সিলেটটুডে ডেস্ক

১১ আগস্ট, ২০১৭ ০১:৫৯

নারায়ণগঞ্জে যাচ্ছেন সেই বিচারক!

বরিশালের মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) মোহাম্মদ আলী হোসাইনকে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে বদলির জন্য আইন মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ প্রশাসনিক কমিটি (জিএ)।

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারিক সালমনের (বর্তমানে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে) বিরুদ্ধে হওয়া পাঁচ কোটি টাকার মানহানি মামলায় বিচারক ছিলেন বরিশালের সিএমএম মোহাম্মদ আলী হোসাইন। ওই মামলায় প্রথমে জামিন না দিয়ে একই দিন জামিন দেন তিনি। ইউএনও তারিক সালমনের বিরুদ্ধে এমন আদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন এ বিচারক।

গত ২৫ জুলাই সিএমএম আলী হোসাইনকে বরিশাল থেকে জামালপুরে বদলির প্রস্তাব করে আইন মন্ত্রণালয়। সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমিটি (জিএ)।

জানা যায়, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কমিটির (জিএ) সভা গত বুধবার অনুষ্ঠিত হয়। মোহাম্মদ আলী হোসাইনকে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে বদলির জন্য ২৫ জুলাই প্রস্তাব পাঠিয়েছিল আইন মন্ত্রণালয়। এ প্রস্তাব গ্রহণ না করে কমিটি তাকে নারায়ণগঞ্জে বদলির পরামর্শ দেন। সভায় বরিশালের সিএমএম হিসেবে নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. শাহীন উদ্দিনকে বদলি করতে আইন মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া কমিটির ওই সভায় আরও ৪৪ জন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজকে বিভিন্ন জেলায় বদলির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি দেখভাল করে জিএ কমিটি। এ কমিটির প্রধান হলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন হাইকোর্টের তিনজন বিচারপতি।

স্বাধীনতা দিবসের আমন্ত্রণপত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির অভিযোগে ইউএনও তারিক সালমনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০১ ধারায় মানহানির মামলা করেন বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ওবায়দুল্লাহ সাজু।

ওই মামলা আমলে নিয়ে গত ৭ জুলাই অতিরিক্ত সিএমএম অমিত কুমার দে ইউএনওর বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। সমন পেয়ে গত ১৯ জুলাই সিএমএমের আদালতে ওকালতনামা দাখিল করে জামিন চান ইউএনও। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় যে ইউএনওর জামিন নামঞ্জুর এবং পরে মঞ্জুরের ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে সিএমএমের কাছে ব্যাখ্যা চায় সুপ্রিমকোর্ট।

গত ২৩ জুলাই সিএমএম ব্যাখ্যায় বলেন, আদালতের কার্যপ্রণালী শেষে এজলাস ত্যাগ করে খাসকামরায় এসে শুনি অনলাইন মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার হরা হচ্ছে যে, ইউএনওর জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে- তার জামিন আবেদন একটি বারের জন্যও নামঞ্জুর করা হয়নি। ফলে জেল হাজতে পাঠানোর কোন প্রশ্নই উঠে না। ব্যাখ্যায় বলা হয়, ইউএনওর পক্ষে নথি দাখিল হলে এবং উত্তেজনার পরিস্থিতির অবসান হলে জামিনের আবেদন এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ২০৫ ধারার আবেদন আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরন করে জামিন দেয়া হয়।

এরপর সিএমএমকে জামালপুরে বদলির প্রস্তাব দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে চিঠি পাঠায় মন্ত্রণালয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত