সিলেটটুডে ডেস্ক

০৪ জুন, ২০১৭ ০০:২৩

ইউনূসের জন্য হিলারির ‘চাপ’ তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট

বাংলাদেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে তদন্ত আটকাতে হিলারি ক্লিনটন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদের প্রভাব খাটিয়েছিলেন কি না, তার তদন্ত শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ সংক্রান্ত সিনেট কমিটি।
 
সম্প্রতি এই কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর চাক গ্র্যাসলি বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের কাছে এ বিষয়ে তথ্য চেয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন।
 
চিঠির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে সম্পদের হিসাব চাওয়ার হুমকি দেওয়া বিষয়ক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনও যুক্ত করে দিয়েছেন। জয় বলে আসছেন, তিনি বৈধভাবে ১৭ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে থেকে এলেও কখনও কোনো সমস্যার মুখে পড়েননি। কিন্তু ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরানোর পর ওই সময় পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ এনে তদন্ত শুরুর হুমকি দিয়েছিলেন।
 
গ্রামীণ ব্যাংক থেকে অপসারণের পর ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে তদন্ত আটকাতে হিলারি ক্লিনটন ও তার সহযোগীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে নানাভাবে চাপ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সিনেটর গ্র্যাসলির ওয়েবসাইটে গত বৃহস্পতিবার ওই চিঠি পোস্ট করা হয়েছে। এতে বলা হয়, 'সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের কার্যক্রমে যুক্তিসঙ্গতভাবেই এমন সন্দেহ দেখা দিয়েছে যে, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট আইন ভঙ্গ করেছেন এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের সততার বিষয়ে জনগণের আস্থাকে ক্ষুণ্ন করেছেন।' ব্যক্তিগত বা পারিবারিকভাবে আর্থিক স্বার্থসংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন কোনো বিষয়ে সরকারের নির্বাহী শাখার কর্মীদের যুক্ত হওয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আইনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সিনেটর গ্র্যাসলি ড. ইউনূসকে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী এবং ক্লিনটন গ্গ্নোবাল ইনিশিয়েটিভ ও ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের দাতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
 
চিঠিতে বলা হয়, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধে হিলারি ক্লিনটনের সহযোগীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সজীব ওয়াজেদ জয়ের ব্যাংক হিসাব নিরীক্ষার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। সিনেটর গ্র্যাসলি বলেন, 'ফাঁস হওয়া ই-মেইল থেকে দেখা যায়, গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে ড. ইউনূসকে সরানোর কার্যক্রম হিলারি ক্লিনটন ও তার পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা এবং ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের কর্মীরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। ওই সময় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধে চাপ প্রয়োগ করতে ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ চেয়েছিলেন।'
 
চিঠিতে আরও বলা হয়, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ওই তদন্ত বন্ধে মায়ের ওপর প্রভাব খাটাতে তাকে বেশ কয়েকবার চাপ দেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা। এমনকি তা করতে ব্যর্থ হলে তার ব্যাংক হিসাব তথা সম্পদের নিরীক্ষারও হুমকি দেওয়া হয়।'
 
সিনেটর গ্র্যাসলি বলেন, 'শুধু ব্যক্তিগত বা ক্লিনটন ফাউন্ডেশনের সঙ্গে ড. ইউনূসের আর্থিক সম্পর্কের কারণে হিলারি যদি তার অবস্থানকে ব্যবহার করে একটি সার্বভৌম দেশের স্বাধীন তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে চান, তাহলে তা অগ্রহণযোগ্য হবে। পারিবারিক ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সরকারি দাপ্তরিক অবস্থানকে মিলিয়ে ফেলাটাও হবে সমান অগ্রহণযোগ্য। ফলে ওই তদন্ত বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর ছেলেকে পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল কি-না তা নির্ণয় করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।'

আপনার মন্তব্য

আলোচিত