অনলাইন ডেস্ক

১২ ডিসেম্বর, ২০১৬ ১৮:১৪

গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের ঘরে প্রথম আগুন দেয় পুলিশ! (ভিডিও)

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের ঘরে পুলিশই প্রথম আগুন দেয়। রোবার আল জাজিরা টেলিভিশনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের ভিডিও ফুটেজে সাওতালদের ঘরে পুলিশ সদস্যদেই সর্বপ্রথম আগুন লাগাতে দেখা যায়।

গত ৬ নভেম্বর রংপুর চিনিকলের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এতে তিন সাঁওতাল মারা যান। গুলিবিদ্ধ হন আরও চারজন। সাঁওতালদের ছোড়া তীরে আহত হন ৯ পুলিশ।

আল জাজিরার ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে সাওতাল পল্লীর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। এরপর একটি ঘরের সামনে যাওয়ার পর পুলিশের এক সদস্য দেয়াশলাই জাতীয় কিছু একটা দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন সাঁওতালদের কুঁড়েঘরে। এরপর অন্যরা এ আগুন ছড়িয়ে দেয় অন্যান্য ঘরে। মূহুর্তের ছড়িয়ে পড়ে দাবানল। এজসময় কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে সাঁওতালদের ঘরে লাথি দিতেও দেখা যায়।

ওইদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে সাঁওতালদের বসতি উচ্ছেদ করে। চিনিকল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই জমি তাদের, সাঁওতালরা তা দখল করেছে। অপরদিকে, সাঁওতালদের দাবিা, তাদের জমিই দখল করেছে চিনিকল কর্তৃপক্ষ।

তবে পুলিশের আগুন লাগানোর কথা অস্বীকার করে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত সরকার বলেন, সেদিন পুলিশের পক্ষ থেকে আগুন নেভোনোর জন্য দমকল বাহিনীকে খবর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা আসার আগেই সব পুড়ে যায়।

গাইবান্ধার পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম বলছিলেন, পুলিশ বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়নি। এরপরও তারা ভিডিওটি খতিয়ে দেখবেন।

তিনি বলছিলেন, "আগুন লাগার খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়েছে। আগুনের পাশে হয়তো পুলিশকে দেখা যেতে পারে। কারণ পুলিশ আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছে। এবং পুলিশ দমকল বাহিনীকে ডেকেছিল। ''

''দমকল বাহিনীও সেখানে গিয়েছিল। ততক্ষণে হয়তো ছোট ছোট কিছু ঘর পুড়ে গেছে। ফলে পুলিশের আগুন লাগানোর বিষয় সঠিক নয়। এরপরও ভিডিওটি খতিয়ে দেখা হবে। "

সংঘর্ষের ঘটনায় গোবিন্দগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক কল্যাণ চক্রবর্তী বাদী হয়ে ৬ নভেম্বরের রাতেই ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে সাড়ে ৩০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এ পর্যন্ত পুলিশ চারজন সাঁওতালকে গ্রেফতার করেছে। তারা জামিনে এখন মুক্ত আছেন।

অপরদিকে, হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুট ও উচ্ছেদ ঘটনায় ১৬ নভেম্বর স্বপন মুরমু নামে এক আদিবাসী বাদী হয়ে ৬০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখিয়ে সাঁওতালদের পক্ষে মামলা করেন। এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে সাঁওতালদের দাবি, তারা স্বপন নামে কাউকে চেনে না।

এছাড়া ২৬ নভেম্বর দুপুরে সাঁওতালদের পক্ষে ক্ষতিগ্রস্থ থোমাস হেমরম বাদী হয়ে স্থানীয় এমপি, ইউএনও ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৫০০-৬০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। এটি এখনও তদন্তাধীন আছে।

ভিডিও : গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল পল্লীতে অগ্নিসংযোগ

আপনার মন্তব্য

আলোচিত