সিলেটটুডে ডেস্ক

২৪ জুলাই, ২০১৭ ০১:০৭

জামিন নামঞ্জুরের কোন আদেশ হয়নি, সুপ্রিম কোর্টকে সিএমএম

গাজী মো. তারিক সালমন

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার সাবেক ইউএনও গাজী মো. তারিক সালমনকে মানহানির মামলায় জামিন নামঞ্জুরের কোন আদেশ দেয়া হয়নি, এবং ওইদিনই জামিন দিয়েছিলো আদালত। রোববার সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো ব্যাখ্যায় একথা বলেছেন বরিশাল মুখ্য মহানগর হাকিম মোহাম্মদ আলী হোসাইন।

ইউএনওর জামিন নামঞ্জুর এবং পরে মঞ্জুর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ খবরের বিষয়ে সিএমএমের কাছে ব্যাখ্যা চায় সুপ্রিম কোর্ট। রোববার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেলের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা পাঠান আলী হোসাইন।

সংশ্লিষ্ট মামলার নথিপত্র ও ব্যাখ্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মো. সাব্বির ফয়েজ বলেন, গত দুই দিন ধরে ওই বিষয়ে আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। এ অবস্থায় সঠিক তথ্য জানতে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট মামলার নথি ও পুরো ঘটনার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। স্ক্যান করে ওই মামলার নথি পাঠিয়েছেন বরিশালের মুখ্য মহানগর হাকিম। সঙ্গে ব্যাখ্যা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। সোমবার বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে মূল নথি পাঠাবেন। ব্যাখ্যায় তিনি উল্লেখ করেছেন, ইউএনওর জামিন নামঞ্জুর করা হয়নি। জামিন নামঞ্জুরের ঘটনা ঘটেনি বলে নথি পর্যালোচনায়ও দেখা যায়।

সিএমএম ব্যাখ্যায় বলেন, আদালতের কার্যপ্রণালী শেষে এজলাস ত্যাগ করে খাসকামরায় এসে শুনি অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার হরা হচ্ছে যে ইউএনওর জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে- তার জামিন আবেদন একটি বারের জন্যও নামঞ্জুর করা হয়নি। ফলে জেল হাজতে পাঠানোর কোন প্রশ্নই উঠে না।

ব্যাখ্যায় বলা হয়, ইউএনওর পক্ষে নথি দাখিল হলে এবং উত্তেজনার পরিস্থিতির অবসান হলে জামিনের আবেদন এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ২০৫ ধারার আবেদন আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জামিন দেয়া হয়।

ইউএনওর আদালত কক্ষ ত্যাগের পরে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি পরিহারের জন্যই আমি তৎক্ষণাৎ জামিনের দরখাস্তের আদেশ না দিয়ে নথি দাখিল হলে শুনানি শেষে আদেশ দেয়া হবে বলে উদ্ভূত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছি।

ব্যাখ্যায় বলা হয়, সিআর-৪২৭/১৭ (কোতোয়ালি) মামলাটি শুনানি চলাকালে উৎসুক জনসাধারণের রোষানল হতে ইউএনওর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য শুনানি মুলতবি করা হয়।

ইউএনওর আইনজীবী মোখলেছুর রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নথি দাখিল করতে বলি এবং মৌখিক আদেশ দেয়া হয় যে, নথি দাখিলের পরে পুনরায় শুনানি হবে।

আমি তখন ইউএনওকে আদালত কক্ষে বসাতে বলি। আদালতে কর্তব্য পালনরত পুলিশ সদস্যরা ইউএনওর সার্বিক ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাধ্যমত চেষ্টা করেন বলে দাবি করেন সিএমএম।

বরিশালের মুখ্য মহানগর হাকিম মোহাম্মদ আলী হোসাইন চিঠিতে বলেন, ‘মামলাটির শুনানিকালে ফরিয়াদি আইনজীবী ওবায়দুল্লাহ সাজু (সভাপতি বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতি) নিজে এবং তাহার পক্ষে উপস্থিত থাকেন বর্তমান সাংসদ এবং আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য আইনজীবী তালুকদার মো. ইউনুছ (যিনি শুনানি শেষ করে আদালতের আদেশ প্রদানের পূর্বে আদালত কক্ষ ত্যাগ করেন), সাবেক সাংসদ আইনজীবী আবদুর রশিদ, বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী শেখ আবদুল কাদের, আইনজীবী আনিছ উদ্দিন আহম্মদ শহীদসহ প্রায় ৫০-৭০ জন আইনজীবী। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোখলেছুর রহমান।’

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘শুনানির একপর্যায়ে আসামিপক্ষের কৌঁসুলি নিবেদন করেন যে, ইউএনও সাহেব প্রথম আমন্ত্রণপত্রের পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবি আমন্ত্রণপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় ব্যবহার করে আরেকটি আমন্ত্রণপত্র তৈরি করেছেন এবং পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছেন। শুনানি চলাকালে আদালত কক্ষে যেমন আইনজীবীদের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ ছিল, তেমনিভাবে আদালতের বারান্দা এবং সংলগ্ন রাস্তায় উৎসুক জনসাধারণসহ মিডিয়ার কর্মীদের উপস্থিতিতে কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ বিরাজমান ছিল।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত