্যকার বিজয়ীর মতো ফিরে গেলেন মৃত্যু পরোয়ানা মাথায় নিয়ে। চোখে অশ্রু, মুখে নুতন নাটক লেখার প্রত্যয় নিয়ে ধীরে অপেক্ষমাণ বিমানে আরোহণ লক্ষ্যে অদৃশ্য হলেন প্রিয় হক ভাই। পেছনে আমরা মন খারাপ করে হিথ্রো বিমানবন্দরে পড়ে থাকলাম।

“কানে তখন বাজছে তার শেষ কথা ‘নূতন নাটক লিখছি নাম- ‘শেষ যোদ্ধা’। গাড়িতে ফেরার পথে মোবাইলে হক ভাইয়ের বার্তা- ‘তোমার সাথে নাটক করবো শেষ যোদ্ধা’। বাচ্চু তাড়াতাড়ি ফিরে এসো।”

চিকিৎসার জন্য গত এপ্রিলে যুক্তরাজ্যে যান সৈয়দ শামসুল হক।

সে সময় কবি অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেছিলেন, ফুসফুসের জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে সৈয়দ হক গুরুতর অসুস্থ ছিলেন।

লন্ডনের রয়্যাল মার্সডেন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন সৈয়দ হক।

লন্ডনে অবস্থানকালে ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সেখানে এক স্মরণসভায় অংশ নিয়েছিলেন এই লেখক।

কবিতা, নাটক, গল্প-উপন্যাসসহ সাহিত্যের সব শাখায় বিচরণকারী সৈয়দ হক ১৯৩৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাওয়া এই সাহিত্যিকের হাত দিয়ে ‘খেলারাম খেলে যা’, ‘নীল দংশন’, ‘মৃগয়া’, ‘সীমানা ছাড়িয়ে’, ‘আয়না বিবির পালা’সহ বহু পাঠকপ্রিয় বই এসেছে।

তার লেখা নাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ ও ‘নুরুল দীনের সারাজীবন’ বাংলাদেশের মঞ্চনাটকের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে আছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত