সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ২০:২৪

কারাগারে আইজি প্রিজন্স, আজ রাতেই ফাঁসি!

বিকলেই কারাগারে পৌঁছেছে ফাঁসির নির্বাহী আদেশ। স্বজনরাও দেখা করে এসেছেন। এরমধ্যে সন্ধ্যায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে প্রবেশ করেছেন মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন। ফলে আজ (শনিবার) রাতেই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামায়াত নেতা মীর কাসেমের দন্ড কার্যকর হতে পারে এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

যদিও ফাঁসি কবে বা কখন হবে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কেউ এখন পর্যন্ত কিছু জানাননি।

এরই মধ্যে কাশিমপুর কারাগারের আশপাশের এলাকাকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। মানবতাবিরোধী মামলায় এর আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসি কার্যকর করার ধরনের সঙ্গেও সরকারের আজকের নেওয়া প্রস্তুতির বেশ মিল পাওয়া যাচ্ছে।

মীর কাসেম আলীর ফাঁসির নির্বাহী আদেশ শনিবার বিকাল ৪-৫০ মিনিটে কাশিমপুর কারাগারে এসে পৌঁছে।

এদিকে, গত বুধবারের পর শনিবার বিকেলে আবারও মীর কাসেমের সাথে কারাগারে দেখা করে আসেন তার স্বজনরা। পরিবারের ৪৭ জন সদস্য কাসেমের সাথে দেখা করেন। এটাই শেষ দেখা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শনিবার সকালে মীর কাসেম আলীর পরিবারকে সাক্ষাতের জন্য খবর দেওয়ার পর থেকেই কারাগারের আশেপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের আশপাশেও নিরাপত্তা বেষ্টনী বসায় কারা কর্তৃপক্ষ ও জেলা পুলিশ। বিকালে আরও অতিরিক্ত ৪ প্লাটুন বিজিবি কারাগারের চারপাশে মোতায়েন করা হয়েছে।

কারা সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে কাশিমপুরের দুইটি কারাগারের ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক বলেন, সরকারের আদেশ পেলে যে কোনও একটি মঞ্চে মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করার ব্যাপারে তারা প্রস্তুত। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে তাদের।

ফাঁসি কার্যকরের সময় জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বিকালে বলেন, “দেখেন, অপেক্ষা করেন।”

জামায়াতের মজলিসে শুরা সদস‌্য মীর কাসেমকে একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ২০১৪ সালে মৃত‌্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব‌্যুনাল। চলতি বছর মার্চে আপিল বিভাগেও সেই রায় বহাল থাকায় তিনি রিভিউ আবেদন করেন।

আপিল বিভাগ গত মঙ্গলবার রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিলে কাসেমের মামলার সব বিচারিক প্রক্রিয়ার পরিসমাপ্তি ঘটে।

মীর কাসেমের প্রাণ বাঁচানোর শেষ সুযোগ ছিল কৃতকর্মের জন‌্য অনুশোচনা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়া। তিনি সেই সুযোগ নেবেন না বলে শুক্রবার জানিয়ে দিলে শুরু হয় সরকারের নির্বাহী আদেশের অপেক্ষা।

ফাঁসির মঞ্চ ‘প্রস্তুত’

জেলার নাশির আহমদ জানান, মীর কাসেম আলীকে রাখা হয়েছে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর ৪০ নম্বর কনডেম সেলে। কারাগারের চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। তাকে স্বাভাবিক খাবার দেওয়া হচ্ছে।

কারাগারের এক কর্মকর্তা শুক্রবারই জানিয়েছিলেন, ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি তারা নিয়েছেন। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের দক্ষিণ পূর্ব কোণে ফাঁসির মঞ্চটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। মোম মাখানো দড়িতে আনুমানিক ওজনের বালির বস্তা বেঁধে প্রাথমিক মহড়াও দেওয়া হয়েছে।

জল্লাদ শাজাহানের নেতৃত্বে চারজন জল্লাদকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও ওই কর্মকর্তা জানান।

এই জল্লাদ দল এর আগে যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী, কাদের মোল্লা, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর করেছিল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত